30 May 2021 BENGALI Murli Today – Brahma Kumaris

30 May 2021 BENGALI Murli Today – Brahma Kumaris

29 May 2021

Morning Murli. Om Shanti. Madhuban.

Brahma Kumaris

আজকের শিব বাবার সাকার মুরলি, বাপদাদা, মাধুবন। Brahma Kumaris (BK) Murli for today in Bengali. This is the Official Murli blog to read and listen daily murlis.

"মনন করবার বিধি তথা মনন শক্তিকে বাড়ানোর যুক্তি"

আজ রত্নাকর বাবা তাঁর অমূল্য রত্নদের সাথে মিলিত হতে এসেছেন যে প্রত্যেক শ্রেষ্ঠ আত্মা কতখানি জ্ঞান-রত্ন জমা করেছে অর্থাৎ জীবনে ধারণ করেছে ? এক একটি জ্ঞান-রত্ন পদম থেকেও বেশী মূল্যবান ! তাহলে ভাবো, আদি থেকে এখন পর্যন্ত কতো পরিমাণে জ্ঞান-রত্ন প্রাপ্ত হয়েছে ! রত্নাকর বাবা এক একটি বাচ্চার বুদ্ধি রূপী ঝুলিতে অনেক অনেক রত্ন ভরে দিয়েছেন। সকল বাচ্চাদের সমান ভাবে সম পরিমাণ জ্ঞান-রত্ন প্রদান করেছেন। কিন্তু এই জ্ঞান-রত্ন যত নিজের প্রতি বা অন্য আত্মাদের প্রতি কাজে লাগানো হয়, ততোই এই রত্ন বৃদ্ধি পেতে থাকে। বাপদাদা দেখছেন – বাবা তো সবাইকে সমান দিয়েছেন, কিন্তু কোনো কোনো বাচ্চা রত্ন গুলিকে বাড়িয়েছে আর কেউ কেউ রত্ন গুলিকে বাড়ায়নি। কেউ ভরপুর হয়েছে, কেউ অক্ষয় মালামাল তথা অপার ঐশ্বর্যশালী হয়েছে, কেউ সময় অনুসারে কাজে লাগাচ্ছে, কেউ সব সময় কাজে লাগিয়ে এক এর পদমগুণ বর্ধিত করে যাচ্ছে, কেউ যতটা কাজে লাগানো উচিত, ততখানি লাগাতে পারে না। সেইজন্য রত্নের ভ্যাল্যুকে যতখানি বুঝতে পারার কথা ততখানি বুঝতে পারছে না। যতখানি প্রাপ্ত হয়েছে সেটা বুদ্ধিতে ধারণ তো করেছে, কিন্তু কার্য ব্যবহারে নিয়ে এলে তার থেকে যে সুখ, খুশী, শক্তি, শান্তি আর নির্বিঘ্ন স্থিতি প্রাপ্তির অনুভূতি হওয়ার কথা, সেটা করতে পারে না। এর কারণ, মনন শক্তির অভাব। কেননা মনন করা অর্থাৎ জীবনে সমাহিত করে নেওয়া, ধারণ করা। মনন না করা অর্থাৎ কেবল বুদ্ধি পর্যন্ত ধারণ করা। তারা জীবনে প্রতিটি কার্যে, প্রতিটি কর্মে ব্যবহারে নিয়ে আসে – তা’ নিজের জন্যই হোক বা অন্য আত্মাদের জন্যই হোক। আর অন্যরা কেবল বুদ্ধিতে স্মরণ রাখে অর্থাৎ বুদ্ধির দ্বারা ধারণ করে।

যেমন যে কোনো স্থূল সম্পদকে কেবল সিন্দুক এনে রেখে দিলে আর সময় মতো বা সদা কাজে যদি না লাগাও, তবে সেই খুশীর প্রাপ্তি হয় না । কেবল মনের সান্ত্বনা থাকে যে, আমার কাছে আছে। সেটা না বৃদ্ধি পাবে, না অনুভূতি হবে। তেমনই জ্ঞান রত্ন যদি কেবল বুদ্ধিতে ধারণ করলে, স্মরণে রাখলে, মুখে বর্ণন করলে – পয়েন্ট তো খুব সুন্দর, তো স্বল্প সময়ের জন্য ভালো পয়েন্টের কারণে নেশাও ভালোই থাকে। কিন্তু জীবনে, প্রতিটি কর্মে সেই জ্ঞান রত্নকে নিয়ে আসতে হবে। কেননা ‘জ্ঞান রত্নও, জ্ঞান আলোকও, আবার জ্ঞান শক্তিও। সেইজন্য যদি এই বিধিতে কর্মে না নিয়ে আসা হয়, তবে বৃদ্ধিও পায় না বা অনুভূতিও হয় না। জ্ঞান পঠন-পাঠনও, জ্ঞান শ্রেষ্ঠ সমরাস্ত্রও। এই হল জ্ঞানের মূল্য। মূল্যকে জানা অর্থাৎ কর্মে ব্যবহার করা আর যত বেশী কার্য ব্যবহারে নিয়ে আসা হবে, ততই শক্তির অনুভব করতে থাকবে। যেমন অস্ত্রকে সময় মতো যদি ব্যবহার না করা হয়, তবে সেই অস্ত্র অনুপযোগী হয়ে যায় অর্থাৎ তার যে ভ্যাল্যু, তা’ হ্রাস হয়ে যায়। জ্ঞানও অস্ত্রই, যদি মায়াজিৎ হওয়ার সময় অস্ত্রকে কাজে ব্যবহার করা না হয়, তবে তার যে ভ্যাল্যু, তাকে কম করে দিলে। কেননা তার থেকে লাভ নিলে না। লাভ নেওয়া অর্থাৎ ভ্যাল্যু বজায় রাখা। জ্ঞান রত্ন সকলের কাছে আছে, কারণ সকলেই তোমরা অধিকারী । কিন্তু ভরপুর থাকার বিষয়ে নম্বরক্রমে রয়েছ। মূল কারণ শোনালাম – মনন শক্তির অভাব।

মনন শক্তি হল বাবার খাজানাকে (সম্পদ) নিজের খাজানা অনুভব করাবার আধার। স্থূল আহার হজম হলে যেমন রক্ত তৈরী হয়, কেননা আহার করা আলাদা জিনিস, কিন্তু তাকে হজম করে নিলে সেটা রক্তের রূপে নিজের হয়ে যায়। ঠিক সেইভাবেই মনন শক্তির দ্বারা বাবার খাজানা মানে আমার খাজানা – এই নিজের অধিকার, নিজের খাজানা বলে তখন অনুভব হয়। বাপদাদা আগেও বলেছেন – নিজের কায়দায় ঘুটলে তবেই নেশা চড়বে। অর্থাৎ বাবার খাজানাকে মনন-শক্তির দ্বারা কাজে লাগিয়ে প্রাপ্তির অনুভব যদি করো, তবে নেশা চড়বে। শুনবার সময় নেশা থাকে, কিন্তু সর্বদা কেন থাকে না ? এর কারণ হল সদা মনন-শক্তির দ্বারা তাকে নিজের বানাওনি। মনন শক্তি অর্থাৎ সাগরের তলদেশে গিয়ে অন্তর্মুখী হয়ে জ্ঞান রত্নের গূহ্যতায় যাওয়া। কেবল রিপিট করবে না, বরং প্রতিটি পয়েন্টের রহস্য কী আর প্রতিটি পয়েন্টকে কোন্ সময়, কোন্ বিধিতে কাজে ব্যবহার করতে হবে আর প্রতিটি পয়েন্টকে অন্য আত্মাদের প্রতি সেবাতে কোন্ বিধিতে লাগাতে হবে – প্রতিটি পয়েন্টকে শুনে মনন করে এই চারটি বিষয়েই ভাবো। তার সাথে সাথে মনন করতে করতে প্র্যাকটিক্যালি সেই রহস্যের রসে ডুবে যাও, নেশার অনুভূতিতে এসো। মায়ার ভিন্ন ভিন্ন বিঘ্ন গুলিকে সময় বা প্রকৃতির ভিন্ন ভিন্ন পরিস্থিতি অনুযায়ী কাজে লাগিয়ে দেখো, আমি যেটা মনন করেছি এই পরিস্থিতি অনুসারে বা বিঘ্ন অনুসারে সেই জ্ঞান রত্ন আমাকে মায়াজিৎ বানাতে পারবে নাকি বানাবে, সেটা প্র্যাকটিক্যালি হয়েছে অর্থাৎ মায়াজিৎ হয়েছ ? নাকি ভেবেছিলে মায়াজিৎ হবে, কিন্তু পরিশ্রম করতে হবে নাকি সময় ব্যর্থ হয়েছে ? এতে প্রমাণ হয় যে বিধি যথার্থ ছিল না, সেই কারণেই সিদ্ধিলাভ হল না। ইউজ করবার পদ্ধতিও জানা চাই, অভ্যাসও চাই। সায়েন্স এর লোকেরা যেমন অত্যন্ত পাওয়ারফুল বম্বস্ (শক্তিশালী বারুদ-গোলা) নিয়ে যায়। মনে করে – ব্যস্, এর দ্বারাই আমরা জিতে যাব। কিন্তু ইউজ যারা করবে, তারা যদি কীভাবে ইউজ করতে হয়, সেটাই না জানে, তবে যত পাওয়ারফুল বম্বস্ হোক না কেন, তা’ যেখানে সেখানে এমন জায়গায় গিয়ে পড়ে যে ব্যর্থ হয়ে যায়। তার কারণ কী ? ইউজ করবার বিধি ঠিক নেই। এই রকম এক একটি জ্ঞান-রত্ন হল অতি অমূল্য । জ্ঞান রত্ন বা জ্ঞানের শক্তির কাছে পরিস্থিতি বা বিঘ্ন টিকতে পারে না। কিন্তু যদি বিজয় না হয়, তবে জানবে ইউজ করবার বিধি তার জানা নেই। দ্বিতীয়তঃ, মনন শক্তির অভ্যাস সর্বদা না করার জন্য বিনা অভ্যাসে যখন হঠাৎ করে সময়মতো কাজে লাগানোর প্রচেষ্টা করো, তখন তোমরা বঞ্চিত হয়ে যাও। এই অমনোযোগী মনোভাব এসে যায় – জ্ঞান তো বুদ্ধিতে আছেই, সময় মতো তাকে কাজে ব্যবহার করে নেবো। কিন্তু সব সময়ের অভ্যাস, বহুকালের অভ্যাস প্রয়োজন। নয়তো, সেই সময় যে ভাববে, তাকে কি টাইটেল দেওয়া হবে ? – কুম্ভকর্ণ। সে কী অমনোযোগী মনোভাব দেখিয়েছে ? এটাই তো ভেবেছে যে, আসতে দাও, আসলে ঠিক জিতে যাব। সুতরাং এইভাবে ভাবা যে সময়তে ঠিক হয়ে যাবে, এই অমনোযোগিতার মনোভাব মানসিক চাঞ্চল্য বা বিমূঢ়তা উৎপন্ন করে। সেইজন্য রোজ মনন শক্তিকে বাড়িয়ে যেতে থাকো।

রিভাইস কোর্স বা অভ্যাস, যা রোজ শুনছো, তো মনন শক্তিকে বাড়ানোর জন্য রোজ কোনো না কোনো একটি বিশেষ পয়েন্ট বুদ্ধিতে ধারণ করো আর যে চারটি বিষয় বলেছি, সেই বিধি অনুযায়ী অভ্যাস করো। চলতে ফিরতে, সব কাজকর্ম করতে করতে – স্থূল কাজকর্মই করো কিম্বা সেবার কাজ করো, সারাদিন মনন যেন চলতে থাকে। হয়ত বিজনেস করছো বা অফিসে কাজ করছো, কিম্বা সেবা কেন্দ্রে সেবা করছো, যে মুহূর্তে বুদ্ধি একটু ফ্রি রয়েছে দেখবে, নিজের মনন শক্তির অভ্যাসকে বারবার ভিন্ন ভিন্ন যুক্তির বিচারে ছোটাও । কোনো কোনো কাজ এমনও হয় যে, কাজ করছো, তার সাথে সাথে ভাবার অবকাশও রয়েছে। এমন খুব কমই হয় যে, এমন কাজ হয়ে থাকে যে, যাতে বুদ্ধির ফুল অ্যাটেনশন দিতে হয়, নাহলে তো ডবল দিকে বুদ্ধি চলতে থাকে। এইরকম সময়ে যদি নিজের দিনচর্যাতে নোট করে রাখো, তবে মাঝে মাঝে অনেক সময় পেয়ে যেতে পারো। মনন শক্তির জন্য বিশেষ সময় পাওয়া গেলে তবেই অভ্যাস করব – সে’রকম কোনো বিষয় নয়। চলতে ফিরতেও সেটা করতে পারো। যদি একান্তে থাকার সময় পাওয়া যায়, তবে তো খুবই ভালো। আর সূক্ষ্মতায় গিয়ে প্রতিটি পয়েন্টকে স্পষ্ট করে তোলার চেষ্টা করো। বিস্তারে যাও, তাহলে অনেক মজা পাবে। কিন্তু প্রথমে পয়েন্টের নেশার স্থিতিতে স্থিত হয়ে করবে, তখন আর বোর হবে না l নয়তো, তোমরা শুধু রিপিট করে নাও আর পরে বলো যে এটা তো হয়ে গেছে, এখন কী করবো ?

যেমন, তোমরা যখন স্বদর্শন চক্র ঘোরাও, তখন তোমাদের কেউ কেউ বাবাকে হাসায়, চক্র কীভাবে ঘুরাবো, ৫ মিনিটেই তো চক্র পুরো হয়ে যায় ! তারা স্থিতির অনুভব করতে তো আসে না, শুধুই রিপিট করে – সত্যযুগ, ত্রেতা, দ্বাপর, কলিযুগ, এত জন্ম, এত আয়ু, এত সময়… ব্যস্, পুরো হয়ে গেল ! কিন্তু স্বদর্শন চক্রধারী হওয়া অর্থাৎ নলেজফুল, পাওয়ারফুল স্থিতির অনুভব করা l পয়েন্টের নেশায় স্থিত থাকা, গূঢ়ার্থ

জেনে রাজযুক্ত হওয়া অর্থাৎ সেই জ্ঞানের বিন্দুযুক্ত হওয়া – প্রতিটা পয়েন্টে এইরকম অভ্যাস করো l এটা তো স্বদর্শন চক্রের একটা বিষয়ে বলা হয়েছে l এইভাবে, জ্ঞানের প্রতিটা পয়েন্টকে মনন করো আর মাঝে মাঝে অভ্যাস করো l এইরকম নয় শুধু আধঘন্টা মনন করেছ ! যখনই সময় পাচ্ছ মননের অভ্যাসের দিকে যেন তোমার বুদ্ধি চলে যায় l মনন শক্তিতে বুদ্ধি বিজি থাকলে তবে নিজে থেকেই সহজে মায়াজিত হয়ে যাবে l তোমাকে বিজি দেখে মায়া নিজেই সরে যাবে l মায়া যদি আসে আর মায়াকে তাড়াতে তোমাদের যুদ্ধ করতে হয় এবং কখনো জয়, কখনো পরাজয় হয়, তাহলে সেটা পিঁপড়ে মার্গের পুরুষার্থ অর্থাৎ হামাগুড়ি দিয়ে চলার অবস্থার পুরুষার্থ l এখন সময় তীব্র পুরুষার্থ করার, ওড়ার সময়, সেইজন্য মনন শক্তিতে বুদ্ধি বিজি রাখো l এই মনন শক্তি দ্বারা স্মরণের শক্তিতে মগ্ন থাকার অনুভব সহজ হয়ে যাবে l মনন তোমাদের মায়াজিত বানায় আর ব্যর্থ সঙ্কল্প থেকেও মুক্ত করে দেয় l যেখানে ব্যর্থ নেই, বিঘ্ন নেই তো সেখানে শক্তিশালী স্থিতি এবং ভাবে বিভোর হয়ে থাকার স্থিতি আপনা থেকেই হয়ে যায় l

অনেকে ভাবে – বীজরূপ স্থিতি কিংবা শক্তিশালী স্মরণের স্থিতি কম স্থায়ী হয়, কিংবা অনেক অ্যাটেনশন দেওয়ার পর অনুভব হয় l এর কারণ তোমাদের আগের বারই শোনানো হয়েছে যে লিকেজ আছে, বুদ্ধির শক্তি ব্যর্থের দিকে যায় l কখনো ব্যর্থ সঙ্কল্প চলবে, কখনো সাধারণ সঙ্কল্প চলবে l যে কাজ তোমরা করছ সেই কাজের সঙ্কল্পে বুদ্ধির বিজি থাকা – একে বলে, সাধারণ সঙ্কল্প l স্মরণের শক্তি কিংবা মনন শক্তি যেমন হওয়া উচিত তেমন হয় না আর নিজেকে এই বলে খুশি করে নাও যে আজ কোনো পাপ কর্ম হয়নি, কোনো ব্যর্থ চলেনি, কাউকে দুঃখ দিইনি l কিন্তু তোমার শক্তিশালী সঙ্কল্প, শক্তিশালী স্থিতি, শক্তিশালী স্মরণ ছিল ? যদি না থাকে তাহলে বলা হবে সাধারণ সঙ্কল্প l কর্ম করেছ কিন্তু কর্ম আর যোগ একসাথে হয়নি l কর্মকর্তা হয়েছ কিন্তু কর্মযোগী হওনি, সেইজন্য কর্ম করার কালে হয় মনন শক্তি, কিংবা মগ্ন স্থিতির শক্তি, এই দুইয়ের মধ্যে একটা অনুভূতি সদা হতে দাও l এই দুই স্থিতি শক্তিশালী সেবা করানোর আধার l যারা মননকারী তাদের অভ্যাস থাকার কারণে যে সময় যে স্থিতি বানাতে চায় তা’ বানাতে পারে l লিঙ্ক থাকলে লিকেজের অবসান হয়ে যায় আর যে সময় যে অনুভূতি, তা’ বীজরূপ স্থিতিরই হোক, বা ফরিস্তা রূপের, যা করতে চাও সেটা সহজে করতে পারবে, কারণ যখন জ্ঞানের স্মৃতি আছে তখন জ্ঞানের স্মরণ দ্বারা জ্ঞানদাতা আপনা থেকেই স্মরণে থাকেন l সুতরাং বুঝেছ, মনন কীভাবে করতে হবে ? তোমাদের বলা হয়েছিল তো আবার কোনও একদিন মনন সম্বন্ধে বলা হবে, সেইজন্য বাবা আজ তোমাদেরকে মনন করার বিধি বললেন l মায়ার বিঘ্ন থেকে সদা বিজয়ী হওয়া বা সদা সেবায় সফলতার অনুভব করা, এর আধার মনন শক্তি l বুঝেছ ? আচ্ছা !

সর্বজ্ঞান-সাগরের ‘জ্ঞানী তু আত্মা’ বাচ্চাদের, সদা মনন শক্তি দ্বারা সহজে মায়াজিত হয় এমন শ্রেষ্ঠ আত্মাদের, মনন শক্তির অভ্যাসকে সদা বাড়িয়ে চলে, মনন দ্বারা মগ্ন স্থিতির অনুভব করে, সদা জ্ঞান রত্নের মূল্য জেনে, সদা সর্বকর্মে জ্ঞানের শক্তিকে কার্যে প্রয়োগ করে, সদা শ্রেষ্ঠ স্থিতিতে থাকে এমন বিশেষ এবং অমূল্য রত্নরাজিকে বাপদাদার স্মরণ-স্নেহ আর নমস্কার l

“পাটিদের সাথে অব্যক্ত বাপদাদার সাক্ষাৎকার :-” নিজেকে তোমরা তীব্র পুরুষার্থী মনে করো ? কেননা সময় অনেক তীব্রগতিতে এগিয়ে যাচ্ছে l সময় দ্রুততার সঙ্গে এগিয়ে যাচ্ছে, তাহলে সময়মতো অভীষ্ট লক্ষ্যের দিকে যারা যাচ্ছে তাদের কোন্ গতিতে চলতে হবে ? সময় কম আর প্রাপ্তি বেশি করতে হবে। সুতরাং অল্প সময়ে যদি বেশি প্রাপ্তি করতে হয় তাহলে তীব্র করতে হবে, তাই না ? তোমরা সময়কেও দেখছ আর নিজেদের পুরুষার্থের গতিও জানো l সুতরাং সময় যদি তেজগতি হয় আর নিজেদের যদি তীব্রগতি না হয় তাহলে সময় অর্থাৎ রচনা তোমরা সব রচয়িতার থেকেও তেজিয়ান হলো l রচয়িতার থেকে রচনা যদি তেজগতি হয়ে যায় তাহলে কি ব্যাপারটা ভালো বলবে ? রচয়িতার তো রচনার সামনে হওয়া উচিত l সদা তীব্র পুরুষার্থী আত্মা হয়ে সামনে এগোনোর সময় এখন l যদি সামনে এগিয়ে যেতে কোনও সাইড সীনস্ দেখে থেমে যাও, তাহলে কিন্তু যারা থামবে তারা ঠিক সময়ে পৌঁছাতে পারবে না l মায়ার যেকোন আকর্ষণই সাইড সীন l সাইড সীনে যারা থামে তারা কীভাবে লক্ষ্যে পৌঁছাবে ? সেইজন্য সদাসর্বদা তীব্র পুরুষার্থী হয়ে সামনে এগিয়ে চলো l এমন নয় যে সময়মতো পৌঁছেই যাবে, এখন তো সময় পড়ে আছে l এইরকম ভেবে যদি ধীরগতিতে চলো তাহলে সেই সময়ে বঞ্চিত হয়ে যাবে l বহুকালের তীব্র পুরুষার্থের সংস্কার, অন্তেও তীব্র পুরুষার্থের অনুভব করাবে l অতএব, সদা তীব্র পুরুষার্থী হও, কখনো তীব্র, কখনো দুর্বল – না ! এ’রকম নয় যে কিছু তুচ্ছ ঘটনা ঘটল, আর দুর্বল হয়ে যাবে ! একে তীব্র পুরুষার্থী বলা যাবে না l তীব্র পুরুষার্থী কখনো থামে না, বরং ওড়ে l সুতরাং উড়ন্ত বিহঙ্গ হয়ে উড়তি কলার অনুভব করে এগিয়ে চলো l একে অপরকে সহযোগ দিয়ে নিরন্তর তীব্র পুরুষার্থী বানাও l যত অন্যদের সেবা করবে ততই নিজের উৎসাহ-উদ্দীপনা বাড়তে থাকবে l

“বিদায় কালে (দাদি জানকীজী বাপদাদার থেকেবিদেশে যাওয়ার অনুমতি নিচ্ছেন)”

দেশ-বিদেশে সেবার উৎসাহ-উদ্দীপনা ভালো l যেখানে উৎসাহ-উদ্দীপনা থাকে, সেখানে সফলতাও হয় l সদা এই অ্যাটেনশন রাখতে হবে যে তোমাদের উৎসাহ-উদ্দীপনা আছে এবং সংগঠনের শক্তিও আছে l স্নেহের শক্তি, সহযোগের শক্তি হলে তাহলে সফলতাও সেই অনুসারে হয় l এটা ভূমি l যখন ভূমি ঠিক তখন ফলও সে’রকমই দেয় আর যদি টেম্পোরারি ভাবে (অস্থায়ী ) ভূমিকে ঠিক করে বীজ বপন করো তো ফলও অল্প সময়ের জন্য পাওয়া যাবে, সদাকালের জন্য ফল পাওয়া যাবে না l সুতরাং সফলতার ফলের আগে সদা ভূমি চেক করো l আর অন্যান্য যা কিছু করো তার জন্য তো জমা হয়েই যায় l এখনও তোমরা খুশি প্রাপ্তি করো আর ভবিষ্যতে তো আছেই l আচ্ছা !

 

বরদানঃ-

সমুদয় পঠন-পাঠন আর শিক্ষার সার এই তিন শব্দ :- ১- কর্মবন্ধন ভাঙতে হবে l ২- নিজের সংস্কার-স্বভাব গড়তে হবে এবং ৩- এক বাবার সঙ্গে সর্ব সম্বন্ধ জুড়তে হবে – এই তিন শব্দ তোমাদের সম্পূর্ণ বিজয়ী বানায়, এর জন্য সদা এই স্মৃতি যেন থাকে যে যা কিছু বিনাশী বস্তু তোমরা এই নয়নে দেখ তা’ সব বিনাশ হয়েই আছে l সে’সব দেখেও নিজের নতুন সম্বন্ধ, নতুন সৃষ্টি দেখতে থাকো, তাহলে কখনো হেরে যাবে না l

স্লোগানঃ-

Daily Murlis in Bengali: Brahma Kumaris Murli Today in Bengali

Email me Murli: Receive Daily Murli on your email. Subscribe!

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top
Scroll to Top