28 November 2021 BENGALI Murli Today – Brahma Kumaris
Read and Listen today’s Gyan Murli in Bengali
November 27, 2021
Morning Murli. Om Shanti. Madhuban.
Brahma Kumaris
আজকের শিব বাবার সাকার মুরলি, বাপদাদা, মাধুবন। Brahma Kumaris (BK) Murli for today in Bengali. This is the Official Murli blog to read and listen daily murlis.
"স্বমান দ্বারাই সম্মান প্রাপ্তি"
আজ বাপদাদা চারিদিকের স্বমানধারী বাচ্চাদের দেখছেন। স্বমানধারী বাচ্চাদেরই সারা কল্প সম্মান হয়। এক জন্ম স্বমানধারী, সারা কল্প সম্মানধারী। নিজের রাজ্যেও রাজ্য-অধিকারী হওয়ার কারণে প্রজা দ্বারা সম্মান প্রাপ্ত হয় আর অর্ধেক কল্প ভক্তের দ্বারা তোমরা সম্মান প্রাপ্ত কর। এখন তোমাদের লাস্ট জন্মেও ভক্তদের দ্বারা দেব আত্মা ও শক্তিরূপের সম্মান দেখছ আর শুনছ। কতো গভীর ভালোবাসার সাথে এখনো সম্মান দিচ্ছে ! এত শ্রেষ্ঠ ভাগ্য তোমরা কীভাবে প্রাপ্ত করেছ ! শুধুমাত্র একটা মুখ্য বিষয়ের ত্যাগের এই ভাগ্য। কী ত্যাগ করেছ ? দেহ-অভিমান ত্যাগ করেছ কেননা দেহ-অভিমানের ত্যাগ ব্যতীত স্বমানে তোমরা স্থিত হতে পার না। এই ত্যাগের রিটার্ণে ভাগ্যবিধাতা ভগবান এই ভাগ্যের বরদান দিয়েছেন। দ্বিতীয় বিষয় – স্বয়ং বাবা তোমরা সব বাচ্চাকে স্বমান দিয়েছেন। বাবা বাচ্চাদের চরণের দাস-দাসী থেকে নিজের মস্তকমুকুট বানিয়েছেন। কতো বড় স্বমান দিয়েছেন ! এ’ রকম স্বমান প্রাপ্তকারী বাচ্চাদের বাবাও সম্মান রাখেন। বাবা বাচ্চাদের সদা নিজের থেকেও সামনে এগিয়ে রাখেন। সদা বাচ্চাদের গুণের গায়ন করেন। প্রতিদিন গভীর ভালোবাসার সাথে স্মরণ-স্নেহ দেওয়ার জন্য পরমধাম থেকে সাকার বতনে আসেন। ওখান থেকে পাঠিয়ে দেন না, বরং এসে দেন। প্রতিদিন তোমাদের স্মরণ-স্নেহ লাভ হয়, তাই না ! এত শ্রেষ্ঠ সম্মান আর কেউ দিতে পারে না। স্বয়ং বাবা সম্মান দিয়েছেন, সেইজন্য অবিনাশী সম্মান-অধিকারী হয়েছ। এমন শ্রেষ্ঠত্বের অনুভব কর তোমরা ? স্বমান আর সম্মান – দুইয়ের মধ্যে সম্বন্ধ আছে।
স্বমানধারী নিজের প্রাপ্ত হওয়া স্বমানে থেকে স্বমানের সম্মানে থাকে, আর অন্যদেরও সম্মানের সাথে দেখে, বলে, বা সম্পর্কে আসে। স্ব-মানের অর্থই হ’ল স্ব-কে সম্মান দেওয়া। যেমন বাবা বিশ্বের সকল আত্মা দ্বারা সম্মান প্রাপ্ত করেন, প্রত্যেকে সম্মান দেন। বাবার যতই সম্মান প্রাপ্ত হয়, বাবাও কিন্তু তোমাদেরকে, সব বাচ্চাকে তেমনই সম্মান দেন। যে দেয় না সে দেবতা হয় না। অনেক জন্ম দেবতা হও আর অনেক জন্ম দেবতা রূপের পূজা হয়। এক জন্ম ব্রাহ্মণ হও কিন্তু অনেক জন্ম দেবতা রূপে রাজ্য কর এবং পূজ্য হও। দেবতা অর্থাৎ যিনি দেন। যদি এই জন্মে সম্মান না দিয়েছ তো দেবতা কীভাবে হবে, অনেক জন্মে সম্মান কীভাবে প্রাপ্ত করবে ? ফলো ফাদার। সাকার রূপে ব্রহ্মাবাবাকে দেখেছ – সদা নিজেকে ওয়ার্ল্ড সার্ভেন্ট (বিশ্ব-সেবাধারী) বলে অভিহিত করেছেন, নিজেকে বাচ্চাদের সার্ভেন্ট বলেছেন আর বাচ্চাদেরকে মালিক বানিয়েছেন। সদা তাদেরকে মালিক হিসেবে সেলাম করেছেন। ছোট বাচ্চাদেরও সদা সস্নেহ সম্মান দিয়েছেন, উদীয়মান বিশ্বকল্যাণকারী রূপে দেখেছেন। কুমারদের কিংবা কুমারীদের, যুবা স্থিতির যারা সদা বিশ্বের খ্যাতনামা মহান আত্মাদের চ্যালেঞ্জ করে, অসম্ভবকে সম্ভব করে, মহাত্মাদের মস্তক অবনত করায় – তাদেরকে পবিত্র আত্মা হিসেবে সম্মানের সাথে দেখেছেন। তারা তাঁর থেকেও চমৎকার করে – এ’ রকম মহান আত্মা মনে করে তিনি সবসময় তাদের সম্মান দিয়েছেন, তাই না ! একইভাবে, অভিজ্ঞ-আত্মাদের (বৃদ্ধ) সদা অনুভাবী আত্মা, হমজিন্স অর্থাৎ সম বয়সীদের সম্মান দিয়েছেন। যারা বন্ধনে আবদ্ধ, স্মরণে নিরন্তর তাদের নম্বর ওয়ান হওয়ার সম্মান দেখিয়েছেন, সেইজন্য তিনি নম্বর ওয়ান অবিনাশী সম্মানের অধিকারী হয়েছেন। রাজত্ব নেওয়ার সম্মানেও তিনি নম্বর ওয়ান – বিশ্ব-মহারাজন আর বাবার পূজার পরে প্রথম পূজ্য লক্ষ্মী-নারায়ণ রূপে তিনি পূজিত হন। সুতরাং রাজ্য সম্মান আর পূজ্য সম্মান – উভয়তেই নম্বর ওয়ান হয়ে গেছেন, কারণ তিনি সবাইকে স্বমান, সম্মান দিয়েছেন। কখনো এমন ভাবেননি যে সম্মান দিলে সম্মান দেব। যারা সম্মান দেয়, তাদেরও যারা নিন্দা করেছে, তিনি সেই নিন্দুককেও নিজের বন্ধু মনে করতেন। যারা সম্মান দেয় শুধু তাদেরই আপন ভাবেননি বরং যারা কুৎসা করেছে তাদেরও আপন মনে করতেন কারণ সমগ্র দুনিয়াই তাঁর নিজের পরিবার। সকল আত্মার কান্ড তোমরা ব্রাহ্মণ। সমস্ত শাখা অর্থাৎ বিভিন্ন ধর্মের আত্মারাও মূল কান্ড থেকে বেরিয়েছে। তাহলে সবাইই তো আপন হ’ল তাই না ! এ’ রকম স্বমানধারী সদা নিজেকে মাস্টার রচয়িতা মনে করে সবার প্রতি সম্মান-দাতা হয়। নিজেকে সদা আদি দেব ব্রহ্মার আদি রত্ন আদি পার্টধারী আত্মা মনে কর ? এত নেশা আছে তোমাদের ? তো সবাই শুনেছ – বাচ্চাদের সম্মান কী, বৃদ্ধদের সম্মান কী, যুবাদের কী ? আদি পিতা আমাকে এ’ রকম সম্মানের সাথে দেখেছেন ! কতো নেশা হবে ! অতএব, সদাই স্মৃতি বজায় রাখ যে আদি আত্মা যে শ্রেষ্ঠ দৃষ্টিতে দেখেছেন, সে’ রকমই শ্রেষ্ঠ স্থিতির সৃষ্টিতে থাকব। এভাবে নিজের কাছে প্রতিজ্ঞা কর। প্রতিজ্ঞা তো সবসময়ই করছ, তাই না ? বোল দ্বারাও প্রতিজ্ঞা কর, মন দ্বারাও কর আর লিখেও কর তারপরে ভুলেও যাও, সেইজন্য প্রতিজ্ঞার লাভ নিতে তোমরা অপারগ হও। যদি স্মরণে রাখ তো তার থেকে লাভও নিতে পার। সবাই নিজেকে চেক কর – কতো বার প্রতিজ্ঞা করেছ আর কতবার পূরণ করেছ ? প্রতিজ্ঞা কীভাবে পূরণ করতে হয় জান নাকি শুধু প্রতিজ্ঞাই করতে জান ?
টিচার্স কী ভাবছে ? যারা প্রতিজ্ঞা পূরণ করে তাদের লিস্টে তোমরা আছ, আছ না ? টিচারদের বাবা সবসময় সাথী শিক্ষক বলেন। সুতরাং সাথীর বিশেষত্ব কী ? সাথী সমান হয়। বাবা কখনো (তাঁর প্রতিজ্ঞা) বদল করেন ? টিচার্সও প্রতিজ্ঞা আর প্রাপ্তি দুইয়ের ব্যালেন্স রাখে। প্রতিজ্ঞা অনেক আর প্রাপ্তি কম হবে – এ’টা ব্যালেন্স হয় না। যে দুইয়েরই ব্যালেন্স রাখে বরদাতা বাবা দ্বারা এই বরদান বা ব্লেসিং প্রাপ্ত হয়, সে সদা দৃঢ় সঙ্কল্প দ্বারা কর্মে সফলতামূর্ত হয়। সাথী শিক্ষকের এটাই বিশেষ কর্ম। সঙ্কল্প আর কর্ম সমান হবে। সঙ্কল্প শ্রেষ্ঠ আর কর্ম সাধারণ হয়ে যায় – একে সমতা বলা হবে না। সুতরাং টিচার্স সদা নিজেদের “সাথী শিক্ষক” অর্থাৎ “শিক্ষক বাবা সমান” মনে করে সেই স্মৃতি বজায় রেখে চলো। টিচারদের সাহসিকতায় বাপদাদা খুশি হন। সাহস রেখে সেবার নিমিত্ত তো হয়ে গেছ, তাই না ! কিন্তু এখন সদা এই স্লোগান স্মরণে রাখ, “সাহসী টিচার সমান শিক্ষক বাবা।” এটা কখনো ভুলো না। তাহলে আপনা থেকেই সমান হওয়ার লক্ষ্য – “বাপদাদা” তোমাদের সামনে থাকবেন অর্থাৎ সাথে থাকবেন। আচ্ছা!
চারিদিকের স্বমানধারী তথা সম্মানধারী বাচ্চাদের বাপদাদা নয়ন সমুখে দেখে সম্মানের দৃষ্টিতে স্মরণ-স্নেহ দিচ্ছেন। সদা রাজ-সম্মান এবং পূজ্য সম্মানের সমান সাথী বাচ্চাদের স্মরণ-স্নেহ আর নমস্কার।
বিহার গ্রুপঃ- সবাই নিজেকে স্বরাজ্য অধিকারী মনে কর ? স্ব-এর রাজ্য প্রাপ্ত হয়েছে নাকি প্রাপ্ত হবে ? স্বরাজ্য অর্থাৎ যখন চাও, যেমন চাও সে’ভাবে কর্মেন্দ্রিয় দ্বারা কর্ম করাতে পার।কর্মেন্দ্রিয়-জিত অর্থাৎ স্বরাজ্য অধিকারী। এ’ রকম অধিকারী হয়েছ নাকি কখনো কখনো কর্মেন্দ্রিয় তোমাদের চালনা করে ? কখনো মন তোমাকে চালনা করে নাকি তুমি মনকে চালনা কর ? মন কখনো ব্যর্থ সঙ্কল্প করে নাকি করে না ? যদি কখনো কখনো করে তো সে’ সময় স্বরাজ্য অধিকারী বলবে ? রাজত্ব অনেক বড় সত্ত্বা ! চাইলে রাজ্য-সত্ত্বা যা করতে চায়, যেভাবে চালাতে চায় সে’ভাবে চালাতে পারে। মন-বুদ্ধি-সংস্কার এগুলো আত্মার শক্তি। এই তিনেরই মালিক আত্মা। যদি সংস্কার কখনো তার নিজের দিকে টানে তাহলে মালিক বলবে ? সুতরাং স্বরাজ্য-সত্ত্বা অর্থাৎ কর্মেন্দ্রিয়-জিৎ। যে কর্মেন্দ্রিয়-জিত কেবলমাত্র সে পারবে বিশ্বের রাজ্য-সত্ত্বা প্রাপ্ত করতে। স্বরাজ্য অধিকারী বিশ্ব-রাজত্বের অধিকারী হয়। তাইতো তোমরা সব ব্রাহ্মণ আত্মার এই স্লোগান – স্বরাজ্য ব্রাহ্মণ জীবনের জন্মসিদ্ধ অধিকার। স্বরাজ্য অধিকারীর স্থিতি সদা মাস্টার সর্বশক্তিমান, কোনও শক্তির অভাব নেই। স্বরাজ্য অধিকারী সদা ধর্ম অর্থাৎ ধারণামূর্তও হবে এবং রাজত্ব অর্থাৎ শক্তিশালীও হবে। রাজত্বে এখন অস্থিরতা কেন ? কারণ ধর্ম-সত্ত্বা এবং রাজ্য-সত্ত্বা আলাদা হয়ে গেছে। সুতরাং খঞ্জ তো হয়ে গেল, তাই না ! এক সত্ত্বা হ’ল না, সেইজন্য অস্থিরতা বিদ্যমান। সে’ রকমই তোমাদের মধ্যেও যদি ধর্ম আর রাজ্য – উভয় সত্ত্বা না থাকে, তাহলে বিঘ্ন আসবে, বিচলিত করবে, যুদ্ধ করতে হবে। আর যদি উভয় সত্ত্বাই থাকে তাহলে সদাই বেপরোয়া বাদশাহ হয়ে থাকবে, কোনো বিঘ্ন আসতে পারবে না। তো, এ’ রকম বাদশাহ হয়েছ ? নাকি একটু-একটু শরীরের, সম্বন্ধের… পরোয়া থাকে ? পাণ্ডবদের উপার্জনের পরোয়া থাকে, পরিবারকে চালানোর পরোয়া থাকে নাকি বেপরোয়া থাক ? যিঁনি চালানোর তিনি চালাচ্ছেন, যিঁনি করানোর তিনি করাচ্ছেন – এ’ভাবে নিমিত্ত হয়ে যারা করে তারা বেপরোয়া বাদশাহ হয়। “আমি করছি” – এই ভাব যদি আসে তো বেপরোয়া থাকতে পার না। কিন্তু বাবা দ্বারা নিমিত্ত হয়ে আছি – এই স্মৃতি যদি থাকে তবে নিরুদ্বিগ্ন এবং নিশ্চিন্ত জীবন অনুভব করবে। কোনো চিন্তা নেই। কাল কী হবে – তারও চিন্তা নেই। কখনো একটু হলেও এই চিন্তা থাকে কি যে কাল কী হবে, কীভাবে হবে ? জানিনা বিনাশ কবে হবে, কী হবে ! বাচ্চাদের কী হবে ! নাতি-পুতিদের কী হবে ! – এই চিন্তা থাকে তোমাদের ? বেপরোয়া বাদশাহ’র সদাই এই নিশ্চয় থাকে যে, যা হচ্ছে তা’ ভালো, আর যা হবে তা’ আরও ভালো হবে, কারণ যিঁনি করাচ্ছেন সর্বোপরি তিনি ভালো, তাই না ! একে বলে, নিশ্চয়বুদ্ধি বিজয়ী। এইরকম হয়েছ নাকি এইরকম হবে ভাবছ ? হতে তো হবেই, তাই না ! এত বড় রাজত্ব যদি প্রাপ্ত হয় তাহলে ভাবনার বিষয় আর কী আছে ? নিজের অধিকার কেউ ছাড়ে ? ঝুপড়িবাসী হলেও সামান্য সম্পত্তি থাকলেও ছেড়ে দেবে না। এতো কতো বড় প্রাপ্তি ! অতএব, আমার অধিকার – এই স্মৃতি দ্বারা সদা অধিকারী হয়ে উড়ে চলো। এই বরদান স্মরণে রাখ, “স্বরাজ্য আমার জন্মসিদ্ধ অধিকার।” পরিশ্রম করে পাওয়া নয়, অধিকার। আচ্ছা ! বিহার মানে সদা বসন্তে থাকে। পাতা ঝরার (উন্নতির হ্রাসের দিকে) মধ্যে যেও না। কখনো প্রবল ঝড়-ঝঞ্ঝা যেন না আসে, সদা বসন্ত। আচ্ছা !
২) অধ্যাত্ম দৃষ্টিতে সৃষ্টিকে পরিবর্তনকারী হিসেবে নিজেকে অনুভব কর ? শুনেছ যে দৃষ্টি দ্বারা সৃষ্টি পরিবর্তন হয়ে যায়, কিন্তু এখন অনুভাবী হয়ে গেছ। অধ্যাত্ম দৃষ্টিতে সৃষ্টি বদলে গেছে, তাই না ! এখন তোমাদের জন্য বাবা সংসার, তাহলে সৃষ্টি তো বদলে গেছে। প্রথমের সৃষ্টি অর্থাৎ প্রথমের সংসার আর এখনের সংসার এর মধ্যে তারতম্য তো হয়ে গেল, তাই না ! প্রথম সংসারে বুদ্ধি এদিকে ওদিকে ঘোরাফেরা করত আর এখন বাবাই সংসার হয়ে গেছে। সুতরাং বুদ্ধির বিভ্রান্তি বন্ধ হয়ে গেছে, তোমরা একাগ্র হয়ে গেছ, কারণ প্রথমের জীবনে কখনো দেহের সম্বন্ধে, কখনো দেহের পদার্থে – অনেক বিষয়ে বুদ্ধি চলে যেত। এখন সে’সব বদলে গেছে। এখন দেহ স্মরণে থাকে নাকি দেহী ? যদি বুদ্ধি কখনো দেহের দিকে যায়, তাহলে তা’ রং বলে মনে কর তো, তাই না ! তারপরে নিজেদের পরিবর্তন করে নাও, দেহের পরিবর্তে নিজেকে দেহী মনে করার অভ্যাস কর। সংসার তো বদল হয়ে গেল, তাই না ! নিজেও বদলে গেছ। বাবাই সংসার নাকি এখনো সংসারে কিছু রয়ে গেছে ? বিনাশী ধন কিংবা বিনাশী সম্বন্ধের দিকে বুদ্ধি যায় না তো ? এখন ‘আমার’ কিছুই নেই। “আমার অনেক ধনসম্পদ আছে” – এমন সঙ্কল্প অথবা স্বপ্নও হবে না, কারণ সবকিছু বাবাকে হস্তান্তর করে দিয়েছ। “আমার”-কে “তোমার” করে নিয়েছ। নাকি ‘আমার’, আমারই আছে আর বাবারটাও আমার, এমন ভাবো না তো ? এই বিনাশী তন, ধন, পুরানো মন, আমার নয় বাবাকে দিয়ে দিয়েছি। প্রথম-প্রথম পরিবর্তন হওয়ার এই সঙ্কল্পই করেছ যে সবকিছু তোমার আর তোমার বলাতেই লাভ। এতে বাবার লাভ নেই, তোমাদের লাভ, কারণ ‘আমার’ বললে তোমরা অবরুদ্ধ হও, ‘তোমার’ বললে পৃথক হও। আমার বলাতে বোঝাবাহী হয়ে যাও আর তোমার বলাতে ডবল লাইট “ট্রাস্টি” হয়ে যাও। তাহলে ভালো কোনটা ? হালকা হওয়া ভালো নাকি ভারী হওয়া ভালো ? আজকালকার দুনিয়ায় কেউ যদি শরীরে ভারী হয় তবুও ভালো লাগে না। সবাই নিজেকে হালকা করার চেষ্টা করে, কারণ ভারী হওয়া মানে লোকসান আর হালকা হওয়াতে লাভ। একইভাবে, ‘আমার-আমার’ বলাতে বুদ্ধিতে বোঝা চেপে যায়, ‘তোমার-তোমার’ বলাতে বুদ্ধি হাল্কা হয়ে যায়। যতক্ষণ না তোমরা হালকা হও ততক্ষণ পর্যন্ত উঁচু স্থিতিতে পৌঁছাতে পার না। উড়তি কলাই আনন্দের অনুভূতি করায়। হালকা থাকাতেই আনন্দ। আচ্ছা !
যখন বাবাকেই খুঁজে পেয়ে গেছ তো মায়া তাঁর সামনে কী ? মায়া তোমাদের কাঁদায় আর বাবা তোমাদের অবিনাশী উত্তরাধিকার দেন, প্রাপ্তি করান। সারা কল্পে এমন প্রাপ্তি করানো বাবাকে কখনো খুঁজে পাবে না। এমনকি, স্বর্গেও পাবে না। সুতরাং এক সেকেন্ডও ভোলা উচিত নয়। সীমিত প্রাপ্তি যে করায় তোমরা তো তাকেও ভুলে যাও না, তাহলে অসীম প্রাপ্তি যিঁনি করান তাঁকে কীভাবে ভুলতে পার ! অতএব, সদা এটাই স্মরণে রাখ যে তোমরা ট্রাস্টি। কখনো নিজের উপরে বোঝা রাখবে না। এ’টা অনুসরণ করলে তোমরা সদা হাসবে, গাইবে, উড়তে থাকবে। জীবনে আর কী চাই ! হাসি, গান আর ওড়া। যখন প্রাপ্তি হবে তখন তো হাসবেই, তাই না ! নয়তো কাঁদবে ! সুতরাং এই বরদান স্মৃতিতে বজায় রাখ, আমরা হাসি, গাই আর উড়ি, সদাই বাবার সংসারে থাক। আর কিছুই নেই যেখানে বুদ্ধি যেতে পারে। স্বপ্নেও কেঁদো না। মায়া যদি কাঁদায় তবুও কাঁদবে না। শুধু চোখের কান্নাই হয় না, মনেরও কান্না হয়। তো মায়া কাঁদায়, বাবা হাসায়। সদা বিহার মানে যারা সদা খুশি থাকে – খুশিতে সুরভিত। আর বাংলা মানে সদা মিষ্টি-মধুর থাকে। বাংলায় মিষ্টি খুব ভালো হয়, তাই না! অনেক ভ্যারাইটি হয়। সুতরাং যেখানে মধুরতা সেখানে পবিত্রতা। পবিত্রতা ব্যতীত মধুরতা আসতে পারে না। তাহলে, তোমরা সদা মধুর থাক আর সদা খুশির সৌরভে থাক। আচ্ছা ! টিচার্সও সৌগন্ধময় খুশি দেখে সদা-বাহারেই থাক, তাই না ! আচ্ছা !
বরদানঃ-
যদি বাবার সমীপে থাকা পছন্দ হয় তাহলে যেকোন সঙ্গদোষ থেকে দূরে থাকো। অনেক রকম আকর্ষণ পেপার রূপে আসবে, কিন্তু আকৃষ্ট হ’য়ো না। সঙ্গদোষ অনেক রকম হয়, ব্যর্থ সঙ্কল্প বা মায়ার আকর্ষণের সংকল্পের সঙ্গ, সম্বন্ধীদের সঙ্গ, বাণীর সঙ্গ, অন্নদোষের সঙ্গ, কর্মের সঙ্গ … এই সব সঙ্গদোষ থেকে যারা নিজেকে রক্ষা করে তারাই পাস উইথ অনার হয়।
স্লোগানঃ-
➤ Daily Murlis in Bengali: Brahma Kumaris Murli Today in Bengali
➤ Email me Murli: Receive Daily Murli on your email. Subscribe!