01 June 2021 BENGALI Murli Today – Brahma Kumaris

May 31, 2021

Morning Murli. Om Shanti. Madhuban.

Brahma Kumaris

আজকের শিব বাবার সাকার মুরলি, বাপদাদা, মাধুবন। Brahma Kumaris (BK) Murli for today in Bengali. This is the Official Murli blog to read and listen daily murlis.

''মিষ্টি বাচ্চারা - এই সম্পূর্ণ বিশ্ব হলো ঈশ্বরীয় পরিবার, তাই গাওয়া হয় - তুমি মাতা - পিতা, আমি তোমার বালক। তোমরা এখন প্রত্যক্ষ ভাবে ঈশ্বরীয় পরিবারের হয়েছো''

প্রশ্নঃ --

বাবার থেকে ২১ জন্মের সম্পূর্ণ উত্তরাধিকার নেওয়ার সহজ বিধি কি ?

উত্তরঃ -:-

সঙ্গমে শিববাবাকে নিজের উত্তরাধিকারী বানাও । তন – মন এবং ধন সমেত বলিহারি যাও, তাহলে ২১ জন্মের জন্য সম্পূর্ণ উত্তরাধিকার প্রাপ্ত হবে । বাবা বলেন, যে বাচ্চারা সঙ্গমে নিজের সবকিছু ইনশিওর করে দেয়, তাদের আমি এর পরিবর্তে ২১ জন্ম পর্যন্ত দিতে থাকি ।

গান:-

নয়ন হীনকে পথ দেখাও..

ওম্ শান্তি । এই ভক্তরা ভগবানকে ডাকে । ভগবানকে সম্পূর্ণ না জানার কারণে মানুষ কতো দুঃখী । ভক্তিমার্গে মানুষ কতো মাথা ঠুকতে থাকে । কেবলমাত্র এই জীবনের কথা নয় । যখন থেকে ভক্তি শুরু হয়েছে, তখন থেকেই মানুষ ধাক্কা খেতে থাকছে । ভারতেই দেবী – দেবতার রাজ্য ছিলো, যাকে স্বর্গ বা সত্যখণ্ড বলা হতো । ভারত হলো সত্যখণ্ড, ভারতের মহিমাই খুব বেশী, কেননা ভারত হলো পরমপিতা পরমাত্মার জন্মভূমি । তাঁর প্রকৃত নাম হলো শিব । শিব জয়ন্তী পালন করা হয় । রুদ্র বা সোমনাথ জয়ন্তী বলা হয় না । শিব জয়ন্তী বা শিবরাত্রি বলা হয় । একই হেভেনলি গড ফাদার স্বর্গের স্থাপনা করেন । এখন সমস্ত ভক্তের ভগবান তো অবশ্যই একজন হওয়া উচিত । এখন সকলেই নয়নহীন, অর্থাৎ জ্ঞান চক্ষু বা ডিভাইন ইনসাইট নেই । ভগবান উবাচঃ – আমি তোমাদের রাজযোগ শেখাই । শ্রীমৎ ভাগবত গীতা হলো মুখ্য । শ্রী অর্থাৎ শ্রেষ্ঠ মত । তোমাদের এখন বুদ্ধিমান করা হয় । দিব্য চক্ষু অর্থাৎ জ্ঞানের তৃতীয় নেত্র দেখানো হয় । বাস্তবে জ্ঞানের তৃতীয় নেত্র তোমরা ব্রাহ্মণরা পাও, যাতে তোমরা বাবাকে আর বাবার রচনার আদি – মধ্য এবং অন্তকে জেনে যাও । এই সময় সকলের মধ্যেই দেহ অহংকার অর্থাৎ পাঁচ বিকার আছে, তাই মানুষ ঘোর অন্ধকারে আছে । বাচ্চারা, তোমাদের কাছে আলোর রোশনাই আছে । তোমাদের আত্মা সম্পূর্ণ পৃথিবীর হিস্ট্রি – জিওগ্রাফিকে জেনে গেছে । আগে তোমরা সবাই অজ্ঞান অবস্থায় ছিলে । সৎগুরু অজ্ঞান অন্ধকার বিনাশ করে জ্ঞান অঞ্জন প্রদান করেছেন । যারা পূজ্য ছিলেন, তারাই এখন পূজারী হয়ে গেছে । পূজ্য হলো জ্ঞানের আলোক । পূজারী থাকে অন্ধকারে । পরমাত্মাকে, তিনিই পূজ্য আবার তিনিই পূজারী বলা যায় না । তিনি হলেনই পরম পূজ্য । তিনিই সকলকে পূজ্য বানান । তাঁকে বলা হয় পরম পূজ্য । পরমপিতা পরম আত্মা অর্থাৎ পরম আত্মা । কৃষ্ণকে এমন বলাই হবে না । তাঁকে সবাই গড ফাদার বলবে না । নিরাকার গডকেই সবাই গড ফাদার বলে । তিনিও আত্মা, কিন্তু পরম, তাই তাঁকে পরমাত্মা বলা হয় । সেই পরম আত্মা সর্বদা পরমধামে থাকেন । ইংরাজীতে তাঁকে সুপ্রীম সোল বলা হয় । বাবা বলেন – তোমরা গেয়েও থাকো, আত্মা পরমাত্মা পৃথক আছে অনেককাল । এমন নয় যে, পরমাত্মা পরমাত্মার সঙ্গে পৃথক আছে বহুকাল । তা নয়, এ হলো প্রথম নম্বরের অজ্ঞানতা যে – আত্মাই পরমাত্মা আর পরমাত্মাই আত্মা বলা । আত্মা তো জনম – মরণে আসে । পরমাত্মা তো পুনর্জন্মে আসে না । বাবা বসে বোঝান – তোমরা ভারতবাসীরা স্বর্গবাসী পূজ্য ছিলে । মানবিকতায় পূজ্য সব দেবী – দেবতারা ছিলেন । এ হলো সম্পূর্ণ ঈশ্বরীয় পরিবার । ঈশ্বর হলেন রচয়িতা । এমন গাওয়া হয় – তুমি মাতা – পিতা, আমি তোমার বালক —– তাহলে পরিবার হয়ে গেলো, তাই না । আচ্ছা, এ তো বলো, তোমরা মাতা – পিতা কাকে বলো ? এ কথা কে বলছে ? আত্মা বলছে, তুমি মাতা – পিতা —- তোমার কৃপায় আমরা স্বর্গের অতি সুখ পেয়েছিলাম । তুমি মাতা – পিতা এসে স্বর্গের স্থাপনা করো । তাই আমরা তোমার সন্তান হই । বাবা বলেন – আমি সংসারে এসেই নতুন দুনিয়ার জন্য রাজযোগ শেখাই । মানুষের বুদ্ধি সম্পূর্ণ ভ্রষ্ট হয়ে গেছে । স্বর্গকে নরক মনে করে । ওরা বলে – ওখানেও কংস, জরাসন্ধ, হিরন্যকশিপু আদি ছিলো । বাবা এসে বোঝান – তোমরা কি ভুলে গেছো ? আমার শিব জয়ন্তী তো তোমরা এই ভারতেই পালন করো । গায়নও আছে – শিবরাত্রি । কোন রাত্রি ? এই ব্রহ্মার অসীম জগতের রাত্রি । বাবা এই সঙ্গমে এসেই রাত্রি থেকে দিন অর্থাৎ নরক থেকে স্বর্গ তৈরী করেন । শিব রাত্রির অর্থও কেউ জানে না । ভগবান হলেন নিরাকার । মানুষের তো জন্মের পরে জন্ম শরীরের নাম পরিবর্তন হয় । পরমাত্মা বলেন, আমার কোনো শরীরের নাম নেই । আমার নাম শিবই । আমি কেবল বৃদ্ধ বানপ্রস্থ শরীরের আধার নিই । ইনি পূজ্য ছিলেন, এখন পূজারী হয়েছেন । শিব বাবা এসে স্বর্গের রচনা করেন, আমরা যখন তাঁর সন্তান, তখন অবশ্যই আমাদের স্বর্গের মালিক হওয়া উচিত, তাই না । শিব বাবা হলেন উঁচুর থেকেও উঁচু । ব্রহ্মা – বিষ্ণু এবং শঙ্করের নিজের নিজের পার্ট আছে । প্রত্যেক আত্মার মধ্যে নিজের সুখ দুঃখের পার্ট নিহিত আছে । তোমরা জানো যে, আমরা শিব বাবার উত্তরাধিকারী হয়েছিলাম । শিব বাবা আমাদের স্বর্গবাসী করেছিলেন, তাই সবাই তাঁকে স্মরণ করে । ও গড, দয়া করো ! সাধুরাও সাধনা করে, কেননা এখানে দুঃখ তাই তারা নির্বাণধামে যেতে চায় । আত্মা, পরমাত্মায় লীন হয়ে যায় বা আমি আত্মাই পরমাত্মা – একথা বোঝানো ভুল । তোমরা এখন বলো – আমরা আত্মারা পরমধামে থাকি, এরপর আমরা দেবতা কুলে যাবো আর ৮৪ জন্মগ্রহণ করবো । আমরা আত্মারা বর্ণে আসি । শিব বাবা জন্ম – মরণে আসেন না । কেবলমাত্র নারায়ণের রাজত্বকাল ছিলো । খৃস্টান ঘরানাতে যেমন এডোয়ার্ড দ ফার্স্ট, সেকেণ্ড, থার্ড চলতে থাকে । তেমনই সেখানেও লক্ষ্মী – নারায়ণ দ্য ফার্স্ট, লক্ষ্মী – নারায়ণ দ্য সেকেণ্ড, থার্ড, এমন চার রাজত্বকাল চলে । তোমাদের ব্রাহ্মণদের এখন তৃতীয় নেত্র খুলে গেছে । বাবা বসে আত্মাদের সঙ্গে কথা বলেন । তোমরা এইভাবে ৮৪ র চক্র লাগিয়ে এতো – এতো জন্ম নিয়ে এসেছো । বর্ণেরও এক চিত্র বানানো হয় যেখানে দেবতা, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য, শূদ্র, ব্রাহ্মণ বানানো হয় । এখন তোমরা জানো যে, আমরা সেই ব্রাহ্মণ শিখা । এই সময় আমরা প্রত্যক্ষভাবে ঈশ্বরীয় সন্তান । এই সহজ রাজযোগ আর জ্ঞানের দ্বারা আমরা অতি সুখ প্রাপ্ত করি । কেউ তো সূর্যবংশী রাজধানীর উত্তরাধিকার প্রাপ্ত করে, কেউ আবার চন্দ্রবংশীর । সম্পূর্ণ রাজধানী এখন স্থাপন হচ্ছে । প্রত্যেকেই নিজের পুরুষার্থে সেই পদ প্রাপ্ত করবে । কেউ যদি জিজ্ঞেস করে, পড়তে পড়তে আমাদের এই শরীরের যদি মৃত্যু হয় তাহলে কি পদ পাবো ? তখন বাবা বলে দিতে পারেন । যোগের দ্বারাই আয়ু বৃদ্ধি পায়, বিকর্ম বিনাশ হয়, পতিত থেকে পবিত্র হওয়ার আর অন্য কোনো উপায় নেই । পতিত পাবন বললেই ভগবানের কথা স্মরণে আসে, কিন্তু ভগবান কে ? একথা জানে না । বাবা বলেন – আমি ভারতেই আসি । এ হলো আমার জন্মভূমি । সোমনাথের মন্দির কতো আলিশান – একথা বাবা বাচ্চাদের বসে বোঝান । ভক্তিমার্গে স্মরণিকা হতে শুরু করে । যখন পূজারী হয় তখন প্রথমে সোমনাথের মন্দির তৈরী করে । ভারত তো সত্যযুগ আর ত্রেতাযুগে খুবই বিত্তবান দেশ ছিলো । মন্দিরেও অজস্র ধনসম্পদ ছিলো । ভারত তখন হীরে তুল্য ছিলো । ভারত তো এখন কাঙ্গাল আর কড়ি তুল্য । বাবা এসে আবার ভারতকে হীরে তুল্য তৈরী করেন । যে কোনো ব্যক্তিকে জিজ্ঞেস করো — সৃষ্টিকর্তা কে ? বলবে – পরমাত্মা । তিনি কোথায় ? বলে দেবে – তিনি তো সর্বব্যাপী । বাবা বলেন – এই সম্পূর্ণ ঝাড় এখন জরাজীর্ণ অবস্থা প্রাপ্ত করেছে ।

নিজেকে চেক করো, আমি কি সেই উপযুক্ত হয়েছি যে, বাবা – মাম্মার কোলে আসীন হতে পারি ? এ হলো পতিত দুনিয়া । পবিত্রতা হলো মুখ্য । এখন তো নো হেল্থ, নো ওয়েলথ আর নো হ্যাপীনেস । এ হলো মৃগতৃষ্ণা সমান রাজ্য । এর উপরই দুর্যোধনের কাহিনী শাস্ত্রে লেখা হয়েছে । দুর্যোধন বিকারীকে বলা হয় । দ্রৌপদীরা বলে – আমাদের লজ্জা রাখো । সকলেই তো দ্রৌপদী, তাই না । এই বাচ্চারাই হলো স্বর্গের দ্বার । বাবা কতো ভালোভাবে বুঝিয়ে বলেন । যার বুদ্ধিযোগ খুব ভালোভাবে জুড়ে থাকবে, তারই ধারণা হবে । ব্রহ্মচর্যতেই জ্ঞান ধারণ করতে হয় । বাবা বলেন – গৃহস্থ জীবনে থেকে কমল পুষ্পের সমান হয়ে থাকতে হবে । দুইদিকেই কর্তব্য পালন করতে হবে । অবশ্যই জীবন্মৃত হতে হবে । মৃত্যুর সময় মানুষকে মন্ত্র দেওয়া হয় । বাবা বলেন – তোমরা সবাই এখন মৃত্যুর মুখে দাঁড়িয়ে আছো । আমি কালেরও কাল, সবাইকে ফিরিয়ে নিয়ে যাবো । তাই তোমাদের তো খুশী হওয়া চাই । এরপর যারা খুব ভালোভাবে পড়বে তারা স্বর্গের মালিক হতে পারবে । না পড়লে প্রজার পদ পাবে । এখানে তোমরা এসেছো রাজ্যের অধিকারী হতে । এ হলো পড়া, এখানে অন্ধ শ্রদ্ধার কোনো কথাই নেই । এই পড়া হলো রাজ পদ অর্জনের জন্য । পড়ার যেমন এইম অবজেক্ট হলো – ব্যরিস্টার হতে হলে যোগ অবশ্যই যে পড়ায় সেই টিচারের সঙ্গেই রাখতে হবে । এখানে তোমাদের ভগবান পড়ান, তাই তাঁর সঙ্গে যোগযুক্ত হতে হবে । বাবা বলেন – আমি অনেকদূর অর্থাৎ পরমধাম থেকে আসি । পরমধাম কতো উচ্চ । সূক্ষ্মবতন থেকেও উঁচু, ওখান থেকে আসতে আমার এক সেকেণ্ড সময় লাগে । এর থেকে দ্রুত আর কিছুই হতে পারে না । আমি এক সেকেণ্ডে জীবনমুক্তি প্রদান করি । জনকের উদাহরণ আছে, তাই না । এখন তো হলো নরক, পুরানো দুনিয়া । স্বর্গকে নতুন দুনিয়া বলা হয় । বাবা নরকের বিনাশ করিয়ে আমাদের স্বর্গের মালিক বানান । বাকি সমস্ত আত্মারা শান্তিধামে চলে যায় । আত্মা হলো অমর । তার পার্টও অবিনাশী । তাহলে আত্মা ছোটো – বড় কিভাবে হতে পারে, অথবা কিভাবে জ্বলে মরতে পারে ? আত্মা হলো স্টার । ছোটো – বড় হাতেই পারে না । তোমরা এখন হলে গড ফাদারলি স্টুডেন্ট । গড ফাদার হলেন নলেজফুল, ব্লিসফুল । তিনি তোমাদের পড়াচ্ছেন । তোমরা জানো যে, এই পড়াতেই আমরা সেই দেবী – দেবতা হবো । তোমরা এই ভারতের সেবা করছো । প্রথম – প্রথম তো বাবার হতে হবে, অন্য জায়গায় তো গুরুদের কাছে যায়, তাঁদের হয়ে যায়, অথবা তাদের গুরু করে । এখানে তো হলো বাবা । তাই প্রথমে বাবার বাচ্চা হতে হবে । বাবা তার বাচ্চাদের নিজের সম্পত্তির অধিকারী করেন । বাবা বলেন – বাচ্চারা, তোমরা এক্সচেঞ্জ করো । তোমাদের সমস্ত খারাপ জিনিস আমার, আর আমার সবকিছুই তোমাদের । দেহ সহিত তোমাদের যা কিছুই আছে সব আমাকে দিয়ে দাও । আমি তোমাদের আত্মা আর শরীর উভয়কেই পবিত্র বানিয়ে দেবো, আবার রাজ পদেরও অধিকারী করবো । তোমাদের কাছে যা কিছুই আছে, তোমরা আমার কাছে বলি দিয়ে দাও, তাহলে তোমরা জীবনমুক্তি প্রাপ্ত করবে । বাবা, এই সবকিছুই তোমার । বাবা বলেন – তোমরা আমাকে উত্তরাধিকারী বানাও । আমি তোমাদের ২১ জন্মের জন্য উত্তরাধিকারী করে দেবো । তোমরা কেবল আমার মতে চলো । যে কাজ কারবারই করো কিম্বা বিদেশে যাও, যা খুশী করো । তোমরা কেবল আমার মতে চলো । সাবধান থেকো, মায়া কিন্তু প্রতি মুহূর্তে আঘাত করবে । কোনো বিকর্ম করো না । শ্রীমতে চললে তোমরা শ্রেষ্ঠ হতে পারবে । আচ্ছা ।

মিষ্টি – মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা – পিতা, বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত । আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মারূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার ।

শিববাবা বোঝাচ্ছেন। বাবা তো দয়ালু। তাঁকে তো সকলের কল্যাণ করতে হবে। ওরা আর কোথায় যাবে। যখন দেখবে যে সত্যি সত্যিই আগুন লাগছে, তখন এসে বাবার শরণাপন্ন হবে। বাবা সকলকে সদগতি প্রদান করেন। কিন্তু তিনি নিজে পুনর্জন্ম নেন না। কিন্তু তাঁকেই আবার সর্বব্যাপী বলে দিয়েছে। তোমরা হলে সঙ্গমযুগবাসী। তোমাদের বুদ্ধিতে এখন সমস্ত জ্ঞান রয়েছে। আত্মীয়-বন্ধুদের সাথেও সম্পর্ক রাখতে হবে। ওদের মধ্যে আসুরিক গুণ আছে, আর তোমাদের মধ্যে আছে দিব্যগুণ। তোমাদের কাজ হলো অন্যদেরকেও এগুলো বোঝানো। সবাইকে মন্ত্র দিতে থাকো। প্রদর্শনীর মাধ্যমে তোমরা কতো মানুষকে বোঝাও। এখন ভারতবাসীদের ৮৪ জন্ম পূর্ণ হয়েছে। এখন বাবা এসেছেন মানুষ থেকে দেবতা বানানোর জন্য অর্থাৎ নরকবাসী মানুষদেরকে স্বর্গবাসী বানানোর জন্য। দেবতারা স্বর্গে থাকে। এখন নিজের আসুরিক গুনগুলোকে ঘৃণা করা উচিত। নিজেকে দেখতে হবে যে আমার মধ্যে কি দিব্যগুণ এসেছে ? আমার মধ্যে কোনো খারাপ গুণ নেই তো ? মন, বাণী কিংবা কর্মের দ্বারা আমি কোনো আসুরিক কর্ম করিনি তো ? আমি কি কাঁটা থেকে ফুল বানানোর সেবা করছি ? বাবা হলেন বাগানের মালিক। আর তোমরা ব্রহ্মাকুমার-কুমারীরা হলে মালি। কত রকমের মালি থাকে। কেউ কেউ এতই আনাড়ি যে কাউকেও নিজের মতো বানাতে পারে না। বাগানের মালিক তো প্রদর্শনীতে যাবেন না। মালিরাই যাবে। এই মালি (ব্রহ্মাবাবা) যেহেতু শিববাবার সঙ্গেই রয়েছেন, তাই ইনিও যেতে পারবেন না। তোমরা মালিরা সার্ভিস করতে যাও। ভালো ভালো মালিদেরকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। বাবাও বলেন, যারা অপটু, তাদেরকে ডাকবে না। বাবা কারোর নাম বলেন না। তবে থার্ডক্লাস মালিও আছে। বাগানের মালিক তাকেই ভালোবাসবে যে সুন্দর সুন্দর ফুল ফুটিয়ে দেখাবে। তার ওপরে বাগানের মালিক খুশি হবে। তারা মুখ থেকে কেবল রত্নই বের করবে। কেউ যদি রত্নের বদলে পাথর বের করে, তবে বাবা কি বলবেন। শিবের কাছে আকন্দ ফুলও দেয়। সুতরাং কেউ কেউ এইরকমও হয়। তাদের চালচলন দেখ কেমন। অনেক কাঁটাও এখানে আসে। তারপর আবার জঙ্গলে চলে যায়। সতোপ্রধান হওয়ার পরিবর্তে আরো তমোপ্রধান হয়ে যায়। তাদের আর কি গতি হবে।

বাবা বলছেন, আমি প্রথমত নিষ্কাম, দ্বিতীয়ত পরোপকারী। যে ভারতবাসীরা আমার নিন্দা করে, আমি সেই ভারতবাসীদেরই পরোপকার করি। বাবা বলছেন, আমি এই সময়ে এসেই স্বর্গ স্থাপন করি। যদি কাউকে বলা হয় যে স্বর্গে চলুন, তবে সে বলবে – আমি তো এখানে স্বর্গেই আছি। আরে, স্বর্গ তো সত্যযুগে থাকবে। কলিযুগে কোথা থেকে স্বর্গ আসবে ? কলিযুগকে তো নরক বলা হয়। এটা পুরাতন তমোপ্রধান দুনিয়া। মানুষ জানেই না যে স্বর্গ কোথায় আছে। মনে করে, স্বর্গ বুঝি আকাশে আছে। দিলবড়া মন্দিরেও ওপরে স্বর্গ দেখানো হয়েছে। নিচে সবাই তপস্যা করছে। তাই মানুষ বলে দেয় যে অমুক ব্যক্তি স্বর্গগত হয়েছেন। কিন্তু স্বর্গ কোথায় ? সকলের জন্যই বলা হয় যে স্বর্গগত হয়েছেন। এটা আসলে বিষয় সাগর। বিষ্ণুপুরীকে ক্ষীরের সাগর বলা হয়। ওরা পূজা করার জন্য একটা বড় জলাশয় বানিয়েছে। তার মধ্যে বিষ্ণুকে দেখানো হয়েছে। তোমরা বাচ্চারা এখন স্বর্গে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হচ্ছ যেখানে দুধের নদী বইবে। তোমরা বাচ্চারা এখন ফুলের মতো হয়ে যাও। যেন এমন কোনো আচরণ প্রকাশিত না হয় যার জন্য কেউ বলতে পারে যে এ তো কাঁটার মতো। সর্বদাই ফুলের মতো হওয়ার জন্য পুরুষার্থ করো। মায়া কাঁটা বানিয়ে দেয়, তাই নিজেকে খুব সামলে রাখতে হবে। বাবা বলছেন, ঘর-গৃহস্থে থেকেও কমল পুষ্পের মতো পবিত্র হতে হবে। বাবা, যিনি বাগানের মালিক, তিনি এসেছেন কাঁটা থেকে ফুল বানাতে। দেখতে হবে, আমি কি ফুলের মতো হয়েছি। যারা ফুলের মতো, তাদেরকেই সেবার জন্য সব জায়গায় আমন্ত্রণ জানানো হয়। বলে – বাবা, গোলাপ ফুল পাঠাও। দেখতেই তো পাওয়া যায় যে কে কেমন ফুল। বাবা বলছেন আমি তোমাদেরকে রাজযোগ শেখানোর জন্যই আসি। এটাই হচ্ছে সত্য নারায়ণের কথা। সত্য প্রজার কথা নয়। রাজা-রানী তৈরি হলে, প্রজারাও তৈরি হয়ে যাবে। এখন তোমরা বুঝতে পারছো যে কীভাবে ক্রমানুসারে রাজা-রানী এবং তাদের সঙ্গে মানানসই প্রজা তৈরি হচ্ছে। যে খুব গরিব, যার কাছে দুই কিংবা পাঁচ পয়সাও উদ্বৃত্ত হয় না, সে কিভাবে কিছু দেবে ? কিন্তু সেও ততটাই পেয়ে যায়, যতটা একজন হাজার টাকা দেওয়ার পরে পায়। ভারতই সবথেকে গরিব। কেউই জানে না যে আমরা ভারতবাসীরাই স্বর্গবাসী ছিলাম। দেবতাদের গুণগান করা হয়, কিন্তু সেই কথার অর্থগুলো কেউ বোঝে না। যেমন ব্যাঙ ট্রা-ট্রা করতে থাকে। বুলবুলি খুব ভাল শব্দ করে। কোনো অর্থ বোঝে না। আজকাল কত মানুষ গীতা শোনায়। তাদের মধ্যে অনেক মাতাজীও আছে। গীতার দ্বারা কোন্ ধর্ম স্থাপন হয়েছিল ? এইসব কিছুই জানে না। কেউ কিছু ঋদ্ধি-সিদ্ধি দেখালেই মানুষ ভেবে নেয় ইনিই ভগবান। গায়ন আছে, পতিত-পাবন। তাহলে নিশ্চয়ই পতিত হয়ে গেছে। বাবা বলছেন, বিকারের বশীভূত হওয়াই নম্বর ওয়ান পতিত হওয়া। এই গোটা দুনিয়াটাই পতিত। সবাই বলছে, হে পতিত-পাবন, তুমি এসো। তাহলে তাঁকেই আসতে হবে নাকি গঙ্গা স্নান করলেই পবিত্র হয়ে যাবে ? মানুষ থেকে দেবতা বানানোর জন্য বাবাকে কতোই না পরিশ্রম করতে হয়। বাবা বলছেন, আমাকে স্মরণ করলেই তোমরা কাঁটা থেকে ফুলের মতো হয়ে যাবে। মুখ থেকে কখনো পাথর বের করবে না। ফুলের মতো হও। এটাও তো পড়াশুনা। চলতে চলতে গ্রহের দশা বসলে ফেল হয়ে যায়। হোপফুল থেকে হোপলেস হয়ে যায়। তারপর বলে, আমি বাবার কাছে যাব। কিন্তু ইন্দ্রের সভায় তো কোনো পতিত যেতে পারে না। এটা তো ইন্দ্রের সভা, তাই না ? যে ব্রাহ্মণী তাকে নিয়ে আসবে, তারও পাপ হবে। যদি সে বিকারের বশীভূত হয়ে যায়, তবে ব্রাহ্মণীর ওপরেও বোঝা হয়ে যাবে, তাই খুব সাবধানতা অবলম্বন করে কাউকে আনতে হয়। ভবিষ্যতে তোমরা দেখবে যে সাধুসন্ত সকলেই এসে লাইনে দাঁড়িয়ে যাবে। ভীষ্ম পিতামহ ইত্যাদির নাম তো লেখা আছে। বাচ্চাদের খুব তীক্ষ্ণ বুদ্ধি থাকতে হবে। তোমরা যেকোনো ব্যক্তিকেই বলতে পারো যে ভারত একসময়ে ফুলের বাগান ছিল, সেখানে দেবী-দেবতারা থাকত। এখন কাঁটা হয়ে গেছে। তোমাদের মধ্যে তো ৫ বিকার আছে, তাই না ? রাবণ রাজ্য মানেই জঙ্গল। বাবা এসে কাঁটা থেকে ফুল বানাচ্ছেন। ভেবে দেখবে যে এখন যদি আমি গোলাপ ফুল না হতে পারি, তবে জন্ম জন্মান্তর ধরে আকন্দ ফুল হব। প্রত্যেককেই নিজের কল্যাণ করতে হবে। এতে কি শিববাবার কল্যাণ করা হয় ? নিজেরই কল্যাণ করতে হবে। এখন শ্রীমৎ অনুসারে চলতে হবে। বাগানে গেলে তো আগে সুগন্ধি ফুলের দিকেই নজর যাবে। আকন্দের দিকে কি নজর যাবে ? দুনিয়ায় যেমন ফ্লাওয়ার শো হয়, এটাও সেইরকম ফ্লাওয়ার শো। অনেক মূল্যবান পুরস্কার পাওয়া যায়। একেবারে ফার্স্টক্লাস ফুল হতে হবে। আচরণ খুব মিষ্টি হতে হবে। ক্রোধান্বিত ব্যক্তির কাছে নম্র হয়ে যেতে হবে। আমরা শ্রীমৎ অনুসারে পবিত্র হয়ে পবিত্র দুনিয়া স্বর্গের মালিক হতে চাই। অনেক রকমের যুক্তি রয়েছে। মাতাদের মধ্যে অনেক রকমের নারীসুলভ বুদ্ধি (স্ত্রীয়া চরিত্রম্) থাকে। কোনো ভাবে বুদ্ধি খাটিয়ে পবিত্র থাকার জন্য পুরুষার্থ করতে হবে। তোমরা বলতে পারো যে ভগবান বলেন – কাম বিকার সবথেকে বড় শত্রু, পবিত্র হলেই সতোপ্রধান হয়ে যাবে। তাহলে আমরা কি ভগবানের নির্দেশ পালন করব না। যুক্তির দ্বারা নিজেকে রক্ষা করতে হবে। বিশ্বের মালিক হওয়ার জন্য যদি একটু সহ্য করতে হয়, তবে ক্ষতি কি ? তোমরা তো নিজের জন্যই করছ। ওরা রাজত্বের জন্য যুদ্ধ করে। তোমরাও নিজের জন্যই সবকিছু করছ। পুরুষার্থ করতে হবে। বাবাকে ভুলে যাওয়ার জন্যই পড়ে যায়। তারপর লজ্জা হয় – কীভাবে দেবতা হব। আচ্ছা।

মিষ্টি-মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্নেহ-সুমন স্মরণ-ভালবাসা আর সুপ্রভাত। আত্মাদের পিতা ওঁনার আত্মা রূপী সন্তানদের জানাচ্ছেন নমস্কার।

ধারণার জন্যে মুখ্য সারঃ-

১ ) আত্মা এবং শরীর উভয়কেই পবিত্র করার জন্য দেহ সহ যা কিছুই আছে, তাকে বাবাকে সমর্পণ করে, বাবার শ্রীমতে চলতে হবে ।

২ ) মাতা – পিতার কোলে আসীন হওয়ার জন্য নিজেকে উপযুক্ত করতে হবে । উপযুক্ত হওয়ার জন্য মুখ্য গুণ ‘পবিত্রতা’কে ধারণ করতে হবে ।

বরদানঃ-

কোনো জিনিস যখন সাকারে দেখা যায়, তখন তা শীঘ্র গ্রহণ করা যেতে পারে, তাই নিমিত্ত হওয়া যে শ্রেষ্ঠ আত্মারা আছে, তাদের সেবা, ত্যাগ, স্নেহ ইত্যাদি সকলের সহযোগী মনোভাবের প্রত্যক্ষ কর্ম দেখে যে প্রেরণা প্রাপ্ত হয়, সেটাই বরদানে পরিণত হয়ে যায় । নিমিত্ত হওয়া আত্মাদের যখন কর্ম করাকালীন এই গুণের ধারণায় দেখো, তখন যেন সহজ কর্মযোগী হওয়ার বরদান প্রাপ্ত হয়ে যায়। যে এমন বরদান প্রাপ্ত করতে থাকে, সে মাস্টার বরদাতা হয়ে যায় ।

স্লোগানঃ-

*মাতেশ্বরী জীর অমূল্য মহাবাক্য -- "সত্য বাদশাহ পরমাত্মার কাছে স্বচ্ছ হয়ে থাকো"*

এই সময় আমরা পরমাত্মা বাবার কাছে এই নির্দেশ পেয়েছি যে, নিরন্তর আমার স্মরণে থাকো। যোগের অর্থ হলো, ঈশ্বরীয় স্মরণে থাকা, যোগের অর্থ কোনো ধ্যান নয় । আমাদের এই যে সহজ যোগ, যেমন চলতে – ফিরতে, কাজকর্ম করতে করতে তাঁর স্মরণে থাকা, একেই অটুট অখণ্ড যোগ বলা হয়, কিন্তু এতে নিরন্তর থাকার জন্য অভ্যাসের প্রয়োজন । যদি তাঁর নির্দেশে নির্দেশ পালনকারী হয়ে না থাকো, কোনোকিছু অবজ্ঞা করো, তাহলে অবশ্যই দণ্ড ভোগ করতে হবে । তাঁর নির্দেশ হলো, আমি যেমন কর্ম করি, আমাকে দেখে তোমরাও পদার্পণ করো, না হলেই মায়ার আঘাত পাবে । সত্য বাদশাহের কাছে স্বচ্ছ হয়ে থাকো, মায়ার যাই বিঘ্ন বিচলিত করুক না কেন, তাও তাঁর সামনে রাখা উচিত, তাহলে তাঁর সাহায্যে মায়া দূর হয়ে যাবে, রাস্তা পরিস্কার হয়ে যাবে, তখন তো যেখানে বসাবে, যেমন চালাবে, যা খাওয়াবে, রাস্তা পরিস্কার হয়ে যাবে । এমন সাথ দেওয়ার জন্য খুবই সাহসের প্রয়োজন । এমন মহান সৌভাগ্যশালী খুবই কম বেরোবে, তারাই বিজয় মালাতে যাবে । বাকি ভাগ্যশালী কিছু হবে, যারা অল্পকিছু প্রাপ্ত করে প্রজা হবে, তাই অল্প কিছু প্রাপ্ত হলে খুশী হয়ে যেও না । তোমাদের ইচ্ছা তো সম্পূর্ণ প্রাপ্তির, তাই সাহস রাখো, এগিয়ে যেতে হবে । মায়া বিঘ্ন এনে উপস্থিত করবে কিন্তু তার উপর বিজয় প্রাপ্ত করতে হবে । এতে যদি ভুল হয়, তাহলে মনে করবে বিশ্বাসের কমতি আছে, নিজের ধারণাতেও কিছু ঘাটতি আছে, এ তো নিজের দোষ, এতে লোক লজ্জা, কুল মর্যাদাকে ভাঙ্গতেও হয়, যখন একে ছিন্ন করতে পারবে, তখনই প্রকৃত পারলৌকিক দৈবী মর্যাদাকে প্রাপ্ত করবে । এই বিকারী দুনিয়া তো শেষ হয়ে যাবে, দেখো, মীরাও লোকলজ্জা ত্যাগ করেছিলো, তখনই গিরিধরকে পেয়েছিলো । যদি সেই লোকলজ্জা রাখো তাহলে এই দৈবী লোকের মতো হতে পারবে না । এখন কল্যাণের কারণে ঈশ্বরের রায় তো দেওয়া হয়, এখন নিজের বুদ্ধি দিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে । কি করতে হবে, কোনটা উচিত ?

Daily Murlis in Bengali: Brahma Kumaris Murli Today in Bengali

Email me Murli: Receive Daily Murli on your email. Subscribe!

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top