7 August 2022 Bengali Murli Today | Brahma Kumaris

Read and Listen today’s Gyan Murli in Bengali

6 August 2022

Morning Murli. Om Shanti. Madhuban.

Brahma Kumaris

আজকের শিব বাবার সাকার মুরলি, বাপদাদা, মাধুবন। Brahma Kumaris (BK) Murli for today in Bengali. This is the Official Murli blog to read and listen daily murlis.

"বাবার প্রতি স্নেহের লক্ষণ - বাবা সমান হওয়া"

আজ অসীম জগতের মাতা-পিতার সামনে সমগ্র অসীম পরিবার। এটা শুধুমাত্র সভা নয়, কিন্তু চারিদিকের স্নেহী সহযোগী বাচ্চাদের ছোট একটা ব্রাহ্মণ পরিবার, অতি প্রিয় আর স্বতন্ত্র পরিবার, অলৌকিক পরিবার, চিত্র হয়েও বিচিত্র অনুপম পরিবার সামনে রয়েছে। বাপদাদা অমৃতবেলা থেকে সব বাচ্চাদের স্নেহের, মিলন উদযাপনের, বরদান নেওয়ার মিষ্টি-মিষ্টি আত্মিক বার্তালাপ শুনছিলেন। সবার মনে স্নেহের ভাবনা আর সমান হওয়ার শ্রেষ্ঠ কামনা, চারিদিকে তিনি এই উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখেছেন। আজকের দিনে মেজরিটি বাচ্চাদের সামনে নম্বর ওয়ান শ্রেষ্ঠ আত্মা ব্রহ্মা মাতা-পিতা রূপে ইমার্জ ছিলেন। সবার হৃদয়ে আজ বিশেষ ভালোবাসার সাগর বাপদাদার প্রেমস্বরূপ প্রত্যক্ষ রূপে নয়ন-সমুখে ছিল। চারিদিকের সব বাচ্চার স্নেহের, হৃদয়ের গীত বাপদাদা শুনেছেন। স্নেহের রিটার্ণে বরদাতা বাবা বাচ্চাদের এই বরদান দিচ্ছেন – “সদাসর্বদা, প্রত্যেক আত্মার প্রতি, সব পরিস্থিতিতে স্নেহীমূর্ত ভব”। নিজের স্নেহীমূর্ত স্নেহের স্বভাব, স্নেহী ব্যবহার, স্নেহের সম্পর্ক-সম্বন্ধ কখনও ছেড়ে দিও না, ভুলে যেও না। এমনকি, যদি কোনো ব্যক্তি বা প্রকৃতি অথবা মায়া যেমনই ভয়ঙ্কর রূপ, জ্বালারূপ ধারণ ক’রে সামনে আসুক, তোমরা কিন্তু সেই ভয়ঙ্কর জ্বালা রূপকে সদা স্নেহের শীতলতার দ্বারা পরিবর্তন করতে থেকো। এই নতুন বছরে বিশেষভাবে স্নেহ নাও আর স্নেহ দাও। সদা স্নেহের দৃষ্টি, স্নেহের বৃত্তি, স্নেহময়ী কৃতি দ্বারা স্নেহী সৃষ্টি বানাতে হবে। যদি কেউ স্নেহ নাই দেয় কিন্তু তোমরা মাস্টার স্নেহস্বরূপ আত্মারা দাতা হয়ে আত্মিক স্নেহ দিয়ে যাও। আজকের জীব আত্মারা স্নেহ অর্থাৎ প্রকৃত ভালোবাসার জন্য পিপাসার্ত। স্নেহের এক মুহূর্ত অর্থাৎ এক ফোঁটার পিপাসার্ত। শুধুমাত্র প্রকৃত স্নেহ না থাকার কারণে হতবুদ্ধি হয়ে এদিকে ওদিকে ঘুরে বেড়াচ্ছে। প্রকৃত রূহানী (আত্মিক) স্নেহ খুঁজে চলেছে। এমন তৃষ্ণার্ত আত্মাদের সহায় হওয়া তোমরা মাস্টার জ্ঞান সাগর। নিজেকে নিজে জিজ্ঞাসা করো, তোমরা সব আত্মাকে পরিবর্তন করার এবং ব্রাহ্মণ পরিবারে আকর্ষণ করার বিশেষ আধার কী ছিল? এটাই ছিল, প্রকৃত ভালোবাসা, মাতা-পিতার ভালোবাসা, রূহানী পরিবারের ভালোবাসা – এই ভালোবাসার প্রাপ্তি পরিবর্তন করেছে। জ্ঞান তো পরে বুঝেছ, কিন্তু প্রথম আকর্ষণ ছিল প্রকৃত নিঃস্বার্থ পারিবারিক ভালোবাসা। এটাই ফাউন্ডেশন ছিল তো না, এর কারণেই সবাই তোমরা এসেছিলে, তাই না ! বিশ্বে কোটিপতি ধনাঢ্য ব্যক্তি অনেক আছে, কিন্তু পরমাত্মার প্রকৃত ভালোবাসার জন্য তারা ভিখারী কেন ? কোটি-কোটি টাকা পয়সার থেকে এই ভালোবাসা পাওয়া যায় না। সায়েন্টিস্টরা দেখো বিশ্বকে অল্পকালের সুখের কত উপকরণ (সাধন) দিয়েছে, কিন্তু তারা যত বড় বৈজ্ঞানিক ততই আরও অন্য কিছু অনুসন্ধান করে এবং আরও কিছু অনুসন্ধান করতে গিয়ে সেই অনুসন্ধানের মধ্যেই হারিয়ে যায়। সন্তুষ্টতার অনুভূতি নেই; আরও কিছু, আরও কিছুর খোঁজে তারা তাদের সময় নষ্ট করে দেয়। অনুসন্ধান করাই তাদের সংসার হয়ে গেছে। তোমাদের মতো স্নেহ-সম্পন্ন জীবনের অনুভূতি নেই। নেতাদের দেখ নিজেদের গদি সামলাতেই ব্যস্ত ! কাল কী হবে সেই চিন্তাতেই লেগে আছে। আর তোমরা ব্রাহ্মণ সকলে পরমাত্ম-দোলায় দুলছ। কালকের চিন্তা নেই। না কালকের চিন্তা আছে, না কালের (মৃত্যু) চিন্তা। কেন ? কেননা, তোমরা জানো যে, যা হচ্ছে সেটাও ভালো, আর যা হওয়ার আছে তা’ আরও ভালো। তাইতো ভালো-ভালো বলতে বলতে তোমরা ভালো হয়ে গেছ।

ব্রাহ্মণ জীবন অর্থাৎ যা কিছু মন্দ তাকে বিদায় দেওয়া এবং সদা সবকিছু সর্বাপেক্ষা ভালো জেনে তার অভিনন্দন ও শুভ কামনা উদযাপন করা। এটা করেছ, নাকি এখন বিদায় দিচ্ছ? যেমন তোমরা পুরানো বছরকে বিদায় দিয়ে নতুন বছরের জন্য অভিনন্দন ও শুভ কামনা জানাও, তাই না? অভিনন্দনের অনেক কার্ড এসেছে, এসেছে না ? অনেক বাচ্চার অভিনন্দন-পত্র তথা কার্ড এসেছে। বাপদাদা বলেন, তোমরা নতুন বছরের কার্ড পাঠিয়েছ অথবা সঙ্কল্প করেছ, যতই হোক, সঙ্গমযুগের প্রতিটি সেকেন্ড নতুন তো না ! সঙ্গমযুগের প্রতি সেকেন্ডের অভিনন্দনের কার্ড পাঠিও না, কার্ড সামলানো মুশকিল হয়। কিন্তু কার্ডের বদলে রেকর্ড রাখো যে প্রতি সেকেন্ড নতুন অনুভব করেছ কিনা ! প্রতিটি নতুন সেকেন্ড নতুন উৎসাহ-উদ্দীপনা অনুভব করেছ ? প্রতিটি সেকেন্ড নিজের মধ্যে নবীনত্ব অর্থাৎ দিব্যতার কী বিশেষত্ব অনুভব করেছ ? বাবা তার জন্য অভিনন্দন জানাচ্ছেন। প্রতি মুহূর্তে তোমরা সব ব্রাহ্মণ আত্মার সবচাইতে বড় সেরিমনি কী ? সেরিমনি অর্থাৎ খুশির সময় অথবা খুশির দিন। সেরিমনিতে সবচাইতে বড় বিষয় মিলন উদযাপন করা। মিলন উদযাপন করাই খুশি উদযাপন করা। তোমাদের সকলের পরমাত্ম-মিলন, শ্রেষ্ঠ আত্মাদের মিলন সবসময় হয় তো না ! তাহলে, সবসময় সেরিমনি হলো তো না ! নাচা, গাওয়া আর খাওয়া ― এই সেরিমনি উদযাপিত হয়ে থাকে। ব্রহ্মাবাবার ভাণ্ডারা (পাকশালা) থেকে তোমরা খাও, সেইজন্য সদা তোমরা ব্রহ্মা ভোজনই খাও। কোনো গৃহস্থ তার নিজস্ব উপার্জনে খায় না, সেন্টারের যারা, তারা সেন্টারের ভাণ্ডারী (অর্থ) থেকে খায় না, কিন্তু ব্রহ্মাবাবার ভাণ্ডার থেকে আর শিববাবার ভাণ্ডারী (পণ্যাগার) থেকে খায়। না পরিবার আমার, না সেন্টার আমার। ঘর-সংসারে থেকেও ট্রাস্টি হও, বাবার শ্রীমৎ অনুসারে নিমিত্ত হয়েছ, আর সেন্টারে যদি থাকো তো সেটা বাবার সেন্টার, তোমার নয়, সেইজন্য সদা শিববাবার ভাণ্ডারী, ব্রহ্মাবাবার ভাণ্ডারা – এই স্মৃতিতে ভাণ্ডারীও পরিপূর্ণ থাকবে, ভাণ্ডারাও পরিপূর্ণ থাকবে। যদি তোমার আমিত্ব বোধ থাকে তাহলে ভাণ্ডারা এবং ভাণ্ডারীতে বৃদ্ধি লাভ হবে না। কোনও কার্যে যদি কোনরকম খুঁত বা দুর্বলতা থাকে তবে তার কারণ বাবার পরিবর্তে আমিত্ববোধ-এর খুঁত আছে মানে কিছু খামতি আছে। খুঁত শব্দ খামতিকেও বলা যায়, আর অশুদ্ধ কিছু মিক্স হলে তাকেও খুঁত বলা হয়। যেমন সোনায় খাদ (খুঁত) মিক্স হয়, তাই না। কিন্তু ব্রাহ্মণ জীবন তো প্রতিটি সেকেন্ড সেরিমনি উদযাপনের অভিনন্দনের জন্য। বুঝেছ !

সাধারণতঃ, আজকের দিনে তোমরা সবাই আওয়াজের ঊর্ধ্বে যাও আর বাপদাদা যিনি আওয়াজের ঊর্ধ্বে তাঁকে তোমরা আওয়াজে নিয়ে আসো। এই প্র্যাক্টিস খুব ভালো – এই মুহূর্তে অনেক আওয়াজে আছ, হতে পারে তোমাদের ডিসকাশন (কোনো কিছুর ওপরে আলোচনা) চলছে, এমন বাতাবরণেও সঙ্কল্প করলে আওয়াজের উর্ধ্বে যাওয়ার তো সেকেন্ডে আওয়াজের ঊর্ধ্বে স্বতন্ত্র ফরিস্তা স্থিতিতে স্থির হয়ে যাও। এই মুহূর্তে কর্মযোগী, পরমুহূর্তে ফরিস্তা অর্থাৎ আওয়াজের ঊর্ধ্বে অব্যক্ত স্থিতি। এটা এমন হওয়া উচিত নয় যে, যদি বাতাবরণ খুব আওয়াজের হয়, তাহলে আওয়াজের ঊর্ধ্বে যেতে তোমরা টাইম নেবে ! না, এমন হওয়া উচিত নয়। কারণ লাস্ট সময় চতুর্দিকে ব্যক্তি, প্রকৃতির অস্থিরতা থেকে আরও আওয়াজ হবে – মর্মপীড়ায় আর্তনাদের, উথালপাথাল হওয়ার বাতাবরণ হবে। এমন সময়েই সেকেন্ডে অব্যক্ত ফরিস্তা তথা নিরাকারী অশরীরী আত্মা – এই অভ্যাসই বিজয়ী বানাবে। এই স্মৃতি জপমালায় (সিমরণী) অর্থাৎ বিজয় মালায় নিয়ে আসবে, সেইজন্য এই অভ্যাস এখন থেকে অতি আবশ্যক, একে বলে প্রকৃতিজিত, মায়াজিত। মালিক হয়ে মুখের দ্বারা যদি সুর বা সঙ্গীত বাজাতে চাও তো বাজাও অথবা কান দ্বারা যদি শুনতে চাও তো শোনো, কিম্বা যদি না শুনতে চাও তবে সেকেন্ডে ফুলস্টপ লাগাও, অর্ধেক স্টপ নয়, ফুল স্টপ। এটাই হলো ব্রহ্মাবাবার সমান হওয়া। স্নেহের লক্ষণ হ’লো সমান হওয়া। তোমরা প্রত্যেকে বলো যে, আমার স্নেহ বেশি। তোমাদের যে কোনো কাউকে যদি জিজ্ঞাসা করা হয় কার স্নেহ ব্রহ্মাবাবার থেকে বেশি, তো সবাই এটাই বলবে ‘আমার।’ সুতরাং যেভাবে তোমরা স্নেহের ক্ষেত্রে মনে করো – আমার স্নেহ বেশি, ঠিক সেভাবে সমান হওয়ার ক্ষেত্রেও তীব্র পুরুষার্থ করো যে, আমি নম্বর ওয়ানের সাথে, যুগল দানার সাথের দানা হয়ে যেন গাঁথা হয়ে যাই। একেই বলে স্নেহের রিটার্ন দেওয়া। স্নেহের কারণে মধুবনে দৌড়াতে তো তোমরা খুব চতুর। দৌড়ে দৌড়ে সবাই তাড়াতাড়ি এখানে পৌঁছে গেছ তো না। এটা যেমন প্রত্যক্ষ স্বরূপে দেখিয়েছ, ঠিক সেভাবেই সমান হওয়ার প্রত্যক্ষ স্বরূপ দেখাও। স্থান ছোট কিন্তু হৃদয় বড়, সেইজন্য অনুযোগ ক’রো না যে, তোমাদের জায়গা হয়নি। যখন হৃদয় বড় তখন ভালোবাসায় কোনরকম সমস্যা, সমস্যাই মনে হয় না। বাপদাদা বাচ্চাদের কোনো সমস্যা দেখতে পারেন না। হ্যাঁ, যোগ লাগাও তো জায়গা তৈরি হয়েই যাবে। আচ্ছা।

দেশ-বিদেশের চারিদিকের শ্রেষ্ঠ ও স্নেহে সমাহিত হওয়া আত্মাদের থেকে অনেক অনেক সঙ্কল্প দ্বারা, পত্র দ্বারা, সমাচার দ্বারা এই স্মৃতি দিবস বা নববর্ষের স্মরণ-স্নেহ বাপদাদা পেয়েছেন। সবার হৃদয়ের মিষ্টি-মিষ্টি সুর বাপদাদা শুনেছেন। রিটার্ণে বাপদাদাও সব বাচ্চাকে মিষ্টি-মিষ্টি, প্রিয় বাচ্চারা ব’লে স্মরণ-স্নেহ দিচ্ছেন। তোমরা এখন উড়ছ আর উড়তে থাকো। মায়ার খেলা খেলোয়াড় হয়ে দেখ। প্রকৃতির পরিস্থিতি মাস্টার সর্বশক্তিমান হয়ে খেলাচ্ছলে পার করে অগ্রচালিত হও। বাবার হাত আর দিব্য বুদ্ধিযোগ রূপী সাথ সদা অনুভব ক’রে শক্তিশালী হয়ে সদা পাস উইথ অনার হও। সদা স্নেহ-মূর্ত ভব-র বরদান স্মরণে রেখে স্মৃতিস্বরূপ হওয়া এমন সর্বস্নেহী সকল মূর্তিকে, সদা মাস্টার দাতা আত্মাদের মাতা-পিতার শক্তিসম্পন্ন স্মরণ-স্নেহ আর নমস্কার।

দাদিদের প্রতি : – বাবার সঙ্গের উত্তরাধিকারই বিশেষ পাওয়ার্স প্রাপ্তি। এই পাওয়ার্স দ্বারা সর্বকার্য সহজভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। সবাই তোমরা সমীপের সাথী তো না ! সাথে থেকেছ আর সাথেই ফিরে যাবে এবং সাথেই রাজত্ব করবে। সঙ্গমেও সমীপ, নিরাকারী দুনিয়াতেও সমীপ আর রাজধানীতেও সমীপ। জন্মানোর সাথে সাথেই সমীপ হওয়ার বরদান প্রাপ্ত হয়েছ। সবাই সমীপের হওয়ার বরদান-প্রাপ্ত, এমন অনুভব হয় তো না? সাথের অনুভব হওয়াই সমীপে থাকার লক্ষণ। আলাদা হওয়া কঠিন, সাথে থাকা আপনা থেকেই হয়। আপনত্বের সংগঠনের সমীপ তোমরা। রাজত্বের সিংহাসন নেবে তো না? সিংহাসনের উপরেও জিত প্রাপ্ত করবে, তাই না। ঠিক যেভাবে, এখন বাবার হৃদয়ের উপরে বিজয় লাভ করেছ, হৃদয় জয় করেছ, একইভাবে, নম্বরক্রমে বিশ্বের রাজ্য-সিংহাসনের উপরেও তোমরা জয়লাভ করবে। তোমরা এমনই বিজয়ী, তাই না? তোমাদের উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখে সবাই উৎসাহ-উদ্দীপনায় এগিয়ে চলেছে, আর সদা চলতে থাকবে। বাচ্চারা বাবার চমৎকারিত্বের মহিমা করে আর বাবা বাচ্চাদের চমৎকারিত্বের মহিমা গান। তোমরা বলো বাঃ বাবা বাঃ ! আর বাবা বলেন, বাঃ বাচ্চারা বাঃ ! আচ্ছা।

পাটিদের সাথে অব্যক্ত বাপদাদার সাক্ষাৎ : –

আমরা সবাই পূজ্য আর পূর্বজ আত্মা, এত নেশা থাকে তোমাদের ? সবাই তোমরা এই সৃষ্টিরূপী বৃক্ষের মূলে বসে আছ, আছ তো না ? আদি পিতার বাচ্চারা তোমরা সব আদি রত্ন। তাইতো এই বৃক্ষের কান্ডও তোমরা। যে ডালপালাই বের হয় তা’ বীজের পরে কান্ড থেকেই বের হয়। সুতরাং তোমরা হ’লে আদি ধর্মের আত্মা, আর সবাই পরে বের হয়, সেইজন্য তোমরা পূর্বজ। তো তোমরা ফাউন্ডেশন। ফাউন্ডেশন যত পরিপক্ক হয়, রচনাও ততই পরিপক্ক হয়। অতএব, এতটাই অ্যাটেনশন নিজেদের উপরে রাখতে হবে। পূর্বজ অর্থাৎ কান্ড হওয়ার কারণে বীজের সাথে তোমাদের ডিরেক্ট কানেকশন আছে। তোমরা সগর্বে বলতে পারো যে, আমরা পরমাত্মা দ্বারা ডিরেক্টলি রচিত হয়েছি। দুনিয়ার লোককে জিজ্ঞাসা করো যে তাদের কে রচনা করেছেন ? তো তারা শোনা কথার ভিত্তিতে বলবে যে ভগবান তাদের রচনা করেছেন। যতই হোক, সে’ তো শুধু কথার কথা, কিন্তু তোমরা পরম আত্মার ডিরেক্ট রচনা। আজকালকার ব্রাহ্মণও বলে যে, আমরা ব্রহ্মার বাচ্চা। কিন্তু প্র্যাকটিক্যাল রূপে তোমরা ব্রহ্মার বাচ্চা। তাহলে, এই খুশি থাকে তোমাদের যে, আমরা ডিরেক্ট রচনা। কোনো মহান আত্মা বা ধর্ম আত্মার রচনা নও তোমরা; তোমরা পরম আত্মার ডিরেক্ট রচনা। সুতরাং ডিরেক্ট কানেকশনে কত শক্তি ! দুনিয়ার লোকে খুঁজে বেড়াচ্ছে, যে কোনো বেশে ভগবান আসবেন, সেখানে তোমরা বলো পেয়ে গেছি। কত খুশি ! তো এত খুশি থাকে তোমাদের যে, তোমাদের দেখে অন্যেরাও খুশি হয়ে যাবে, কেননা, যারা খুশি থাকে তাদের মুখ সদাই সুন্দর আর আকর্ষক হয় তো না !

গ্লোবাল হসপিটালের ভাই-বোনেদের প্রতি : –

হসপিটালে যদি কোনো দুঃখী আসে তাহলে খুশি হয়ে যায় তো না ? এমন খুশির বাতাবরণ থাকে, যদি কেউ আসে দুঃখ ভুলে যায় ? কেননা, বাতাবরণ তৈরিই হয় ব্যক্তির ভাইব্রেশনের দ্বারা। কোনো দুঃখী আত্মাদের সংগঠন যদি হয় তো সেখানকার বাতাবরণও দুঃখের হবে। সেখানে যদি কেউ সহাস্যে যায়ও তো চুপ হয়ে যাবে, আর কোথাও হাসিখুশি ব্যক্তিদের সংগঠন হলে, খুশির সংগঠন হলে যে কোনো দুঃখী আত্মাই যাবে তো বদলে যাবে। প্রভাব অবশ্যই পড়ে। সুতরাং এভার-হ্যাপি হসপিটাল তো, তাই না? শুধু হেলদি নয়, হ্যাপিও। সবাই স্মিতমুখে হর্ষোৎফুল্ল থাকবে তো অর্ধেক নিরাময় হয়েই যাবে। অর্ধেক ওষুধ খুশি। সুতরাং ওষুধের খরচও বেঁচে যাবে, তাই না। পেশেন্টও খুশি হবে যে, কম খরচে সুস্থ হয়ে গেছে আর হসপিটালের খরচও কম হয়ে যাবে। ডাক্তারদেরও টাইম কম দিতে হবে। যেমন, সাকারে তোমরা দেখেছ, যারা ব্রহ্মাবাবার সামনে আসতো তাদের কী অনুভব শুনাতো ? অনেক বিষয় নিয়ে আসতো কিন্তু বাবার সামনে আসতেই সে’সব বিষয়ের সমাধান তাদের ভিতরে ভিতরেই হয়ে যেতো। এই অনুভব তোমরা শুনেছ তো না। একইভাবে, তোমরা সব ডাক্তারের কাছে যে কেউই আসুক, আসতেই যেন তাদের অর্ধেক রোগ ওখানেই ঠিক হয়ে যায়। তোমরা সব ডক্টর এ’রকমই তো না। যেমন বাবা অলৌকিক তো বাবার যে বাচ্চারা কার্যের নিমিত্ত তারাও তো অলৌকিক হবে, তাই না। তোমাদের সবার অলৌকিক জীবন নাকি সাধারণ জীবন? তপস্যায় তোমরা যত এগিয়ে যাবে, ততই তোমাদের ভাইব্রেশন অনেক তীব্রগতিতে কাজ করবে। আচ্ছা। কম খরচ হয় এমন হসপিটাল হওয়া উচিত। টাইমও কম খরচ হবে আর স্থূল ধনও কম খরচ এবং প্রসিদ্ধি হবে। নাম বড় আর খরচ কম। তো তোমরা এ’রকম অলৌকিক সেবাধারী, তাই না? তোমরা ভালো ফাউন্ডেশন বানিয়েছ। হসপিটাল মনে হয় নাকি যোগ ভবন মনে হয় ? এমন আওয়াজ হবে যে, এটা হসপিটাল নয়, বরং যোগ কেন্দ্র, হ্যাপি হাউস। লৌকিকেও এ’রকম হ্যাপি হাউস বানায়। যে কেউই ভিতরে যাবে তো হাসতেই থাকবে। কিন্তু অন্তর্মনের হাসি, তা’ হয় সদাকালের জন্য, আর ওই হাসি হয় অল্প সময়ের জন্য। আচ্ছা। সদা উৎফুল্ল মুডে থাকো। যা কিছুই হয়ে যাক নিজের মুড অফ করবে না। কেউ যদি গালিও দেয়, ইনসাল্টও করে কিন্তু তোমরা সদা উৎফুল্ল থাকো। আচ্ছা, ওম্ শান্তি।

বরদানঃ-

প্রকৃত সেবাধারী সে, যে সমর্পণ ভাব দ্বারা সেবা করে। সেবায় সামান্যতম আমিত্ব বোধের ভাব যেন না থাকে। যেখানে আমিত্ববোধ সেখানে সফলতা নেই। যখন কেউ এটা মনে করে নেয় যে এটা আমার কাজ, আমার বিচার, এটা আমার কর্ম-কর্তব্য – তখন এই আমিত্ববোধ আসা অর্থাৎ মোহ উৎপন্ন হওয়া। কিন্তু তোমরা যেখানেই থাকো, সদা এই স্মৃতি যেন থাকে যে, আমি নিমিত্ত, এটা আমার ঘর নয় বরং সেবাস্থান, তখন সমর্পণ ভাব দ্বারা নির্মান আর নষ্টমোহ হয়ে সফলতা প্রাপ্ত করে নেবে।

স্লোগানঃ-

Daily Murlis in Bengali: Brahma Kumaris Murli Today in Bengali

Email me Murli: Receive Daily Murli on your email. Subscribe!

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top