02 August 2021 BENGALI Murli Today – Brahma Kumaris

Read and Listen today’s Gyan Murli in Bengali

August 1, 2021

Morning Murli. Om Shanti. Madhuban.

Brahma Kumaris

আজকের শিব বাবার সাকার মুরলি, বাপদাদা, মাধুবন। Brahma Kumaris (BK) Murli for today in Bengali. This is the Official Murli blog to read and listen daily murlis.

"মিষ্টি বাচ্চারা -- যেমন বাবা অপকারীদের উপরেও উপকার করেন, তেমনভাবে তোমরাও ফলো ফাদার করো, সুখদায়ী হও, এই দেহকে ভুলে যেতে থাকো"

প্রশ্নঃ --

দেহী-অভিমানী হয়ে থাকা বাচ্চাদের প্রতীক কি হবে ?*

উত্তরঃ -:-

১) তাদের পরস্পরের মধ্যে আত্মিক প্রেম অতিমাত্রায় থাকবে। ২) তারা কখনও একে-অপরের খামতি (কমজোরী) বর্ণনা করবে না। ৩) তারা অত্যন্ত সুখদায়ী হবে। ৪) তাদের খুশী কখনও অদৃশ্য হয়ে যাবে না। সর্বদা অপার খুশীতে থাকবে। ৫) কখনও মত-পার্থক্য হবে না। ৬) আমরা আত্মারা হলাম ভাই-ভাই, এই স্মৃতির দ্বারা গুণগ্রাহী হবে, তারা সকলের গুণই দেখবে। তারা স্বয়ং গুণবান হবে আর অন্যান্যদেরও গুণবান করে গড়ে তুলবে। ৭) তাদের অদ্বিতীয় পিতা ব্যতীত আর কারোর স্মরণ আসবে না।

ওম্ শান্তি । বাচ্চারা, অসীম জগতের সর্বোচ্চ পিতার সম্মুখে তোমরা সকলে বসে রয়েছো। তোমরা কত ভাগ্যশালী যে এরকম বাবাকে পেয়েছো। তোমরা জ্ঞান-সাগর বাবার কাছে এসেছো জ্ঞান-রত্ন দ্বারা ঝুলি ভরপুর করতে, উপার্জন করতে। মিষ্টি মিষ্টি বাচ্চারা, বাবা তোমাদের কত উঁচুতে নিয়ে যান। বাচ্চারা, বাবা কেবল তোমাদেরই দেখেন, ওঁনাকে তো কাউকে স্মরণ করতে হবে না, এঁনার(ব্রহ্মা) আত্মাকে তো বাবাকে স্মরণ করতে হবে। বাবা বলেন — বাচ্চারা, আমরা দু’জনেই তোমাদের দেখি। আত্মারূপী আমায় তো সাক্ষী হয়ে দেখতে হয় না, কিন্তু বাবার সঙ্গ’তে আমিও এ’ভাবে দেখি। বাবার সঙ্গে তো থাকি, তাই না! ওঁনার সন্তান তাই সাথেই দেখে থাকি। আমি বিশ্বের মালিক হয়ে ঘুরে বেড়াই। যেন আমিই এ’টা করছি। আমি দৃষ্টিদান করি। দেহ-সহ সবকিছু ভুলে যেতে হবে। কেবল বাবা আর বাচ্চা যেন এক হয়ে যায়। সেইজন্য বাবা বোঝান যে — মিষ্টি বাচ্চারা, প্রচুর পুরুষার্থ করো। যেমন বাবা অপকারীদের উপরেও উপকার করেন সেইরকম তোমরাও ফলো ফাদার করো, সুখদায়ী হও। পরস্পরের সঙ্গে কখনও লড়াই-ঝগড়া কোরো না। নিজেকে আত্মা মনে করে দেহকে ভুলতে থাকো। কেবলমাত্র অদ্বিতীয় পিতা ব্যতীত আর কেউ যেন স্মরণে না আসে। এও যেন জীবিত থেকেও মৃতবৎ অবস্থা। এই দুনিয়ার থেকে যেন মারা গেছে। বলাও হয় যে — তোমার মৃত্যুর সঙ্গে-সঙ্গেই এই দুনিয়াও তোমার কাছে মৃত হয়ে গেছে। এখানে তোমাদের জীবিত থেকেও মৃতবৎ হতে হবে। শরীরের অভিমানকে উড়িয়ে দিতে থাকো। একান্তে বসে অভ্যাস করতে থাকো। ভোরবেলায় একান্তে বসে নিজের সঙ্গে কথা বলো। অত্যন্ত উৎসাহ-উদ্দীপনার সঙ্গে বাবাকে স্মরণ করো। ব্যস্, বাবা এখন আমরা তোমার কোলে এলাম বলে। ব্যস্, একের স্মরণেই যেন শরীর ত্যাগ হয় — একেই বলা হয় একের অন্তে থাকা (একান্ত)। বাবাকে স্মরণ করতে-করতেই এই শরীর-রূপী চামড়া সরে যাবে। তোমরা জানো যে এই পুরোনো দুনিয়া, পুরোনো দেহ সমাপ্ত হয়ে যাবে। এছাড়া পুরুষার্থের জন্য তো সঙ্গমের অল্পসময়ই বর্তমান রয়েছে। বাচ্চারা জিজ্ঞাসা করে — বাবা এই পড়াশোনা আর কতদিন চলবে ? বাবা বলেন — যতদিন না দৈবী-রাজধানী স্থাপিত হচ্ছে ততদিন পর্যন্ত শোনাতে থাকবো, তারপর ট্রান্সফার হয়ে যাবে নতুন দুনিয়ায়। এ হলো পুরোনো শরীর, কিছু না কিছু কর্মভোগ তো চলতেই থাকে, এতেও বাবা সহায়তা করবে — এইরকম আশা রাখা উচিত নয়। দেউলিয়া হয়ে গেলে, অসুস্থ হয়ে পড়লে — বাবা বলবেন যে এ হলো তোমাদের হিসেব-নিকেশ। হ্যাঁ, তবুও যোগের দ্বারা আয়ু বৃদ্ধি পাবে। নিজে পরিশ্রম করো, দয়াভিক্ষা কোরো না। বাবাকে যত স্মরণ করবে তাতেই কল্যাণ হবে, যতখানি সম্ভব যোগবলের দ্বারা কর্ম করো। ভক্তিমার্গে গাওয়া হয়, আমায় পলকে লুকিয়ে রেখো…. প্রিয় বস্তুকে নূর-এ-রতন(রত্ন-জ্যোতি), প্রাণপ্রিয় বলা হয়। বাবা হলেন অতি প্রিয়, কিন্তু গুপ্ত। ওঁনার প্রতি এমন ভালবাসা থাকা উচিত যে সে’কথা আর জিজ্ঞাসা কোরো না। বাচ্চাদের বাবা নিজের পলকে লুকিয়েই রাখেন। এই পলক কোনো চক্ষু নয়, এ হলো বুদ্ধির কথা। অতি প্রিয় নিরাকার বাবা আমাদের পড়াচ্ছেন। তিনি হলেন জ্ঞানের সাগর, সুখের সাগর, প্রেমের সাগর। এইরকম প্রিয়তম বাবার সাথে কতখানি প্রেম থাকা উচিত! তিনি বাচ্চাদের জন্য কত নিষ্কাম সেবা করেন। বাচ্চারা, তোমাদের তিনি হীরে-তুল্য করে দেন। বাবা কত মিষ্টি। বাচ্চারা, বাবা কত নিরহংকারী হয়ে তোমাদের সেবা করেন, সেইজন্য বাচ্চারা তোমাদেরও এতখানি প্রেম-পূর্বকই সেবা করা উচিত। শ্রীমতে চলা উচিত। কোথাও নিজের মত দেখালে (প্রয়োগ করলে) তখন ভাগ্যে দাগ পড়ে যাবে। বাচ্চারা, তোমাদের পরস্পরের মধ্যে অতীব আত্মিক ভালবাসা থাকা উচিত, কিন্তু দেহ-অভিমান আসার কারণে পরস্পরের প্রতি সেই প্রেম থাকে না। একে-অপরের দুর্বলতা খুঁজে বের করতে থাকে, অমুকে এ’রকম, ও এইরকম করে…. তোমরা যখন দেহী-অভিমানী ছিলে তখন কারোর খামতি খুঁজে বের করতে না। পরস্পরের মধ্যে অত্যন্ত ভালবাসা ছিল, এখন পুনরায় সেই অবস্থাই ধারণ করতে হবে। প্রথমে তোমরা কত মিষ্টি ছিলে পুনরায় সেইরকম মিষ্টি, সুখদায়ী হও। দেহ-অভিমানে এসে দুঃখদায়ী হয়েছো, তোমাদের আত্মিক খুশী উধাও হয়ে গেছে। জীবনও ছোট হয়ে গেছে। এখন বাবা পুনরায় এসেছেন তোমাদের সতোপ্রধান করে সদা সুখদায়ী করে গড়ে তুলতে। তোমরা যত বাবাকে স্মরণ করতে থাকবে তত ঘাটতি নিষ্কাশিত হয়ে যেতে থাকবে। মতভেদ সমাপ্ত হয়ে যাবে। এ’কথা যেন পাকাপাকিভাবে স্মরণে থাকে যে, আমরা হলাম ভাই-ভাই। আত্মা ভাই-ভাইকে দেখলে সর্বদা গুণই দেখতে পাবে। সকলকে গুণবান করার প্রচেষ্টা করো। অবগুণ পরিত্যাগ করে গুণগুলিকে ধারণ করো। কখনও কারোর গ্লানি কোরো না। কারো-কারোর মধ্যে এমন দুর্বলতা আছে যে সে নিজেও তা বুঝতে পারে না, সে তো নিজেকে অত্যন্ত ভাল মনে করে, কিন্তু খামতি থাকার কারণে কোথাও না কোথাও উল্টোপাল্টা কথা বেরিয়ে যায়। সতোপ্রধান অবস্থায় এইরকম কথা বলা যায় না। নিজেই নিজেকে দেখো যে, আমরা কতখানি মধুর হতে পেরেছি ? বাবার সঙ্গে আমাদের ভালবাসা কতখানি ? বাবার সঙ্গে ভালবাসা যেন এমন হয় যে একদম দৃঢ়ভাবে আটকে থাকে। বাবা তুমি আমাদের কত উচ্চ বোধ-বুদ্ধিসম্পন্ন করে তোলো, স্বর্গের মালিক করে দাও। এইরকমভাবে অন্তরে বাবার মহিমা করতে-করতে আপ্লুত (গদগদ) হয়ে যাওয়া উচিত। আত্মিক খুশীতে থাকা উচিত। গায়নও আছে, খুশীর মতন পুষ্টিকর পথ্য (খোরাক) নেই। বাবার সঙ্গে মিলনের জন্যও কত খুশীতে থাকা উচিত। বাচ্চারা, সঙ্গমেই তোমরা ২১ জন্মের জন্য সর্বদা খুশীতে থাকার পুষ্টিকর পথ্য (খোরাক) পেয়ে যাও, তখন আর কারো কোনো বিষয়ে চিন্তা থাকে না। এখন তো কত চিন্তা, সেইজন্য তার প্রভাব শরীরের মধ্যেও পড়ে। তোমাদের তো কোনো বিষয়েই চিন্তা নেই। এই খুশীর খোরাক তোমরা একে-অপরকে খাওয়াতে থাকো। এইরকমভাবে একে-অপরকে প্রচুর আদর-আপ্যায়ন করতে হবে। এইরকম আদর-আপ্যায়ন তো মানুষ মানুষকে করতে পারে না। তোমরা বাবার শ্রীমত অনুযায়ী আদর-আপ্যায়ন করো। কুশল-সংবাদও এই যে — কাউকে বাবার পরিচয় দেওয়া। এ হলো জ্ঞান আর যোগের ফার্স্টক্লাস ওয়ান্ডারফুল ওষুধ। এই ওষুধ একমাত্র আধ্যাত্মিক সার্জেনের দ্বারাই প্রাপ্ত হয়।

মন্মনাভব, মধ্যাজীভব — ব্যস্, দুটি শব্দই হলো এর ওষুধ। অতি প্রিয় বাবার থেকে বিশ্বের রাজত্ব প্রাপ্ত হয়, এ কি কোনো সামান্য কথা ! এই দুটি শব্দই বিখ্যাত। এই দুটি কথার দ্বারা তোমরা এভার-হেল্দী, এভার-ওয়েল্দী হয়ে যাও। বাচ্চারা, তোমাদের এ’সকল কথা স্মরণ করে প্রফুল্লিত থাকা উচিত। গডলী স্টুডেন্ট লাইফ ইজ দ্য বেস্ট — এই গায়নও এখনকার। যতখানি সম্ভব একে-অপরকে এই আধ্যাত্মিক ওষুধ পৌঁছে দাও, একে-অপরের উন্নতিসাধন করো, সময় নষ্ট কোরো না। অত্যন্ত ধৈর্য সহকারে, গম্ভীরতার সঙ্গে (গভীরভাবে), বোধবুদ্ধি দ্বারা বাবাকে স্মরণ করো, নিজের জীবনকে হীরেতুল্য করো। মিষ্টি বাচ্চারা, বাবার থেকে যে শ্রীমত পাও তাতে গাফিলতি করা উচিৎ নয়। বাবার সমাচার সকলের কাছে পৌঁছে দিতে হবে। বাবার মেসেজ তো সকলকে পেতে হবে, তাই না! মেসেজ অতি সহজ — কেবল বলো যে নিজেকে আত্মা মনে করে বাবাকে স্মরণ করো আর কর্মেন্দ্রিয়ের দ্বারা মন-বাণী-কর্মে কোনো রকমের খারাপ কর্ম কোরো না। একদিন তোমাদের এই সাইলেন্সের শক্তির আওয়াজ ছড়িয়ে পড়বে। দিনে-দিনে তোমাদের উন্নতি হতে থাকবে। তোমাদের নামের মাহাত্ম্য প্রচারিত হবে। সকলেই বুঝবে যে, এই সংস্থা ভালো। ভালো কাজ করছে, অতি সহজ মার্গ বলে। ব্রাহ্মণদের এই বৃক্ষের বৃদ্ধি অতিমাত্রায় হতেই থাকবে, প্রজা তৈরী হতে থাকবে। সেন্টারের বৃদ্ধিও হবে অধিকমাত্রায়। গ্রামে-গ্রামে তোমাদের প্রদর্শনীও হবে। বাচ্চারা, তোমাদের বড়-বড় ধরণের সার্ভিস করতে হবে। তোমাদের নতুন-নতুন সেন্টারস্ খুলতে থাকবে, যেখানে অনেক মানুষ এসে নিজেদের জীবনকে হীরে-তুল্য করে নিতে থাকবে। তোমাদেরকে অতি প্রেম-পূর্বক এক-একজনের পরিচর্যা করতে হবে। কোথাও যেন কোনো দুঃখী (বেচারা) পা পিছলে না যায়। যত অধিক সেন্টার হবে ততই অধিক সংখ্যক এসে জীবন লাভ করবে। বাচ্চারা, যখন তোমাদের প্রভাব ছড়িয়ে পড়বে তখন অনেকেই ডাকবে যে, এখানে এসে আমাদের মানুষ থেকে দেবতায় পরিণত হওয়ার রাজযোগ শেখাও। ভবিষ্যতে অনেক জাঁকজমকভাবে ছড়িয়ে পড়বে যে সেই ভগবান এসে আবুতে পদার্পণ করেছেন। বাচ্চারা, তোমরা দেখছো যে এইসময় পুরোনো দুনিয়ায় অনেক ইন্টারন্যাশনাল পার্ট (অনেক দেশ-বিদেশের ভূমিকা) রয়েছে। এখন এ’সকল পার্ট সমাপ্ত হয়ে যাবে, এর জন্য তোমাদের কোনো দুশ্চিন্তা করতে হবে না। তোমরা সকলকে শোনাও যে এরজন্য পরোয়া কোরো না, এখন এই পুরোনো দুনিয়া গেল কি গেল অর্থাৎ সমাপ্ত হলো বলে, এর প্রতি মোহ রেখো না, যদি মোহ থাকে, হৃদয় বিশুদ্ধ হবে না। তখন অপার খুশীও থাকবে না। বাচ্চারা অগাধ জ্ঞান-ধনের ভান্ডার প্রাপ্ত করতে থাকে তবে তো অপার খুশী থাকা উচিত। হৃদয় যত বিশুদ্ধ হবে ততই অন্যদেরকেও পরিশোধন করতে পারবে। যোগের স্থিতির দ্বারাই হৃদয় বিশুদ্ধ হয়। বাচ্চারা, তোমাদের যোগী হওয়া এবং তৈরী করারও শখ থাকা উচিত। যদি দেহের প্রতি মোহ থাকে, দেহ-অভিমান থাকে তবে বুঝে নাও যে আমাদের অবস্থা এখনও অনেক কাঁচা রয়েছে। দেহী-অভিমানী বাচ্চারাই খাঁটি হীরায় পরিণত হয়, সেইজন্য যতখানি সম্ভব দেহী-অভিমানী হয়ে থাকার অভ্যাস করো। আচ্ছা!

মিষ্টি-মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত। আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মা-রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।

ধারণার জন্যে মুখ্য সারঃ-

১ ) বাবার সমান নিরহংকারী হয়ে অতি প্রেম-পূর্বক সকলের সেবা করতে হবে। শ্রীমতানুসারে চলতে হবে। আপন মতে চলে সৌভাগ্যের উপর রেখাপাত ক’রো না।

২ ) সঙ্গমে বাবার দ্বারা খুশীর যে পুষ্টিকর আহার পেয়েছো, সেই পথ্যই খেতে হবে আর খাওয়াতে হবে। নিজের সময়কে নষ্ট ক’রো না। অতি ধৈর্য-সহকারে, গম্ভীরতার সঙ্গে, বোধবুদ্ধির দ্বারা বাবাকে স্মরণ করে নিজের জীবনকে হীরেতুল্য করে গড়ে নিতে হবে।

বরদানঃ-

সেবাধারী সেবায় সফলতার অনুভব তখনই করতে পারে যখন “আমিত্বভাব” বিসর্জিত হয়। আমি সেবা করছি, আমি সেবা করেছি — এই সেবা ভাবের বিসর্জন। আমি করিনি বরং আমি করণহার, করাবনহার বাবা অর্থাৎ আমি করি, করান বাবা। “আমিত্বভাব” বাবার স্নেহ-প্রেমে বিলীন হয়ে যাক — একেই বলা হয় সেবায় সদা বিভোর হয়ে থাকা ত্যাগ-মূর্তি, সত্যিকারের সেবাধারী। যিনি করান তিনিই করাচ্ছেন, আমি নিমিত্তমাত্র। সেবায় “আমিত্বভাব” মিশ্রিত হওয়া অর্থাৎ নির্ভরশীল হয়ে পড়া। সত্যিকারের সেবাধারীর এইরকম সংস্কার কখনো হতে পারে না।

স্লোগানঃ-

*মাতেশ্বরীজী-র অমূল্য মহাবাক্য : “জীবনের আশা পরিপূর্ণ হওয়ার আনন্দঘন সময়”*

আমাদের সকল আত্মাদেরই বহুকাল ধরে এই আশা ছিল যে জীবনে সর্বদা যেন সুখ-শান্তি লাভ হয়, এখন অনেক জন্মের আশা কখনও তো পূর্ণ হবে! এখন এ’ হলো আমাদের অন্তিম জন্ম, সেই অন্তিম জন্মেরও অন্তিমক্ষণ আছে। এমন যেন কেউ না ভাবে যে আমি তো এখন ছোট, ছোট-বড় সকলেরই সুখ চাই, তাই না! কিন্তু দুঃখ কোন্ বস্তুর থেকে প্রাপ্ত হয়, প্রথমে তার জ্ঞানও চাই। এখন তোমরা জ্ঞান পেয়েছো যে এই পাঁচবিকারে আটকে পড়ার কারণে এই যে কর্মবন্ধন তৈরী হয়েছে তাকে পরমাত্মার স্মরণের অগ্নির মাধ্যমে ভস্ম করতে হবে, এ হলো কর্মবন্ধন থেকে মুক্ত হওয়ার সহজ উপায়। সর্বশক্তিমান এই বাবাকে চলতে-ফিরতে, প্রতিটি শ্বাস-প্রশ্বাসে স্মরণ করতে হবে। এখন এই উপায় বলে দেওয়ার সহায়তাও স্বয়ং পরমাত্মা এসে করে থাকেন, কিন্তু এখানেও পুরুষার্থ তো প্রত্যেক আত্মাকেই করতে হবে। পরমাত্মা বাবা, শিক্ষক, গুরু-রূপে এসে আমাদের উত্তরাধিকার প্রদান করেন। সেইজন্য প্রথমে বাবার হয়ে যেতে হবে অর্থাৎ নিজেকে সমর্পণ করতে হবে, তারপর শিক্ষকের কাছে পড়াশোনা করতে হবে যে পড়ার মাধ্যমে ভবিষ্যতে জন্ম-জন্মান্তরের জন্য সুখের প্রালব্ধ (ফল প্রাপ্ত) তৈরী হবে অর্থাৎ পুরুষার্থের অনুক্রমে জীবনমুক্তিতে পদমর্যাদা প্রাপ্ত হয়। আর গুরু-রূপে পবিত্র করে মুক্তিদান করেন। সেইজন্য এই রহস্যকে বুঝে তেমনভাবে পুরুষার্থ করতে হবে। এ’টাই সময় পুরোনো খাতা সমাপ্ত করে নতুন জীবন তৈরী করার, এইসময় যতখানি পুরুষার্থ করে নিজের আত্মাকে পবিত্র করবে ততই শুদ্ধ শ্রদ্ধা অর্থাৎ সম্মানে ভরপুর হবে, তারপর তা সমগ্র কল্প ধরে চলবে। তাহলে সমগ্র কল্পের ভিত বা আধার হলো এইসময়ের উপার্জনের উপর। দেখো, এইসময়েই তোমরা আদি-মধ্য-অন্তের জ্ঞান পাও, আমাদের সেই দেবতা হতে হবে আর এখন আমাদের উত্তরণ-কলা তারপর ওখানে গিয়ে ফলভোগ করবো। ওখানে দেবতারা ভবিষ্যতের কথা জানতে পারে না যে আমাদের অধঃপতন হবে, যদি এ’কথা জেনে যায় যে সুখভোগ করার পর আবার পতন হবে তখন পতনের চিন্তায় সুখভোগ করতে পারবে না। সেইজন্য এইরকম ঈশ্বরীয় নিয়ম রচিত হয়েছে যে মানুষ সর্বদা উত্তরণ-কলার জন্য পুরুষার্থ করে অর্থাৎ সুখের জন্য উপার্জন করে। কিন্তু ড্রামায় আধা-আধা পার্ট তৈরী করা হয়েছে, যে রহস্যকে আমরা জানি, কারণ যেসময় সুখপ্রাপ্তির সময় তখন পুরুষার্থ করে সুখ প্রাপ্ত করতে হবে, এ’টাই হলো পুরুষার্থের মাহাত্ম্য। অভিনেতার কাজ হলো অভিনয় করার সময় সম্পূর্ণ দক্ষতার সঙ্গে নিজের ভূমিকা পালন করা, ফলস্বরূপ যারা দেখে তারা যেন ‘বাঃ বাঃ’ করে সেইজন্য হিরো-হিরোইনের ভূমিকা(পার্ট) দেবী-দেবতারা পেয়েছে, যাঁদের স্মারক-চিত্রের গায়ন এবং পূজন হয়। নির্বিকারী প্রবৃত্তিতে (মার্গে) থেকে কমলপুষ্প-সম স্থিতি তৈরী করা, এ’টাই হলো দেবতাদের মাহাত্ম্য(মহানতা)। এই মাহাত্ম্য ভুলেই ভারতের এই দুর্দশা হয়েছে, এখন পুনরায় এমন জীবনশৈলী গঠনকারী পরমাত্মা স্বয়ং এসেছেন, এখন ওঁনার হাত ধরলেই জীবন তরী পার হয়ে যাবে। আচ্ছা — ওম্ শান্তি।

Daily Murlis in Bengali: Brahma Kumaris Murli Today in Bengali

Email me Murli: Receive Daily Murli on your email. Subscribe!

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top