01 August 2021 BENGALI Murli Today – Brahma Kumaris

Read and Listen today’s Gyan Murli in Bengali

July 31, 2021

Morning Murli. Om Shanti. Madhuban.

Brahma Kumaris

আজকের শিব বাবার সাকার মুরলি, বাপদাদা, মাধুবন। Brahma Kumaris (BK) Murli for today in Bengali. This is the Official Murli blog to read and listen daily murlis.

"বরদাতার থেকে প্রাপ্ত হওয়া বরদান গুলিকে বুদ্ধিতে নিয়ে আসার বিধি"

আজ বাপদাদা তাঁর আত্মিক চাতক বাচ্চাদেরকে দেখছেন । প্রতিটি বাচ্চা বাবার থেকে শোনার, বাবার সাথে মিলনের আর সাথে সাথে বাবার সমান হওয়ার চাতক । শোনার ফলে জন্ম জন্মান্তরের তৃষ্ণা দূর হয়। জ্ঞান – অমৃত পিপাসু আত্মাদেরকে তৃপ্ত আত্মা বানিয়ে দেয় । শুনতে শুনতে আত্মারাও বাবা সম জ্ঞান স্বরূপ হয়ে যায় অথবা এও বলা যায় জ্ঞান মুরলী শুনতে শুনতে নিজেও ‘মুরলীধর বাচ্চা’ হয়ে ওঠে। রুহানী মিলনে মিলিত হয়ে বাবার স্নেহে সমায়িত হয়ে যায় । মিলিত হয়ে লভলীন, মগ্ন স্থিতির হয়ে যায় । মিলিত হয়ে এক বাবা দ্বিতীয় কেউ নয় – এই অনুভূতিতে সমায়িত হয়ে থাকে । মিলিত হয়ে নির্বিঘ্ন, সদা বাবার সঙ্গের রঙে লাল হয়ে যায়। যখন এমন সমায়িত হয়ে থাকা বা স্নেহে লভলীন হয়ে যায়, তখন কী আশা থাকে ? ‘বাবা – সম’ হওয়ার । বাবার প্রতিটি কদমে কদম রাখা অর্থাৎ বাবার সমান হওয়া। যেমন বাবা সদা সর্বশক্তিমান স্বরূপ, এমন বাচ্চারাও সদা মাস্টার সর্বশক্তিমানের স্বরূপ হয়ে যায় । যেটা হল বাবার স্বরূপ – সদা শক্তিশালী, সদা লাইট – এমন সমান হয়ে যায়।

সমান হওয়ার বিশেষ বিষয় গুলিকে তোমরা জানো, তাই না, কোন্ কোন্ বিষয়ে বাবার সমান হতে হবে ? তোমরা তৈরী হচ্ছো এবং হচ্ছোও। যেমন বাবার নাম, বাচ্চাদেরও সেই একই নাম – বিশ্ব-কল্যাণকারী। এই নামই তো তোমাদের সকলের, তাই না ? যেটা বাবার রূপ সেটাই বাচ্চাদের রূপ, যা বাবার গুণ, বাচ্চাদেরও সেই একই গুণ। বাবার প্রতিটি গুণকে যারা ধারণ করে তারাই বাবার সমান হয়। যেটা বাবার কার্য, সেটাই বাচ্চাদের কার্য। সব বিষয়ে বাবার সমান হতে হবে। লক্ষ্য তো সবার সেটাই, তাই না ? কেবল সম্মুখে থাকা নয়, বরং সমান হয়ে ওঠা । একেই বলা হয় – ফলো ফাদার করা। সুতরাং নিজেকে চেক করো – সব বিষয়ে কতদূর বাবার সমান হয়েছ ? সমান হওয়ার বরদান বাবা প্রথম থেকেই বাচ্চাদেরকে দিয়েছেন। আদি সময়ের বরদান – “সকল শক্তিতে সম্পন্ন হও।” লৌকিক জীবনে বাবা কিম্বা গুরু বরদান দেন “ধনবান ভব”, “পুত্রবান ভব”, “দীর্ঘায়ু হও” বা “সুখী হও”। বাপদাদা কী বরদান দিয়েছেন ? “সদা জ্ঞান – ধন, শক্তি গুলির ধনে সম্পন্ন ভব”। এটাই হল ব্রাহ্মণ জীবনের সম্পদ (খাজানা) ।

যখন থেকে তোমরা ব্রাহ্মণ জন্ম নিয়েছ, তখন থেকে সঙ্গমযুগের স্থাপনার কার্যে শেষ পর্যন্ত বাঁচা অর্থাৎ “দীর্ঘায়ু ভব”। মাঝে যদি ব্রাহ্মণ জীবন থেকে বেরিয়ে পুরানো সংস্কার গুলি বা পুরনো সংসারে চলে যায়, তবে তাকে বলা হয় – জন্ম নিয়েছে কিন্তু ক্ষণজন্মা (স্বল্পায়ু), অর্থাৎ ব্রাহ্মণ জীবন থেকে মৃত হয়ে গেলে। কেউ কেউ এমনও হয় যে কোমায় চলে যায়, থেকেও না থাকারই সমান এবং কখনো কখনো যদি জেগেও ওঠে কিন্তু সেই বেঁচে ওঠাও মরণেরই সমান। অতএব “দীর্ঘায়ু ভব” অর্থাৎ সদা আদি থেকে অন্ত পর্যন্ত ব্রাহ্মণ জীবন বা শ্রেষ্ঠ দিব্য জীবনের সর্ব প্রাপ্তি গুলির মধ্যে বেঁচে থাকা। দীর্ঘ আয়ুর সাথে সাথে “নিরোগী ভব”রও বরদান আবশ্যক । আয়ু দীর্ঘ অথচ মায়ার ব্যাধি বারেবারে দুর্বল বানিয়ে দেয়, তবে সেই বেঁচে থাকা কোনো বেঁচে থাকা নয়। সুতরাং “দীর্ঘায়ু ভব” র সাথে সদা স্বাস্থ্যবান থাকা অর্থাৎ নির্বিঘ্ন থাকা। বার বার বিভ্রান্তিতে বা হতাশার স্থিতির শয্যায় শয্যাশায়ী হয়ে যাওয়া। অসুস্থ হলে তো শয্যাশায়ীই হতে হয়, তাই না ! ছোট ছোট ঝামেলাকে তো তোমরা চলতে ফিরতে মিটিয়ে ফেলতে পারো কিন্তু যখন কোনো বড় সমস্যা এসে যায়, ঝামেলা বা বিভ্রান্তিতে এসে যায়, হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়ে, তাহলে তখন মনের অবস্থা কী দাঁড়াবে ? যেমন শরীর যখন শয্যাশায়ী হয়ে যায়, তখন বিছানা থেকে উঠতে, হাটাচলা করতে বা খাবার দাবার খাওয়ার ইচ্ছাই হয় না। ঠিক সেরকমই এখানেও যোগে বসলেও বসার ইচ্ছা হবে না, মুরলী শুনলে শোনার ইচ্ছা থাকবে না। সেবাও মন থেকে করবে না, দেখানোর জন্য কিম্বা ভয়ে করবে, চক্ষু লজ্জার কারণে করবে। একে সদা সুস্বাস্থ্যবান জীবন বলা যাবে না। তো “দীর্ঘ আয়ু ভব” অর্থাৎ “নিরোগী ভব” একেই বলা হয়ে থাকে।

পুত্রবান ভব” বা” সন্তান ভব” । তোমাদের সন্তান আছে ? দু’চারটি বাচ্চার জন্ম দাওনি ? “সন্তান ভব”র বরদান আছে না ? দু’ চারটি বাচ্চার বরদান নয়, যখন বাবার সমান মাস্টার রচয়িতার স্থিতিতে স্থিত হবে তখন এই সবই নিজেরই রচনা মনে হবে। বেহদের মাস্টার রচয়িতা হওয়া, এটাই হল বেহদের “পুত্রবান ভব”, “সন্তান ভব” হয়ে যাওয়া । সীমিত হিসেবে নয় যে, কেবল দুই চারজন জিজ্ঞাসুকে আমি তৈরী করলাম, তা নয়। মাস্টার রচয়িতার স্টেজ হল বেহদের স্টেজ । যে কোনো আত্মাকে বা প্রকৃতির তত্ত্বকেও নিজের রচনা মনে করে বিশ্ব-কল্যাণকারী স্থিতির দ্বারা প্রত্যেকের প্রতি কল্যাণের শুভ ভাবনা, শুভ কামনা তখন থাকে। রচয়িতার রচনার প্রতি এই ভাবনাই থাকে। যখন বেহদের মাস্টার রচয়িতা হয়ে যাও, তখন সীমিত কোনো কিছুর আকর্ষণ আর আকৃষ্ট করতে পারে না। সর্বদা নিজেকে কোথায় দাঁড়িয়ে আছো দেখবে ? যেমন বৃক্ষের রচয়িতা হল ‘বীজ’, বৃক্ষের যখন অন্তিম স্টেজ এসে যায়, তখন সেই বীজ উপরে এসে যায় না ? তেমনই বেহদের মাস্টার রচয়িতা সদা নিজেকে এই কল্প বৃক্ষের উপরে উপস্থিত বলে অনুভব করবে, বাবার সাথে সাথে বৃক্ষের উপরে মাস্টার বীজরূপ হয়ে শক্তি গুলির, গুণ গুলির, শুভ ভাবনা – শুভ কামনার, স্নেহের, সহযোগের কিরণ ছড়িয়ে দেবে। যেমন সূর্য অনেক উঁচুতে থাকে, তাই সমগ্র বিশ্বে স্বতঃতই তার কিরণ ছড়িয়ে পড়তে পারে। এই রকমই মাস্টার রচয়িতা বা মাস্টার বীজরূপ হয়ে সমগ্র বৃক্ষকে কিরণ বা জল দিতে পার কি তোমরা ? তাহলে কতগুলো সন্তান হল তোমাদের ? সমগ্র বিশ্ব তোমাদের রচনা হয়ে গেল, তাই না ? অতএব “মাস্টার রচয়িতা ভব” । একে বলা হয় – বাবার সমান হওয়া। জন্মের সাথে সাথে এই সব বরদান প্রতিটি ব্রাহ্মণ আত্মাকে বাবা দিয়ে দিয়েছেন। বরদান পেয়েছ তো ? নাকি এখন প্রাপ্ত করবে ?

যখন কারো কোনো বরদান প্রাপ্ত হয়, তো বরদানের সাথে সাথে বরদানকে কার্যে পরিণত করবার বিধিও বলে দেওয়া হয়। যদি সেই বিধি গ্রহণ না করা হয়, তবে সেই বরদানের লাভ গ্রহণ করতে পারবে না। তো বরদান তো সকলের প্রাপ্ত হয়েছে, প্রতিটি বরদানকে বিধির দ্বারা বৃদ্ধি প্রাপ্ত করতে পারবে । কীভাবে বৃদ্ধি প্রাপ্ত করা সম্ভব, তার সবচেয়ে সহজ এবং শ্রেষ্ঠ বিধি হল – সময় মতো সেই বরদান স্মৃতিতে যেন চলে আসে। আর স্মৃতিতে চলে আসার সাথে সাথেই সমর্থ হয়ে যাবে এবং সিদ্ধি স্বরূপ হয়ে যাবে । যত বেশী সময়ানুসারে কার্যে তাকে ব্যবহার করবে, ততই বরদানকে প্রাপ্ত করতে থাকবে অর্থাৎ সদা বরদানের ফল অনুভব করতে থাকবে। এতই শ্রেষ্ঠ শক্তিশালী বরদান তোমরা প্রাপ্ত করেছো যে – না তাকে কেবল নিজের জন্যই কার্যে ব্যবহার করে ফল প্রাপ্ত করতে পারো, বরং অন্য আত্মাদেরকেও বরদাতা বাবার কাছ থেকে বরদান প্রাপ্ত করানোর যোগ্য বানিয়ে তুলতে পারো ! এই সঙ্গমযুগের বরদান ২১ জন্ম অন্য রূপে সাথে থাকে। এই সঙ্গমের রূপ আলাদা আর ২১ জন্ম এই বরদানই জীবনের গতিপ্রকৃতি অনুসারে চলতে থাকে। কিন্তু বরদাতা আর বরদান প্রাপ্ত হওয়ার সময় হল এখনই। অতএব এটা চেক করো যে, সকল বরদানকে কার্যে ব্যবহার করে তোমরা কী সফলতার সাথে এগিয়ে চলছো ?

এই বরদানের বিশেষত্ব হল যে, কখনোই পরিশ্রম করতে হয় না। যখন ভক্ত আত্মারাও পরিশ্রম করে ক্লান্ত হয়ে পড়ে, তখন তারা বাবার কাছ থেকেই বরদান প্রার্থনা করে। তোমাদের কাছে যখন লোকে আসে, যোগ লাগানোর পরিশ্রমটুকু করতে না চায়, তখন তারা কোন্ ভাষা ব্যবহার করে ? তারা বলে – কেবল আমাকে বরদান দিয়ে দাও, আমার মাথায় একটু হাত রাখো। তোমরা ব্রাহ্মণ বাচ্চাদের উপরে বরদাতা বাবার হাত সর্বদা রয়েছে। শ্রেষ্ঠ মত’ই সাথে রয়েছে। স্থূল হাত তো ২৪ ঘন্টা রাখবে না, তাই না ? বাবার এই শ্রেষ্ঠ মতের বরদান রূপী হাত সদা বাচ্চাদের উপরে রয়েছে। অমৃতবেলা থেকে শুরু করে রাতে ঘুমাতে যাওয়া পর্যন্ত প্রতিটি শ্বাসের জন্য, প্রতিটি সংকল্পের জন্য, প্রতিটি কর্মের জন্য শ্রেষ্ঠ মতের হাত তো রয়েছেই। এই বরদানকে বিধিসম্মত রূপে ব্যবহারে এনে এগিয়ে যাও, কখনোই তবে পরিশ্রম করতে হবে না।

দেবতাদের বিষয়ে যেমন কীর্তিত রয়েছে – ইচ্ছা মাত্রম্ অবিদ্যা। এটা হল ফরিস্তা জীবনের বিশেষত্ব। দেবত্ব জীবনে তো ইচ্ছার কোনো কথাই থাকে না। ব্রাহ্মণ জীবন থেকে ফরিস্তা জীবন হয়ে যায় অর্থাৎ কর্মাতীত স্থিতি প্রাপ্ত হয়ে যায় । কোনো প্রকারের শুদ্ধ কর্ম বা ব্যর্থ কর্ম বা বিকর্ম অথবা পূর্বকৃত কর্ম, কোনো প্রকারেরই কর্মের বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে কর্ম করাকে – কখনোই কর্মাতীত অবস্থা বলা যাবে না। একটিই কর্মের সম্বন্ধ, একটিই বন্ধন। অতএব যে কথাটি কীর্তিত আছে যে – সীমিত পরিসরের ইচ্ছা মাত্রম্ অবিদ্যা, এইরকম ফরিস্তা জীবন বা ব্রাহ্মণ জীবন অর্থাৎ ‘কঠিন’ শব্দটির বিষয়েই অবিদ্যা, মাথার ওপরে বোঝা – এই বিষয়েই অবিদ্যা, জানাই নেই যে সেটা কী ! অতএব বরদানী আত্মা অর্থাৎ জীবন খুব কঠিন – এইরূপ অনুভব করার থেকেই অবিদ্যা। একেই বলা হয় – বরদানী আত্মা। তাই বাবার সমান হওয়া অর্থাৎ সদা বরদাতার থেকে প্রাপ্ত হওয়া বরদান গুলির দ্বারা পালিত হওয়া, সদা নিশ্চিন্ত, নিশ্চিত বিজয় অনুভব করা।

অনেক বাচ্চারাই খুব ভালো পুরুষার্থ করছে। কিন্তু পুরুষার্থকে বোঝা অনুভব হওয়া – এটা যথার্থ পুরুষার্থ নয়। অ্যাটেনশন রাখা – এটাই হল ব্রাহ্মণ জীবনের বিধি। একেও যথার্থ অ্যাটেনশন বলা যাবে না। যেমন জীবনে এই স্থূল নলেজ থাকে যে, এই জিনিসটা ভালো, এই কথাটা বলতে হবে, এটা করা উচিত নয়। তাই নলেজের আধারে যে নলেজফুল হবে, তার নিদর্শন হল – তার জন্য ন্যাচারাল অ্যাটেনশন থাকে যে – এটা খাওয়া উচিত, ওটা খাওয়া উচিত নয়, এটা করা উচিত, এটা করা উচিত নয়। প্রতিটি পদক্ষেপে টেনশন থাকে না যে, এটা করব কি করব না, এটা খাব কি খাব না, এইভাবে চলব কি চলব না ? ন্যাচারাল নলেজের শক্তির দ্বারাই অ্যাটেনশন থাকে। এইরকমই যথার্থ পুরুষার্থীর প্রতিটি পদক্ষেপ, প্রতিটি কর্মে ন্যাচারাল অ্যাটেনশন থাকে। কেননা নলেজের লাইট – মাইট স্বতঃতই যথার্থ রীতিতে চালিত করে থাকে। তাই পুরুষার্থ করতে থাকো । অ্যাটেনশন অবশ্যই রাখো কিন্তু ‘টেনশন’ এর রূপে নয়। যখন টেনশনের রূপে এসে যাও, তখন চাইছো অনেক কাজ করতে বা নম্বর ওয়ান হতে, কিন্তু ‘টেনশন’ তোমাদেরকে যতটা চাও ততটা করতে দেয়না, যা হতে চাও সেটা হতে দেয়না। টেনশন তৈরী করে দেয়। কেননা যেটা চাইছো সেটা হতে পারছে না, ফলে টেনশন আরও বাড়তে থাকে।

অতএব পুরুষার্থ সবাই করছো তোমরা, কিন্তু কেউ পুরুষার্থকে বেশী ভারী করে ফেলে আবার কেউ তো একেবারেই উদাসীন হয়ে যায় – যা হওয়ার হবে, দেখা যাবে, কে দেখছে, কেই বা শুনছে…। সুতরাং না ওটা ভালো না এটা ভালো। সেইজন্য ব্যালেন্সের দ্বারা বাবার ব্লেসিন্স, বরদানের অনুভব করো। সদা সর্বদা বাবার হাত আমার মাথার উপরে রয়েছে – এই অনুভবকে সব সময় স্মৃতিতে রাখ। ভক্ত আত্মারা যেমন স্থূল চিত্রকে সামনে রাখে যেন মাথার উপরে বরদানের হাত রয়েছে, তাই তোমরাও চলতে ফিরতে বুদ্ধিতে এই অনুভবের চিত্র সদা স্মৃতিতে রাখো। বুঝতে পেরেছো ? অনেক পুরুষার্থ করেছো, এখন বরদানের দ্বারা প্রতিপালিত হয়ে উড়তে থাকো। বাবাকে জ্ঞান – দাতা, বিধাতার রূপে অনুভব করেছো, এখন বরদাতা রূপে অনুভব করো। আচ্ছা !

সদা প্রতিটি কদমে বাবাকে অনুসরণকারী, সর্বদা নিজেকে বরদাতা বাবার বরদানী শ্রেষ্ঠ আত্মা অনুভবকারী, সদা প্রতিটি পদক্ষেপ সহজে অনুভবকারী, সদা সকল বরদানকে সময় মতো কার্যে ব্যবহারকারী, এইরূপ বাবার সমান নিজেকে গড়ে তুলতে থাকা শ্রেষ্ঠ আত্মাদেরকে বাপদাদার বরদাতার রূপে স্মরণের স্নেহ-সুমন আর নমস্কার ।

“মুখ্য মহারথী ভাইদের সাথে সাক্ষাৎ”

জন্ম থেকে কত বরদান পেয়েছো ! প্রত্যেকে নিজের নিজের বরদান পেয়েছো । তোমাদের জন্মই হয়েছে বরদানের সাথে। নাহলে আজ এতদূর এগোতে পারতে না। বরদানের দ্বারা জন্ম হয়েছে, সেইজন্য এগিয়ে যাচ্ছ। পান্ডবদের মহিমা কিছু কম নাকি ! এক একজনের বিশেষত্ব যদি বর্ণনা করা হয় তাহলে কতো হয়ে যাবে ! এই যে ভাগবত রচিত হয়েছে, সেই রকম হয়ে যাবে। বাবার দৃষ্টিতে প্রত্যেকের বিশেষত্ব রয়েছে। আর কিছু তিনি দেখেও দেখেন না, জেনেও জানতে চান না। অতএব তোমাদের বিশেষত্ব তোমাদেরকে সদা এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে এবং আরও এগিয়ে নিয়ে যাবে। যারা জন্ম থেকেই বরদানী আত্মা, তারা কখনোই পিছু হঠতে পারে না। তোমরা হলে সদা উড়তে পারা বরদানী আত্মা। বরদাতা বাবার বরদান তোমাদেরকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। পান্ডব গুপ্ত থাকে কিন্তু বাপদাদার হৃদয়ে সদা প্রত্যক্ষ থাকে। ভালো ভালো প্ল্যান তো পান্ডবরাই বানিয়ে থাকে। শক্তিরা শিকার করে থাকে কিন্তু প্রশংসার পাত্র তো যারা নিয়ে আসছে তারা। যারা নিয়ে আসার তারাই যদি নিয়ে না আসে, তবে কী শিকার করবে ? সেইজন্য পান্ডবদের বিশেষ নিজস্ব বরদান রয়েছে। ‘স্মরণ’ আর ‘সেবা’র বিশেষ বল প্রাপ্ত হয়েছে। ‘স্মরণের বল’ও বিশেষ ভাবে প্রাপ্ত হয়, ‘সেবা’র বল’ও বিশেষ ভাবে প্রাপ্ত হয়। কেন ? তারও কারণ রয়েছে। কেননা যে যতখানি প্রয়োজনের সময়ে কার্যে এসেছে, তারই বিশেষ বরদান প্রাপ্ত হয়েছে। যেমন আদিতে যখন স্থাপনা হয়েছিল, তখন তোমরা পান্ডবরাই মার্জ ছিলে, ইমার্জ (উদিত) হওনি। শক্তিরা এক্জাম্পল হয়েছিলেন আর তাদের এক্জাম্পলকে দেখে অন্যরা এগিয়ে যেতে থাকে। সুতরাং তারা প্রয়োজনের সময় এক্জাম্পল হয়ে উঠেছিলেন। সেইজন্য প্রয়োজনের সময় যে যতখানি সহযোগী হয়েছে – তা সে জীবনেই হোক, কিম্বা সেবাতে… ড্রামা অনুসারে তাদের বিশেষ বল প্রাপ্ত হয়। তাদের নিজস্ব পুরুষার্থ তো আছেই, কিন্তু এক্সট্রা বল তারা প্রাপ্ত করেন। আচ্ছা !

সেবা করার ফলে যখন সব আত্মারা খুশী হয়, তারও অনেক বল পাওয়া যায়। অনুভবী আত্মা যারা, তাদেরই সেবা করা আবশ্যক। কারণ যারা সাকারে (সাকার ব্রহ্মার থেকে) পালনা নিয়েছে, তাদেরকে দেখে সব সময় বাবারই স্মরণ আসে। আপনারা কখনো কোথাও গেলে সকলে বিশেষ ভাবে কী জিজ্ঞাসা করবে ? চরিত্রের কথা বলো, বাবর বিষয়ে কিছু বলো। সুতরাং বিশেষত্ব রয়েছে না ? সেইজন্যই সেবার বিশেষত্বের বরদান তোমরা প্রাপ্ত করেছো। স্টেজে দাঁড়িয়ে ভাষণ যদি নাও করো, তার চেয়েও এ হল অনেক বড় ভাষণ। চরিত্র শুনিয়ে চরিত্রবান বানানোর প্রেরণা দেওয়া – এ হল সবচেয়ে বড় সেবা। অতএব সেবাতে যেতেই হবে আর সেবার জন্য নিমিত্ত হতেই হবে। আচ্ছা !

বরদানঃ-

নষ্টমোহ হওয়ার জন্য কেবল নিজের স্মৃতি স্বরূপকে পরিবর্তন করো। মোহ তখনই আসে যখন এই স্মৃতি থাকে যে, আমি গৃহস্থী, আমার বাড়ি ঘর, আমার আত্মীয় স্বজন। এখন এই হদ বা সীমিত পরিসরের দায় দায়িত্বকে বেহদের দায় দায়িত্বে পরিবর্তন করে দাও। বেহদের দায় দায়িত্বকে পালন করলে স্বাভাবিকভাবেই হদেরও পূরণ হয়ে যাবে । কিন্তু যদি বেহদের দায় দায়িত্বকে ভুলে গিয়ে কেবল হদের দায়িত্ব পালনে মশগুল হয়ে যাও তবে তাকে আরও বিগড়ে ফেলবে। কারণ সেই কর্তব্য, মোহের রোগ হয়ে ওঠে। সেইজন্য নিজের স্মৃতি স্বরূপকে পরিবর্তন করে নষ্টমোহ হও।

স্লোগানঃ-

Daily Murlis in Bengali: Brahma Kumaris Murli Today in Bengali

Email me Murli: Receive Daily Murli on your email. Subscribe!

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top