12 December 2021 BENGALI Murli Today – Brahma Kumaris

Read and Listen today’s Gyan Murli in Bengali

December 11, 2021

Morning Murli. Om Shanti. Madhuban.

Brahma Kumaris

আজকের শিব বাবার সাকার মুরলি, বাপদাদা, মাধুবন। Brahma Kumaris (BK) Murli for today in Bengali. This is the Official Murli blog to read and listen daily murlis.

"যোগযুক্ত, যুক্তিযুক্ত হওয়ার যুক্তি"

আজ বাপদাদা তাঁর সকল বাচ্চার মধ্যে থেকে দু’ধরণের বাচ্চা দেখছেন। এক, সদা যোগযুক্ত আর সব কর্মে যুক্তিযুক্ত। দ্বিতীয় ধরণের তারা যোগী, কিন্তু সদা যোগযুক্ত নয় এবং সদা সব কর্মে আপনা থেকে যুক্তিযুক্ত নয়। মন্সা, বোল, কর্ম – তিনের মধ্যে থেকে কখনো কোনটায় কখনো কোনটায় যুক্তিযুক্ত নয়। সাধারণত:, ব্রাহ্মণ-জীবন অর্থাৎ আপনা থেকেই যোগযুক্ত আর সদা যুক্তিযুক্ত। ব্রাহ্মণ-জীবনের অলৌকিকতা বা বিশেষত্ব অথবা পৃথক হয়েও প্রিয় হওয়া এটাই – “যোগযুক্ত” আর “যুক্তিযুক্ত।” কিন্তু কোনো কোনো বাচ্চা এই বিশেষত্বের সাথে সহজে এবং ন্যাচারালি চলছে আর কেউ কেউ অ্যাটেনশন রাখে, তবুও উভয় বিষয়ে সদা অনুভব করতে পারে না। এর কারণ কী ? নলেজ তো সবার আছে আর লক্ষ্যও সবার একই। তবুও কেউ কেউ লক্ষ্যের আধারে এই লক্ষ্য অর্থাৎ যোগযুক্ত আর যুক্তিযুক্ত স্থিতির অনুভূতির কাছে আছে আর কেউ কেউ ফাস্ট পুরুষার্থ দ্বারা কাছে আসে, কিন্তু কখনো কাছে আর কখনো চলতে চলতে কোনো না কোনো কারণবশতঃ থেমে যায়, সেইজন্য সদা এইসব লক্ষণের কাছাকাছি অনুভব করতে পারে না। সকল ব্রাহ্মণ আত্মার মধ্যে থেকে এই শ্রেষ্ঠ লক্ষ্য পর্যন্ত নম্বর ওয়ান কাছে কে ? ব্রহ্মা বাবা। তিনি কী বিধি আপন করেছেন যার মাধ্যমে এই সফলতা প্রাপ্ত করেছেন ? সদা যোগযুক্ত থাকার সরল বিধি হ’ল – সদা নিজেকে “সারথি” আর “সাক্ষী” মেনে চলা।

তোমরা সব শ্রেষ্ঠ আত্মা সেই রথের সারথি। তোমরা প্রত্যেক আত্মা রথ চালানো সারথি। এই স্মৃতি আপনা থেকেই এই রথ অথবা দেহ থেকে পৃথক করে দেয়, যেকোন ধরনের দেহবোধ থেকে স্বতন্ত্র বানায়। দেহবোধ না থাকায় সহজে যোগযুক্ত হয়ে যায় এবং আপনা থেকেই সব কর্মে যোগযুক্ত, যুক্তিযুক্ত হয়ে যায়। নিজেকে সারথি মনে করায় সব কর্মেন্দ্রিয় নিজের কন্ট্রোলে থাকে অর্থাৎ সব কর্মেন্দ্রিয়কে সদা লক্ষ্য আর লক্ষণের গন্তব্যের কাছাকাছি নিয়ে আসার কন্ট্রোলিং পাওয়ার এসে যায়। “সারথি” স্বয়ং কোনও কর্মেন্দ্রিয়ের বশ হতে পারে না, কারণ মায়া যখন কারও উপর আঘাত করে, তো মায়ার আঘাত করার বিধি হয় এটাই, কোনো না কোনো স্থূল কর্মেন্দ্রিয় অথবা সূক্ষ্ম শক্তি – “মন-বুদ্ধি-সংস্কার” এর পরবশ বানিয়ে দেয়। তোমরা সব সারথি আত্মার যে মহামন্ত্র, বশীকরণ মন্ত্র বাবার থেকে প্রাপ্ত হয়েছে, তার পরিবর্তন করে বশীকরণের পরিবর্তে বশীভূত করে দেয়। একবার হলেও যদি একটা বিষয়ে বশীভূত হয়ে যাও, তবে সব ভূতের প্রবেশ হয়ে যায়, কেননা ভূতেদের নিজেদের মধ্যেও ইউনিটি আছে। একটা ভূত যদি আসে তো সে সবাইকে আহ্বান করবে। তখন কী হয় ? এই ভূত তখন সারথি থেকে স্বার্থ-সাধক বানিয়ে দেয়। আর তোমরা কী কর ? যখন সারথি বোধের স্মৃতিতে আস, তখন ভূত তাড়ানোর যুদ্ধ কর। যুদ্ধের স্থিতিকে যোগযুক্ত স্থিতি বলা হবে না, সেইজন্য যোগযুক্ত এবং যুক্তিযুক্ত গন্তব্যের কাছে যাওয়ার পরিবর্তে থেমে যাও এবং প্রথম নম্বর স্থিতি থেকে দ্বিতীয় নম্বরে এসে যাও। সারথি অর্থাৎ বশ হয় না বরং বশ করে চালিত করে। তাহলে তোমরা সবাই কে ? সারথি, তাই না ?

সারথি অর্থাৎ আত্মা-অভিমানী, কেননা আত্মাই সারথি। ব্রহ্মাবাবা এই বিধিতে নম্বর ওয়ান সফলতা প্রাপ্ত করেছেন, সেইজন্য বাবাও এনার সারথি হয়েছেন। সারথি হওয়ার স্মারকচিহ্ন বাবা করে দেখিয়েছেন। ফলো ফাদার কর। সারথি হয়ে সদা সারথি-জীবনে অতি স্বতন্ত্রতা বজায় রেখেও প্রিয় হওয়ার স্থিতির অনুভব করিয়েছেন, কারণ দেহকে অধীন করে বাবা প্রবিষ্ট হন অর্থাৎ সারথি হন, দেহের অধীন হন না, সেইজন্য তিনি স্বতন্ত্র হয়েও প্রিয়। এ’ ভাবেই তোমরা সব ব্রাহ্মণ আত্মাও বাবা সমান সারথির স্থিতিতে থাক। ঘুরতে-ফিরতে চেক কর – আমি সারথি অর্থাৎ সবাইকে চালনা করে আমি স্বতন্ত্র অথচ প্রিয় স্থিতিতে স্থিত আছি ? মাঝে-মাঝেই এ’টা চেক কর। এ’রকম নয় যে সারাদিন কেটে গেল তারপরে রাতে চেক করবে ! সারাদিন যদি চলে গেল তো চলে যাওয়া সময় উপার্জন করা থেকে সদাসর্বদার জন্য চলে গেল, সেই জন্য খুইয়ে ফেলে তারপরে যেন হুঁশে ফিরো না। এই সংস্কার আপনা থেকেই যেন ন্যাচারাল হয়। কোন সংস্কার ? চেকিংয়ের। যেমন, কারও কোনো পুরানো সংস্কার এই ব্রাহ্মণ জীবনে এখনও এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে যদি বিঘ্নরূপ হয়, তো তোমরা বলো না যে না চাইতেও সংস্কার বশতঃ হয়ে যায় ! যা করতে চাও না তা’ তোমরা করে নাও, যখন উল্টো (ভুল) সংস্কার না চাইলেও যেকোন কর্ম করিয়ে নেয়, তাহলে ন্যাচারাল চেকিংয়ের শুদ্ধ সংস্কার নিজের করতে পার না ? বিনা পরিশ্রমে চেকিংয়ের শুদ্ধ সংস্কার তখন আপনা থেকেই কাজ করাতে থাকবে। এটা বলবে না যে ভুলে যাই বা খুব বিজি থাকি। অশুদ্ধ অথবা ব্যর্থ সংস্কার, অনেক বাচ্চার মধ্যে অশুদ্ধ সংস্কার নেই, কিন্তু ব্যর্থ সংস্কার আছে। এই অশুদ্ধ, ব্যর্থ সংস্কার ভুলতে চাইলেও ভুলতে পার না আর তখন এটাই বলো আমার এ’রকম অভিপ্রায় ছিল না, কিন্তু এটা আমার পুরানো স্বভাব বা সংস্কার। তাহলে, অশুদ্ধ সংস্কার ভুলতে পার না, শুদ্ধ সংস্কার কীভাবে ভুলে যাও তোমরা ? সারথি বোধের স্থিতি আপনা থেকেই স্ব-উন্নতির শুদ্ধ সংস্কার ইমার্জ করে আর সময় অনুসারে তখন সহজে ন্যাচারাল চেকিং হতে থাকে। অশুদ্ধ সংস্কারের আজ্ঞাবহ হয়ে যাও তোমরা আর এ’ভাবেই এই অভ্যাসে তখন পোক্ত হয়ে যাবে। তাহলে শুনলে, সদা যোগযুক্ত-যুক্তিযুক্ত থাকার বিধি কি হবে ? সারথি হয়ে চলতে হবে। সারথি নিজে থেকেই সাক্ষী হয়ে যেকোন কিছু করবে, দেখবে, শুনবে। সাক্ষী হয়ে দেখা, ভাবা, করা সবেতেই সবকিছু করেও নির্লিপ্ত থাকবে অর্থাৎ মায়ার আরোপিত প্রভাব থেকে স্বতন্ত্র থাকবে। তাহলে, পাঠ পাকা করেছ তো, করেছ না ! ব্রহ্মাবাবাকে তোমরা ফলো কর, কর না ! ব্রহ্মাবাবার প্রতি তো তোমাদের অনেক প্রীতি, তাই না ! প্রীতির লক্ষণ হ’ল “সমান হওয়া” অর্থাৎ ফলো করা।

বাবার সাথে সব টিচারের কতো প্রীতি আছে ! বাবা টিচারদেরকে সেবায় তাঁর সমীপ-সাথী মনে করেন। তাহলে প্রথমে ফলো টিচার্স করবে, তাই না ! এতে সদা এই লক্ষ্য রাখা যে “প্রথমে আমি” । ঈর্ষায় প্রথমে আমি নই, সেটা ক্ষতি করে। শব্দ সেই একই “প্রথমে আমি”, কিন্তু ঈর্ষা বশতঃ “প্রথমে আমি” বলা একটা অন্য ব্যাপার। সে’টাতে প্রথম হওয়ার পরিবর্তে লাস্টে পৌঁছে যাও, ফার্স্ট থেকে লাস্টে এসে যাও আর ফলো ফাদার করার সময় “প্রথমে আমি” বলছ আর করছ তো ফার্স্টের সাথে তোমরাও ফার্স্ট হয়ে যাবে। ব্রহ্মা তো ফার্স্ট, তাই না ! সুতরাং সদা এই লক্ষ্য রাখ যে টিচার্স অর্থাৎ ফলো ফাদার এবং ফলো ফাদার-এ নম্বর ওয়ান হওয়া। যেভাবে ব্রহ্মা নম্বর ওয়ান হয়েছেন, তোমরাও ব্রহ্মাকে ফলো করে নম্বর ওয়ান হওয়ার লক্ষ্য রাখ। টিচার্স তোমরা সবাই এ’তে পাকাপোক্ত, তাইনা ! সাহস (ইচ্ছাশক্তি) আছে ফলো করার ? কারণ টিচার্স অর্থাৎ যারা নিমিত্ত, তোমরা অনেক আত্মার নিমিত্ত। সুতরাং যারা নিমিত্ত হয় তাদের উপর কতো দায়িত্ব ! যেমন, ব্রহ্মাবাবা নিমিত্ত থেকেছেন, তাই না ! ব্রহ্মাবাবাকে দেখে কতো ব্রাহ্মণ তৈরি হয়েছে ! একইরকম ভাবে তোমরা টিচার্স যে কার্যই কর, হয় খাবার বানাচ্ছ, অথবা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করছ, কিন্তু সব কর্ম করার সময় এ’টা যেন স্মৃতিতে থাকে আমি নিমিত্ত – অনেক আত্মার প্রতি আমি “যা” করব, “যেভাবে” করব, আমি নিমিত্ত আত্মাকে দেখে অন্যেরাও সে’রকমই করবে। সেইজন্য বাপদাদা সবসময় বলেন, ভাষণ করা একদিকে আর বাসন মাজা আরেকদিকে। উভয় কাজেই যোগযুক্ত, যুক্তিযুক্ত হও। কাজ যেমনই হোক, কিন্তু স্থিতি সদাই যোগযুক্ত আর যুক্তিযুক্ত যেন হয়। এ’রকম নয় যে ভাষণ করছ তখন যোগযুক্ত থাকছ আর বাসন মাজা অর্থাৎ যখন সাধারণ কাজ করছ তো স্থিতিও সাধারণ হয়ে যাবে ! সবসময় ফলো ফাদার। শুনেছ !

তোমরা তো সামনে বসো, সামনে বসা কতো ভালো লাগে ! আর তাহলে সদা এগিয়ে যাওয়াতে কতো ভালো লাগবে ! যখনই এমন কোনো কড়া সংস্কার তোমাদের পিছনে সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে তো এই সীন স্মরণ কর – যখন সামনে বসা ভালো লাগে তাহলে সামনে এগিয়ে যেতে কেন পিছিয়ে থাকব ! সুতরাং কোনো পরিস্থিতি উদ্ভব হলে মধুবনে পৌঁছে যাও আর নিজের মধ্যে সাহস আর উদ্যম নিয়ে এস, কারণ যারা পিছনে থাকার তারা তো পিছনে অনেক আসবে, তোমরাও যদি পিছনে থেকে যাবে তো পিছনের দিকের তাদেরকে তো সামনে এগিয়ে দিতে হবে, সেইজন্য সদা এই স্মৃতি বজায় রাখ, আমরা সামনে থাকি। পিছনে থাকা অর্থাৎ প্রজা হওয়া। প্রজা তো হতে চাও না, চাও ! তোমরা প্রজা যোগী তো নও, রাজযোগী, তাই না ! অতএব, ফলো ফাদার। আচ্ছা !

ফরেনার্স কী করবে ? ফলো ফাদার করবে, করবে না ! কতদূর পৌঁছাবে ? সবাই ফ্রন্টে আসবে। যারা এসেছে, ফলো ফাদার করে ফাস্ট আর ফার্স্ট এগিয়ে যাও। এটা ভেবো না যে মাত্র একজনই ফার্স্ট হবে, কিন্তু ফার্স্ট গ্রেড তো অনেক হবে, তাই না ? ফার্স্ট নম্বর তো ব্রহ্মা আসবেন, কিন্তু ফার্স্ট গ্রেডের তারাই তো তাঁর সাথী থাকবে, সেইজন্য ফার্স্ট গ্রেডে এস। শুধু একা ফার্স্ট হবে না, ফার্স্ট গ্রেডে অনেক হবে, সেইজন্য এটা ভেবো না – প্রথম নম্বর তো ফাইনাল হয়ে গেছে, সুতরাং সেকেন্ডেই আসবে, সেকেন্ড গ্রেডে যেও না। যে দায়িত্ব পালনে পদক্ষেপ নেয় সে’ই সর্বশ্রেষ্ঠ অর্জুন। অর্জুন হওয়া অর্থাৎ সর্বশ্রেষ্ঠ নম্বর। সবার ফার্স্টে আসার চান্স আছে, সবাই আসতে পারে। ফার্স্ট-গ্রেড অসীম, কম নয়। তো সবাই ফার্স্টে আসবে, তাই না ! নিশ্চয় আছে ? আচ্ছা !

যারা, সদা ব্রহ্মাবাবাকে ফলো করে, সদা আপনা থেকেই যোগযুক্ত-যুক্তিযুক্ত থাকে, সদা সারথি হয়ে সকল কর্মেন্দ্রিয়কে শ্রেষ্ঠ মার্গে চালিত করে, সদা গন্তব্য তথা লক্ষ্যবস্তুর কাছে থাকে, সে’রকম সর্বশ্রেষ্ঠ আত্মাদের বাপদাদার স্মরণ-স্নেহ আর নমস্কার।

অব্যক্ত বাপদাদার জোন ওয়াইজ উচ্চারিত হওয়া মধুর মহাবাক্যঃ –

ইন্দোর জোন

বাপদাদার শ্রেষ্ঠ মত শ্রেষ্ঠ গতি প্রাপ্ত করিয়ে নিয়েছে, তোমরা এ’রকম অনুভব কর, তাই না ! যেমন মতি তেমন গতি হয়। সুতরাং বাবার শ্রেষ্ঠ মত যদি থাকে তাহলে গতিও তো শ্রেষ্ঠ হবে, হবে না ! বলা হয়ে থাকে যে, অন্তে যেমন তোমার মতি, তেমনই তোমার গতি . . . এটা কেন বলা হয়েছে ? কারণ বাবা চক্রের অন্তে এসে শ্রেষ্ঠ মত দেন। তাইতো অন্ত সময়ে শ্রেষ্ঠ মত নাও আর অনেক জন্ম সদ্গতি প্রাপ্ত কর। এই সময় অসীমের “অন্ত-মতি তথা গতি” শ্রেষ্ঠ হয়ে যায়। সুতরাং এই সময়েরই স্মরণিক ভক্তিতে চলে আসছে। এক জন্মের শ্রেষ্ঠ মত দ্বারা কতো জন্ম পর্যন্ত শ্রেষ্ঠ গতি প্রাপ্ত কর ! সব স্মৃতিচিহ্ন এই সঙ্গমযুগেরই। স্মৃতিচিহ্ন কেন হয়েছে ? কারণ এই সময় স্মরণে থেকে তোমরা কর্ম কর। সব কর্মের স্মরণিক হয়ে গেছে। অমৃতবেলায় তোমরা বিধিপূর্বক ওঠো, তাহলে দেখ, তোমাদের স্মৃতিচিহ্নের চিত্রও বিধিপূর্বক জাগানো হয়, কতো প্রীতিপূর্ণ ভালোবাসায় তারা জাগায়। জড়চিত্র, কিন্তু তবুও তারা সস্নেহ হৃদয়ে জাগায়। জাগায়, তারপরে খাওয়ায়, তারপরে আবার শুইয়ে দেয়। কারণ এই সময় তোমরা এই সবকিছু বিধিসম্মত ভাবে স্মরণে কর। আহারও বিধিপূর্বক খাও। ভোগ নিবেদন করার পরে খাও, তাই না ! নাকি যেমন আছে তেমনই খেয়ে নাও ? এমন তো নয় যে কাউকে খেতে দিতে হবে ব’লে তাড়াহুড়ো করে ভোগ নিবেদন করলে না ! যদি কাউকে দিতেও হয়, কোনো বাধ্যবাধকতা আছে তো আগে আলাদা ভাগ অবশ্যই সরিয়ে রাখ। এ’রকম নয় যে কাউকে খাইয়ে পরে ভোগ নিবেদন করবে। বিধিপূর্বক ভোজনে সিদ্ধিপ্রাপ্ত হয়, খুশি হয়, সহজভাবে নিরন্তর স্মরণ থাকে।

সুতরাংঅমৃতবেলা থেকে রাত পর্যন্ত যে কর্মই কর, স্মরণের বিধিবদ্ধ ভাবে কর তবেই সব কর্মের সিদ্ধি প্রাপ্ত হবে। সিদ্ধি অর্থাৎ প্রত্যক্ষ ফল প্রাপ্ত হতে থাকা। সবচাইতে বড় সফলতা হ’ল – প্রত্যক্ষফল হিসেবে অতীন্দ্রিয় সুখের অনুভূতি হওয়া। সদা সুখের তরঙ্গে, খুশির তরঙ্গে তরঙ্গিত থাকবে। প্রথমে প্রত্যক্ষফল প্রাপ্ত হয়, তারপরে ভবিষ্যতের ফল পাওয়া যায়। এই সময়ের প্রত্যক্ষফল ভবিষ্যতের অনেক জন্মের ফল থেকে শ্রেষ্ঠ। যদি এখন প্রত্যক্ষফল না খেয়েছ তবে সারা কল্পে কখনও প্রত্যক্ষফল পাবে না। তোমরা এখনই কিছু করলে আর এখনই তার ফল লাভ হ’ল – একে বলে প্রত্যক্ষ ফল। সত্যযুগেও যে ফলের

প্রাপ্তি হবে তা’ এই জন্মের হবে, অন্য জন্মের নয়। কিন্তু এখানে যা প্রাপ্ত হয় তা’ প্রত্যক্ষফল, অর্থাৎ এই সময়েরই ফল। সুতরাং প্রত্যক্ষফল থেকে নিজেকে বঞ্চিত ক’র না, সদা ফল খেয়ে যাও। এই প্রত্যক্ষফল তোমাদের ভালো লাগে, তাই না ! তোমাদের এমন ভাগ্য হবে কখনো ভেবেছিলে ? ভগবানের থেকে ফল প্রাপ্ত হবে তা’ তোমরা স্বপেও ভাবনি ! সুতরাং যে বিষয় তোমাদের ভাবনায় এমনকি স্বপ্নেও নেই, আর তা’ যদি হয়ে যায় তাহলে কতো খুশি হয় ! আজকালকার লটারী অল্পকালের হয়, তবুও লোকে কতো খুশি হয় ! আর এই প্রত্যক্ষফল তথা ভবিষ্যৎ ফল হয়ে যায়। তাহলে। নেশা তো থাকে, তাই না ! কখনো কম কখনো বেশি এমন তো হয় না ? সদা একরস স্থিতিতে উড়ে চলো। সেকেন্ডে উড়তে শিখে গেছ, তাই না ! নাকি বেশি সময় লাগে ? যেইমাত্র সঙ্কল্প করলে আর সাথে সাথে পৌঁছালে – তোমাদের গতি এত ফাস্ট ? আচ্ছা !

ইন্দোর জোনের সবাই তোমরা সন্তুষ্ট তো ? মাতারা, সদা সন্তুষ্ট ? পরিবারের মধ্যে লৌকিক জন দ্বারা কখনো অসন্তুষ্ট তো হও না ? কখনো বিরক্ত হও ? কখনো চঞ্চল বাচ্চার প্রতি অতিষ্ঠ হও ? কখনো

বিরক্ত হ’য়োনা, তোমরা যত বিরক্ত হবে তারা ততই বেশি উত্যক্ত করবে, সেইজন্য ট্রাস্টি হয়ে, সেবাধারী হয়ে সেবা কর। আমিত্বভাব যদি আসে তখনই বিরক্ত হও। ‘আমার বাচ্চা’ আর এ’রকম করছে ! সুতরাং যেখানে আমিত্বের বোধ হয় সেখানে তোমরা বিরক্ত হও আর যদি ‘তোমার-তোমার’ বোধ থাকে তো ভেসে বেড়াও। তাহলে তোমরা ভেসে থাক ! সদা ‘তোমার’ মানে স্বমানে থাকা। ‘আমার-আমার’ বলা মানে অভিমান আসা, ‘তোমার-তোমার’ এই বিশ্বাস মানে নিজ স্বমানে থাকা। সুতরাং সদা স্বমানে থাকে অর্থাৎ ‘তোমার’ বোধে বিশ্বাস – এ’টা স্মৃতিতে রাখ। আচ্ছা !

ডবল ফরেনার্সও হারানিধি, অল্পসংখ্যক আছ। কতো খুশি থাক, তার বর্ণন করতে পার ? বাবা অসীম জগতের তো প্রাপ্তিও অসীম, সেইজন্য সীমিত পরিসরের কোনকিছু গুন্তি করতে পার না। বাপদাদা তো ডবল বিদেশি বাচ্চাদেরকে তীব্র পুরুষার্থীর গতিতে দেখে খুশি হন। ভারতবাসী তো ভারতের ব্যাপারে জানে, কিন্তু এরা না জেনেও এত কাছের তীব্র পুরুষার্থী হয়েছে, চমৎকার তো করেছে, তাই না ! অতএব, তোমরা ডবল লাকি হয়েছ। আর ভারতবাসীর কি নেশা আছে যে আমরাই প্রতি কল্পে অবিনাশী ভারতবাসী হব! অবিনাশী খন্ড ভারত – এই নেশা আছে, আছে না ? তোমাদের সকলের নিজস্ব নেশা আছে। সবাইকে ভারতে আসতে হবে, আর তোমরা ভারতে বসেই আছ। আচ্ছা ! ওম্ শান্তি ।

বরদানঃ-

স্মারকচিহ্নে যোগীর মস্তকে তৃতীয় নেত্র দেখানো হয়। তোমরা প্রকৃত যোগী বাচ্চারাও নিজের মস্তক দ্বারা তৃতীয় নেত্রের সাক্ষাৎকার করানোর জন্য সদা বুদ্ধি দ্বারা এক বাবার সঙ্গে থাক। এক বাবা দ্বিতীয় আমি, তৃতীয় নেই কেউ। যখন এ’রকম স্থিতি হবে, তখন তৃতীয় নেত্রের সাক্ষাৎকার হবে। যদি বুদ্ধিতে তৃতীয় কেউ এসে যায় তাহলে তখন তৃতীয় নেত্র বন্ধ হয়ে যাবে, সে’ জন্য সদাসর্বদা তৃতীয় নেত্র উন্মুক্ত থাকতে দাও – অতএব, স্মরণে রাখ তৃতীয় কেউ নেই।

স্লোগানঃ-

Daily Murlis in Bengali: Brahma Kumaris Murli Today in Bengali

Email me Murli: Receive Daily Murli on your email. Subscribe!

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top