21 August 2022 Bengali Murli Today | Brahma Kumaris

Read and Listen today’s Gyan Murli in Bengali

August 20, 2022

Morning Murli. Om Shanti. Madhuban.

Brahma Kumaris

আজকের শিব বাবার সাকার মুরলি, বাপদাদা, মাধুবন। Brahma Kumaris (BK) Murli for today in Bengali. This is the Official Murli blog to read and listen daily murlis.

"মহাশিবরাত্রি উদযাপন করা অর্থাৎ প্রতিজ্ঞা করা, ব্রত নেওয়া এবং আত্মোৎসর্গীকৃত হওয়া"

আজ দিব্য মহাজ্যোতি বাবা নিজের জ্যোতিবিন্দু বাচ্চাদের সাথে মিলিত হচ্ছেন। বাপদাদাও মহান জ্যোতি আর তোমরা বাচ্চারাও মহান জ্যোতি স্বরূপ। তাইতো, দিব্য জ্যোতি বাবা দিব্য জ্যোতি আত্মাদের সাথে মিলিত হচ্ছেন। এই মহান জ্যোতি কত প্রিয়, কত আলাদা! বাপদাদা প্রত্যেকের ললাটের মাঝে সমুজ্জ্বল জ্যোতি দেখছেন। কত দিব্য আর মনোরম দৃশ্য! জ্যোতিষ্মান রূহানী নক্ষত্রদের কত সুন্দর সংগঠন দেখছেন! এই রূহানী জ্যোতির্ময় নক্ষত্রমন্ডল অলৌকিক আর অতি উত্তম। তোমরা সকলে এই দিব্য তারামন্ডলে নিজের ঝলমলে বিন্দু স্বরূপ দেখতে পাচ্ছ? এটাই মহাশিবরাত্রি। শিব জ্যোতির সাথে তোমরা অনেক জ্যোতিবিন্দু শালগ্রাম। বাবাও মহান, বাচ্চারাও মহান, সেই জন্য মহা শিবরাত্রি গাওয়া হয়ে থাকে। কত শ্রেষ্ঠ ভাগ্যবান আত্মা তোমরা! যারা চৈতন্য সাকার স্বরূপে শিববাবার সাথে শিবরাত্রি উদযাপন করছ। এই রকম কখনো সঙ্কল্পে, বা স্বপ্নেও ভাবনি যে, এমন অলৌকিক শিবরাত্রি উদযাপন করা আমরা শালগ্রাম আত্মা। তোমরা সবাই চৈতন্য রূপে উদযাপন করো। তারই স্মারকচিহ্ন জড়চিত্রের মধ্যে চৈতন্য রূপ বিরাজিত – এই ভাবনার সাথে ভক্তদের উদযাপন করতে দেখছ। প্রকৃত ভক্ত আপন ভাবনার দ্বারা চিত্রের মধ্যে প্রীতিস্বরূপ অনুভব করে আর তোমরা শালগ্রাম আত্মারা সামনাসামনি উদযাপন করে থাকো। তাহলে, কত ভাগ্য তোমাদের! মিলিয়ন, বিলিয়ন, ট্রিলিয়ন (পদ্ম = দশ হাজার কোটি, অরব = একশ’ কোটি, খরব = অগুনতি)…. এও তোমাদের ভাগ্যের সামনে কিছু নয়, সেইজন্য বাচ্চারা সবাই নিশ্চয়ের সাথে সগর্বে বলে – আমরা দেখেছি, আমরা পেয়েছি…। এই গীত তোমাদের সকলের, নাকি কারও কারও? সবাই গাও তো না? নাকি এই গীত গাও দেখবো, পাবো? প্রাপ্ত করেছ নাকি এখনো পাওয়ার আছে? ডবল বিদেশি কী ভাবছ, পেয়ে গেছ? বাবাকেও তো দেখেছ, তাই না? তোমরা হৃদয় থেকে বলো বাবাকে দেখেছ, পেয়েছ। তাঁকে শুধু দেখা আর পাওয়াই নয়, বরং তোমরা বাবাকে আপন বানিয়ে নিয়েছ। বাবা তোমাদের হয়ে গেছেন তো না। দেখ, বাবা তোমাদের হয়ে গেছেন তাই তো তোমরা বলা মাত্র বাবা এসে যান, আসেন তো না। তাহলে, অধিকারী হয়ে গেছ, গেছ না?

মহাশিবরাত্রির বিশেষত্ব কী? এক তো বাবার সামনে প্রতিজ্ঞা করো, আর দ্বিতীয়তঃ, বাবার ভালোবাসায় ব্রত রাখো, কেননা ভালোবাসা আর খুশিতে সব ভুলে যাও, সেইজন্য ব্রত রাখো। খুশির পৌষ্টিক আহার খেয়ে নাও তো অন্য পৌষ্টিক আহার আবশ্যক হয় না। মিলনের খুশির জন্য তোমরা ব্রত রাখো। ব্রত খুশিরও লক্ষণ আর ব্রত রাখা অর্থাৎ ভালোবাসায় ত্যাগের ভাবনা। কিছু ছেড়ে দেওয়া অর্থাৎ ত্যাগ – ভাবনার লক্ষণ। তৃতীয় বিষয় – শিবরাত্রি অর্থাৎ আত্মোৎসর্গীকৃত হওয়া। স্মারকরূপে তো স্থূল বলি দান করা হয়, কিন্তু বলি হওয়া, মন-বুদ্ধি আর সম্বন্ধ সহ সমর্পিত হওয়া – এটাই হ’লো বাস্তবিকরূপে উৎসর্গীকৃত হওয়া। সুতরাং এই তিন বিশেষত্ব মহাশিবরাত্রির বিশেষত্ব। শিবরাত্রি উদযাপন অর্থাৎ এই তিন বিশেষত্ব প্র্যাকটিক্যাল জীবনে নিয়ে আসা। শুধু বলা নয়, করা। বলা আর করা সদা সমান হোক। বাপদাদা বাচ্চাদের আনন্দ-সংবাদের বৃত্তান্তও শুনেছেন যে, ভারতের বাচ্চারাই হোক বা বিদেশি বাচ্চা, সবাই মহাশিবরাত্রির প্র্যাকটিক্যাল স্বরূপ হওয়ার প্রতিজ্ঞা করেছে। সুতরাং প্রতিজ্ঞা অর্থাৎ বলা আর করা দুইই সমান। খুব ভালো বিষয় – সবাই বাপদাদাকে বার্থ ডে-র সবচাইতে বড় থেকেও বড় গিফ্ট দিয়েছে প্রতিজ্ঞা অর্থাৎ শ্রেষ্ঠ সঙ্কল্প। সুতরাং বাপদাদাও গিফ্টের জন্য সব বাচ্চাকে থ্যাংকস জানাচ্ছেন। গিফ্টে দেওয়া প্রতিজ্ঞা সদা স্মৃতি দ্বারা সমর্থ বানাবে। আগে থেকেই এমন ভেবো না যে, প্রতিজ্ঞা তো করেছি কিন্তু জানি না চলতে পারবো কি না! প্রতিজ্ঞার দায়িত্ব পালন করতে পারবো, নাকি পারবো না! এই ভাবনা অর্থাৎ দুর্বলতাকে আহ্বান করা। সুতরাং দুর্বলতা অর্থাৎ মায়াকে যখন নিজেই আহ্বান করছ তো দুর্বলতা আগে থেকেই তৈরি থাকে আসার জন্য। এ’ তো তুমি তাকে নিমন্ত্রণ করছ, সেই জন্য কোনও সঙ্কল্প বা কর্ম যদি করো তো শক্তিশালী স্থিতিতে স্থিত হয়ে শক্তির দ্বারা করো। দুর্বল সঙ্কল্প মিক্স ক’রো না। এই শ্রেষ্ঠ সঙ্কল্প রাখো যে, মনোবল আমার, অ্যাটেনশন আমার আর বাবার সহায়তা তো আছেই আছে। এই বিধিতে প্রতিজ্ঞা প্র্যাকটিক্যালে আনতে অনেক সহজ অনুভব করবে। সদাসর্বদা এটা ভাবো, অনেক কল্পের বিজয়ী আত্মা আমি! বিজয়ের খুশি, বিজয়ের নেশা শক্তিশালী বানিয়ে দেবে। তোমরা সব ব্রাহ্মণ আত্মার জন্য জিত সদা সাথী হয়ে বেঁধে আছে, তো আর কোথায় যাবে? পাণ্ডব ব্যতীত জিত কাউকে সাথ দিয়েছে? তোমরা সেই পাণ্ডবই তো না! যখন বাবা সাথী তো জিতও তোমাদের সাথী। সদা নিজের মস্তকে বিজয়ের তিলক লেগেই আছে – এটা দেখ। যারা প্রভুর গলার হার হয়ে গেছে, তার হার (পরাজয়) কখনো হতে পারে না। সম্পূর্ণ বিজয়ী রূপে নিজেদের স্মারকচিহ্ন বিজয়-মালা দেখছ, দেখছ না? এমন গায়ন নেই তো না – জয় পরাজয় মালা! না, এটা বিজয় মালা। বিজয়ী দানা তোমরা, তাই না! সুতরাং বিজয়ী মালার দানা কখনো পরাজিত হতে পারে না। তোমরা প্রত্যেকে যে সঙ্কল্প করেছ বাপদাদা পুরো সীন দেখেছেন। ভালো উৎসাহ-উদ্দীপনার সাথে, খুশির সাথে তোমরা প্রতিজ্ঞা করেছ। তোমরা সব চৈতন্য শালগ্রাম দৃঢ় সঙ্কল্প নিয়েছ, সেই জন্য তো স্মারক রূপে ভক্তরাও তার উদযাপন করে। (তপস্যার সম্বন্ধে কাল সবাই ৫৬তম শিব জয়ন্তী উপলক্ষে ৫৬-প্রতিজ্ঞা করেছে)। বলিদান হয়েছে। বলিদান হওয়া অর্থাৎ মহাবলবান হওয়া। কিসের বলিদান দেওয়া হয়? দুর্বলতার। যখন দুর্বলতার বলিদান দিয়েছ তো কী হয়েছ? মহাবলবান। সবচাইতে বড় দুর্বলতা দেহ অভিমান। দেহবোধ সমর্পণ করা অর্থাৎ তার বংশকেও সমর্পণ করে দেওয়া, কারণ দেহ- অভিমানের সূক্ষ্ম বংশ অনেক বড়। অনেক রকমের ছোট বড় দেহ-বোধ আছে। সুতরাং দেহ-বোধ বলিদান করা অর্থাৎ বংশ সমেত সমর্পিত হওয়া। অংশও রেখো না। অংশমাত্রও যদি থেকে গেল তাহলে বারবার চুম্বকের মতো টানতে থাকবে। তোমরা জানতেও পারবে না। না চাইলেও চুম্বক নিজের দিকে টেনেই নেবে। এরকম ভেবো না – পরে প্রয়োজনের সময়ে কাজে লাগানোর জন্য দেহ অভিমানের কিছু কিছু রূপকে সরিয়ে রেখে দিই। তারপরে তোমরা কী বলো? এ’সব না করলে কাজ আদায় করা যায় না। কাজ অবশ্যই চলে, তবে সেটা অল্প সময়ের জিত হিসেবে প্রতীয়মান হয়। অভিমানকে (দাম্ভিকতা) স্বমান মনে করে নাও তোমরা! কিন্তু এই অল্পকালের জয়ে বহুকালের পরাজয় সমাহিত হয়ে আছে। আর যেটা মনে ভাবছ পরাজয়, সেটা অল্প সময়ের, তা’ সদাকালের বিজয় প্রাপ্ত করায়, সেইজন্য দেহ- অভিমানের অংশমাত্র সমেত সমর্পিত হওয়া – একে বলা হয়ে থাকে শিববাবার কাছে উৎসর্গীকৃত হওয়া অর্থাৎ বলবান হওয়া। এমন শিবরাত্রি উদযাপন করেছ তো না? এই ব্রত ধারণ করতে হবে। সে’সব লোকে তো স্থূল বিষয়ের ব্রত রাখে কিন্তু তোমরা কী ব্রত নাও? শ্রেষ্ঠ বৃত্তি দ্বারা এই ব্রত তোমরা নিয়ে থাকো, সদা দুর্বল বৃত্তিকে শেষ করে শুভ আর শ্রেষ্ঠ বৃত্তি ধারণ করবে। যখন বৃত্তিতে শ্রেষ্ঠত্ব থাকে তখন সৃষ্টি শ্রেষ্ঠই নজরে আসবে, কেননা বৃত্তি দ্বারা দৃষ্টি আর কৃতির কানেকশন আছে। কোনও ভালো বা মন্দ বিষয় প্রথমে বৃত্তিতে ধারণ হয়, তারপরে বাণী আর কর্মে আসে। বৃত্তি শ্রেষ্ঠ হওয়া অর্থাৎ বাণী আর কর্ম আপনা থেকেই শ্রেষ্ঠ হওয়া। তোমাদের বিশেষ সেবা বিশ্ব-পরিবর্তনও শুভ বৃত্তি দ্বারা হয়। বৃত্তি দ্বারা ভাইব্রেশন, বায়ুমন্ডল বানিয়ে থাকো। সুতরাং শ্রেষ্ঠ বৃত্তির এই ব্রত ধারণ করা – এটাই শিবরাত্রি উদযাপন করা। এটা শুনে নিয়েছ তো না যে, উদযাপন করা অর্থাৎ হওয়া, বলা অর্থাৎ করা। যারা সিদ্ধিপ্রাপ্ত আত্মা, তাদেরকে দুনিয়ার লোকের ভাষায় সিদ্ধ পুরুষ বলা হয়ে থাকে আর তোমরা বলে থাকো সিদ্ধি স্বরূপ আত্মা – সুতরাং তাদের প্রতিটা সঙ্কল্প নিজের প্রতি অথবা অন্যের প্রতি যেটাই করার তা’ কর্মে সিদ্ধ হয়ে যায়, যে বোল বলে তা’ সিদ্ধ হয়ে যায়। যাকে বলা হয়ে থাকে ‘সত্য বচন।’ সুতরাং সবচাইতে বড় থেকেও বড় সিদ্ধিস্বরূপ আত্মা তোমরা তো না! তাহলে, সঙ্কল্প আর বোল সিদ্ধ হবে তো, হবে না? সিদ্ধ হওয়া অর্থাৎ সফল হওয়া। প্রত্যক্ষ স্বরূপে আসা – এটাই সিদ্ধ হওয়া। সুতরাং সদাসর্বদা এটাই স্মৃতিতে রাখো যে, আমরা সবাই সিদ্ধিস্বরূপ আত্মা। আমরা সব সিদ্ধিস্বরূপ আত্মার প্রতিটা সঙ্কল্প, প্রতিটা বোল, প্রতিটা কর্ম নিজেদেরকে এবং অন্যদের সিদ্ধি প্রাপ্ত করায়। সে’সব ব্যর্থ নয়। বলার সাথে সাথে তুমি সেটা করলে তো সফল হলো। তুমি যদি কিছু বললে এবং সে’ বিষয়ে ভাবলে, কিন্তু সেটা করলে না, তাহলে তা’ ব্যর্থ হয়ে গেল। কেউ কেউ এ’রকম ভাবে যে, আমাদের সঙ্কল্প খুব ভালো, খুব ভালো যুক্তিযুক্ত ধারণা আছে, নিজের জন্য এবং সেবার জন্য উৎসাহ-উদ্দীপনা আছে, কিন্তু সে’সব সঙ্কল্প পর্যন্তই থেকে যায়। প্র্যাকটিক্যাল কর্মে, স্বরূপে আসে না। তাহলে সেটা কী বলবে? সঙ্কল্প খুব ভালো, কিন্তু কর্মে তারতম্য কেন? এর কারণ কী? যদি বীজ খুব ভালো হয়, কিন্তু ফল ভালো না বের হয় তাহলে কী বলবে? মাটি বা যত্নের ঘাটতি রয়েছে। এই রকমই সঙ্কল্প রূপী বীজ তো ভালো। বাপদাদার কাছে সঙ্কল্প পৌঁছে যায়। বাপদাদাও খুশি হন – খুব ভালো বীজ বপন করেছ, খুব ভালো সঙ্কল্প করেছ, তোমরা এখন ফল পেতে চলেছ প্রায়। কিন্তু কী হয়? দৃঢ় ধারণার মৃত্তিকার অভাব আর বারংবার সতর্কতার ক্ষেত্রে অ্যাটেনশনের খামতি। বাপদাদা মজাদার খেলা দেখতে থাকেন। যেমন, বাচ্চারা গ্যাস বেলুন উড়িয়ে থাকে, খুব ভালো গ্যাস ভরে ওড়ায় আর খুশি হয়, বেলুন উপরে গিয়ে খুব ভালো উড়তে থাকে… । কিন্তু চলতে চলতে নিচে নেমে আসে। সুতরাং কখনোই পুরুষার্থে নিরাশ হয়ো না। করতেই হবে, হতেই হবে, তৈরি হতে হবে, বিজয় মালা আমারই স্মৃতিচিহ্ন। নিরাশ হয়ে এটা ভেবো না, আচ্ছা করে নেবো, দেখে নেবো। না, কাল নয় এখনই করতেই হবে। যদি নিরাশাকে কয়েক মিনিট বা কয়েক সেকেন্ডও নিজের ভিতরে স্থান দিয়েছ তো সেটা সহজে যাওয়ার নয়। তারও ব্রাহ্মণ আত্মাদের কাছে থাকায় মজা আসে, সেইজন্য কখনো নিরাশ হয়ো না। অভিমানও নয়, নিরাশাও নয়। কেউ কেউ অভিমান-বশ হয়, কেউ কেউ নিরাশ হয়ে যায়। এই দুটো মহাবলবান হতে দেয় না। যেখানে অভিমান হয় সেখানে অপমানের ফিলিংসও বেশি হয়। কখনো অভিমানে, কখনো অপমানে – দুইয়ের সাথেই খেলতে থাকে। যেখানে অভিমান হবে না, তার অপমানকে অপমান বলেও মনে হবে না। সে সদা নির্মান হয়ে নির্মাণের কার্যে বিজি থাকবে। যে নির্মান হয় সেই নির্মাণ করতে পারে। সুতরাং শিবরাত্রি উদযাপন করা অর্থাৎ নির্মান (নিরহঙ্কার) হয়ে ‘নির্মাণ করার কর্তব্যে’ (গঠন-কার্যে)নিয়োজিত হওয়া। বুঝেছ!

তাইতো, আজ সবাই নিজের হৃদয়ে শ্রেষ্ঠ সঙ্কল্পের সুতোয় বিজয় পতাকা উত্তোলন করো। এই পতাকা উত্তোলনই ব্রাহ্মণদের সেবার রীতি, সেবার বিধি। কিন্তু সেইসঙ্গে সদা জয়ের পতাকা যেন উড়তে থাকে। কোনও দুঃখের বিষয় যদি হয় তবে পতাকা নীচে করে দেবে, কিন্তু তোমাদের জয়ধ্বজা কখনো নীচে হতে পারে না। সদা উঁচু। তো এমন জয়ধ্বজাই উড়াবে তো না?

আচ্ছা, তপস্যা-বর্ষের রেজাল্টও বাপদাদা পেয়েছেন। তোমরা সবাই নিজের নিজের জজ্ হয়ে নিজেকে নম্বর দিয়েছ। ভালো করেছ। চারিদিকের মেজরিটির রেজাল্ট থেকে এটাই দেখা গেছে যে, তপস্যা-বর্ষ স্ব-এর পুরুষার্থের জন্য সকলেরই ভালো অ্যাটেনশন টেনেছে। যখন তোমাদের অ্যাটেনশন টেনেছে তখন টেনশনও চলেই যাবে তো না! তো টোটাল রেজাল্ট অনেকেরই ভালো ছিল। তোমাদের মেজরিটি সেকেন্ড নম্বরে। থার্ডও আছে কিন্তু ফার্স্ট আর চতুর্থ নম্বর কম। সেকেন্ড নম্বরের তুলনায় ফার্স্ট আর ফোর্থ কম। যেমনই হোক, সেকেন্ড আর থার্ডের সাথেই মেজরিটি। বাপদাদা বিশেষ একটা বিষয়ে খুশি হন যে, সবাই তোমরা তপস্যা-বর্ষের গুরুত্ব দিয়েছ, সেইজন্য পেপার আসা সত্ত্বেও তোমরা মেজরিটি খুব ভালো ভাবে পাস হয়ে গেছ। তোমাদের এই সঙ্কল্প ছিল যে, তপস্যা করতে হবে – এই সঙ্কল্পের শক্তি সহযোগ দিয়েছে, সেইজন্য রেজাল্ট ভালো; খারাপ নয়। অভিনন্দন! এখন বাকি প্রাইজ তো দাদীরা দেবেন, বাবা সবাইকে খুব ভালো, খুব ভালো-র প্রাইজ দিয়ে দিয়েছেন। এমন নয় যে তপস্যা-বর্ষ সম্পূৰ্ণ হয়ে গেছে, তোমরা অমনোযোগী হয়ে যাবে। না, আরো বড় প্রাইজ নিতে হবে। তোমাদের বলা হয়েছিল তো না – কর্ম আর যোগের ব্যালেন্সের প্রাইজ নিতে হবে। সত্যিকারের প্রাইজ তো বাবা আর পরিবারের থেকে ব্লেসিংস প্রাপ্তি। সে’ তো সকলেরই প্রাপ্ত হচ্ছে। আচ্ছা।

আজ তোমরা সূক্ষ্মবতন বানিয়েছ। এটা ভালো, বায়ুমন্ডল ভালো তৈরি হয়েছে। সেই জ্যোতির দেশের সামনে এই সাজানো সূক্ষ্মবতন মডেলের মতই লাগছে, তাই না! তবুও, বাচ্চাদের উৎসাহ-উদ্দীপনা এবং বায়ুমন্ডল বৃত্তিকে অবশ্যই টানে। সবাই সূক্ষ্মবতনে বসে আছ? সাকার শরীরে থেকে সূক্ষ্মবতনবাসী হয়ে মনের সাথে মিলন উদযাপন করো। বাপদাদা খুশি যে বাচ্চাদের সূক্ষ্মবতন এত প্রিয় লাগে, তবেই তো বানিয়েছ, তাই তো না! অনেক পরিশ্রম করে ভালোবাসার সাথে বানিয়েছ, শ্রেষ্ঠ উৎসাহ-উদ্দীপনার সঙ্কল্প দ্বারা বানিয়েছ, সেইজন্য যারা সঙ্কল্প করেছিল এবং যারা সাকার রূপে পরিণত করেছিল, তাদের সবাইকে বাপদাদা অভিনন্দন জানান। এটাও অসীম খেলার মধ্যেকার এক খেলা, আর কী খেলা করবে, এই খেলাই খেলবে তো না! কখনো স্বর্গ রচনা করবে, কখনো সূক্ষ্মবতন রচনা করবে। এটাই বুদ্ধিকে টানে। আচ্ছা। চারিদিকের সব জ্যোতিবিন্দু শালগ্রাম বাচ্চাদের বাবার দিব্য জন্ম এবং বাচ্চাদের দিব্য জন্মের অভিনন্দন।

এমন সর্বশ্রেষ্ঠ সদা সিদ্ধিস্বরূপ আত্মাদের, সদা আলোকোজ্জ্বল দিব্য নক্ষত্রদের, সদা অভিমান আর অপমান থেকে স্বাতন্ত্র্য বজায় রেখে স্বমানে স্থিত থাকা আত্মাদের, সদা শ্রেষ্ঠ পুরুষার্থ আর শ্রেষ্ঠ সেবার উৎসাহ-উদ্দীপনার শ্রেষ্ঠ আশার দীপক প্রজ্জ্বলনকারী আত্মাদের, সদা নিজেদের হৃদয়ে জয়ধ্বজা উত্তোলিত রাখা শিবময়ী শক্তি সেনাকে, যারা সদা পুরুষার্থে সফলতা সহজে অনুভব করে, সেই সফলতাস্বরূপ বাচ্চাদের বাপদাদার স্মরণ-স্নেহ আর নমস্কার।

শিব জয়ন্তী উপলক্ষ্যে বাপদাদা উত্তোলিত ধ্বজা উড়িয়ে সব বাচ্চাকে অভিনন্দন জানান –

বিশ্বে বাবা আর বিজয়ী বাচ্চাদের সুখ-শান্তিদায়ক এই পতাকা সদা উড়তে থাকবে। চারিদিকে, শিববাবা এবং শিব শক্তির নাম মহিমান্বিত হবে। বিশ্ব দেখবে এই মহান, উঁচু ধ্বজ সদা উঁচুতে উড়ছে। এই অবিনাশী ধ্বজ, অবিনাশী বাবা আর অবিনাশী শ্রেষ্ঠ আত্মাদের স্মারকচিহ্ন। সুতরাং সদা খুশির তরঙ্গে খুশির ধ্বজ যা বাবার নাম মহিমান্বিত করবে, আর বাবাকে প্রত্যক্ষ করাবে সেই জয়ধ্বজা তোমরা উড়িয়ে চলেছ, আর ওড়াতেও থাকবে। এমন মহাশিবরাত্রি উপলক্ষ্যে তোমরা সব বাচ্চাকে আর চতুর্দিকের সব বিশেষ ব্রাহ্মণ আত্মাকে বার্থ ডে-র অনেক-অনেক অভিনন্দন আর স্মরণ-স্নেহ।

বরদানঃ-

কারও কোনো নেচার যেমনই হোক, তা’ আপনা থেকেই নিজের কাজ করে। তোমাদের ভাবতে বা কোনকিছু করতে হয় না। একইভাবে, বিশেষত্বের সংস্কার তোমাদের নেচার হতে দাও এবং প্রত্যেকের মুখ ও মন থেকে এটাই যেন বের হয় যে, এই বিশেষ আত্মার নেচারই বিশেষত্বের। সাধারণ কর্মের সমাপ্তি যখন হয়ে যাবে তখনই বলা হবে মরজীবা। সাধারণ হওয়া থেকে তোমরা মরে গেছ, বিশেষত্বে বেঁচে আছ। তোমাদের সঙ্কল্পেও কোনকিছু সাধারণ হতে দিও না।

স্লোগানঃ-

Daily Murlis in Bengali: Brahma Kumaris Murli Today in Bengali

Email me Murli: Receive Daily Murli on your email. Subscribe!

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top