29 August 2021 BENGALI Murli Today – Brahma Kumaris

Read and Listen today’s Gyan Murli in Bengali

August 28, 2021

Morning Murli. Om Shanti. Madhuban.

Brahma Kumaris

আজকের শিব বাবার সাকার মুরলি, বাপদাদা, মাধুবন। Brahma Kumaris (BK) Murli for today in Bengali. This is the Official Murli blog to read and listen daily murlis.

"তিন প্রকার স্নেহ তথা হৃদয় থেকে স্নেহী বাচ্চাদের বিশেষত্ব"

আজ বাপদাদা নিজের স্নেহী, সহযোগী আর শক্তিশালী – এই তিন রকম বিশেষত্বে সম্পন্ন বাচ্চাদের দেখছেন। এই তিন বিশেষত্ব যাদের মধ্যে সমান ভাবে আছে, তারাই বিশেষ আত্মাদের মধ্যে ‘নম্বর ওয়ান আত্মা’। স্নেহও থাকবে আর সদা সর্বকার্যে সহযোগীও হবে, সেইসঙ্গে শক্তিশালীও হবে। স্নেহী তো সবাই, কিন্তু স্নেহের ক্ষেত্রে এক হলো হৃদয়ের স্নেহ, দ্বিতীয় হলো সময় অনুসারে উদ্দেশ্য প্রণোদিত স্নেহ আর তৃতীয় হলো নিঃসহায় সময়ের স্নেহ। যে হৃদয়ের স্নেহী তার বিশেষত্ব হবে এই রকম – সর্ব সম্বন্ধ আর সর্ব প্রাপ্তি সদা সহজে আপনা থেকেই অনুভব করবে। একটা সম্বন্ধেরও অনুভূতিতে অভাব থাকবে না। যে’ সময় যে’ সম্বন্ধের প্রয়োজন তারা সেই সম্বন্ধের স্নেহের ভিন্ন ভিন্ন অনুভব করবে, সময়কে বুঝে এবং সময় অনুসারে সম্বন্ধকেও উপলব্ধি করতে পারবে।

বাবা যখন শিক্ষক রূপে শ্রেষ্ঠ পাঠ পড়াচ্ছেন, তাহলে এই রকম সময়ে ‘শিক্ষক’-এর সম্বন্ধের অনুভব না ক’রে, ‘সখা’ রূপের অনুভূতিতে মিলন উদযাপনে বা অধ্যাত্ম আলাপচারিতায় যদি নিয়োজিত থাকবে তো পঠন-পাঠনের দিকে অ্যাটেনশন থাকবে না। পড়ার সময় যদি কেউ বলে যে আমি আওয়াজের ঊর্ধ্বে খুব শক্তিশালী স্থিতিতে নিজেকে অনুভব করছি, তাহলে পড়ার সময় এটা কি রাইট হবে? কেননা, বাবা যখন শিক্ষক রূপে পঠন-পাঠনের দ্বারা শ্রেষ্ঠ পদের প্রাপ্তি করাতে আসেন তখন সেই সময় টিচারের সামনে গডলি স্টুডেন্ট লাইফই যথার্থ। একে বলা হয়ে থাকে – সময়ের বাস্তবয়তা অনুসারে সম্বন্ধের উপলব্ধি এবং সম্বন্ধ অনুযায়ী স্নেহের প্রাপ্তির অনুভূতি। বুদ্ধিকে এটাই এক্সারসাইজ করাও, যখন যেমন প্রয়োজন তখন সেই রকম স্বরূপ আর স্থিতিতে যেন স্থিত হতে পারে।

যেমন, কেউ যদি স্থূলকায় হয়, অথবা বোঝা বহন করছে, তাহলে তো নিজের শরীর যেভাবে চাইবে সে’ভাবে সহজে মোল্ড করতে পারবে না। এইরকমই যদি স্থূলবুদ্ধি হয় অর্থাৎ কোনো না কোনও প্রকারের ব্যর্থ বোঝা বা ব্যর্থ আবর্জনা বুদ্ধিতে ভরে থাকে, কোনো না কোনো অশুদ্ধি থাকে তাহলে সেই রকম বুদ্ধির কেউ যে সময়ে যেভাবে চাইবে সেভাবে বুদ্ধিকে মোল্ড করতে পারবে না। সেইজন্য খুব স্বচ্ছ, নির্মল অর্থাৎ অতি সূক্ষ্ম-বুদ্ধি, দিব্য বুদ্ধি, অসীম বুদ্ধি, বিশাল বুদ্ধি প্রয়োজন। যারাই এই রকম বুদ্ধির তারা সর্ব সম্বন্ধের অনুভব যে সময়, যেমন সম্বন্ধ চায় তেমন ভাবে নিজের স্বরূপ তারা অনুভবও করতে পারবে। সুতরাং স্নেহী সবাই, কিন্তু সর্ব সম্বন্ধের স্নেহ যারা সময় অনুসারে অনুভব করে, তারা সবসময়ই সেই অনুভবে এত বিজি থাকে, সর্ব সম্বন্ধের বিভিন্ন প্রাপ্তিতে এতই তন্ময় হয়ে থাকে, মগ্ন থাকে যে কোনরকম বিঘ্ন নিজের দিকে তাদের ঝুঁকাতে পারে না। সেইজন্য নিজে থেকেই তারা সহজ যোগী স্থিতির অনুভব করে। একে বলে, নম্বর-ওয়ান যথার্থ স্নেহী আত্মা। স্নেহের কারণে এমন আত্মার সময়কালে বাবার থেকে সর্বকার্যে আপনা থেকেই সহযোগের প্রাপ্তি হতে থাকে। সেই কারণে ‘স্নেহ’ – অখন্ড, অটল, অনড়, অবিনাশী অনুভব হয়। বুঝেছ ? এই হলো নম্বর-ওয়ান স্নেহের বিশেষত্ব। দ্বিতীয়, তৃতীয়ের বর্ণন করার তো আবশ্যকতাই নেই, কেননা তোমরা তাদের খুব ভালোভাবে জানো। তো বাপদাদা এই রকম স্নেহী বাচ্চাদের দেখছিলেন। আদি থেকে এখনও পর্যন্ত স্নেহ একরস থেকেছে, নাকি সময় অনুসারে, সমস্যা অনুযায়ী বা ব্রাহ্মণ আত্মাদের সম্পর্কের পরিপ্রেক্ষিতে পরিবর্তন হতে থাকে ? এ’তেও তো প্রভেদ তৈরি হয়ে যায়, তাই না !

বাবা আজ তোমাদের স্নেহ সম্বন্ধে শুনিয়েছেন, এর পরে আত্মার সহযোগী আর শক্তিশালী হওয়ার তিন বিশেষত্বের মহত্ত্ব শোনাবেন। তিনই আবশ্যক। তোমরা তো সবাই এ’রকম স্নেহী, তাই না ! এই প্র্যাক্টিস তোমাদের আছে, আছে না ? যখন যেখানে বুদ্ধিকে স্থির রাখা প্রয়োজন, তা’ তোমরা করতে পার, পার তো ? তোমাদের কন্ট্রোলিং পাওয়ার আছে, তাই না ? রুলিং পাওয়ার তখনই আসে যখন কন্ট্রোলিং পাওয়ার থাকে। তাছাড়া, যে নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারে না, সে রাজ্যকে কীভাবে কন্ট্রোল করবে ? সেইজন্য নিজেকে কন্ট্রোল করার শক্তির অভ্যাস এখনই প্রয়োজন, তবেই রাজ্য অধিকারী হবে। বুঝেছ ? আচ্ছা !

আজ তো যারা মিলিত হবে তাদের কোটা (quota) পূরণ করতে হবে। দেখো, সঙ্গমযুগে তোমরা যতই কেন না সংখ্যাকে বাঁধনে বেঁধে দাও, কিন্তু বাঁধতে কি পার তোমরা ? সংখ্যার থেকে বেশি এসে যায়, সেইজন্য সময়, সংখ্যা এবং যে শরীরের আধার নাও তা’ দেখে, বাবাকে সেই অনুযায়ী চলতে হয়। বতনে এই সব দেখার প্রয়োজন হয় না, কারণ সূক্ষ্ম শরীরের গতি স্থূল শরীর থেকে অনেক তীব্র হয়। একদিকে সাকার শরীরধারী চলছে, আরেক দিকে ফরিস্তা রূপ – উভয়ের চলার মধ্যে কতো তারতম্য হবে ! ফরিস্তা কোথাও পৌঁছাতে কত সময় নেবে আর সাকার শরীরধারী সেখানে কতো সময়ের মধ্যে পৌঁছাবে ? প্রভেদ অনেক ! ব্রহ্মা বাবাও সূক্ষ্ম শরীরধারী হয়ে কতো তীব্রগতিতে চারিদিকে সেবা করছেন ! ব্রহ্মা, তিনি সাকার শরীরধারী ছিলেন আর এখন সূক্ষ্ম শরীরধারী হয়ে তীব্রগতিতে এগিয়ে অন্যদেরও এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন ! এতো তোমরা অনুভব করছ, তাই না !

সূক্ষ্ম শরীরের গতি এই দুনিয়ার সবচাইতে দ্রুতগতির সাধন থেকে অধিকতর দ্রুত। এক সেকেন্ডের মধ্যে একই সময়ে অনেককে অনুভব করানো যায়, যখন সবাই বলবে যে আমি এই সময় বাবাকে দেখেছি অথবা বাবার সাথে সাক্ষাৎ করেছি, প্রত্যেকে মনে করবে আমি বাবার সাথে আত্মিক বার্তালাপ ( রুহ – রিহান) ) করেছি, আমি মিলন উদযাপন করেছি, আমি সহায়তা লাভ করেছি। কারণ তীব্রগতির জন্য একই সময়ে প্রত্যেকের এইরকম অনুভব হয়, যেন আমি করেছি। তাইতো ফরিস্তা জীবন বন্ধনমুক্ত জীবন। যদিও সেবার বন্ধন রয়েছে, কিন্তু এত ফাস্ট গতি যে যতই করতে থাকুন, ততই করেও সদা ফ্রি। যতটাই প্রিয়, ততটাই স্বতন্ত্র। করাচ্ছেন সবাইকে দিয়ে, কিন্তু করাতে করাতেও অশরীরী ফরিস্তা হওয়ার কারণে সদাই স্বতন্ত্রতার স্থিতির অনুভব থাকে, কেননা তিনি শরীর এবং কর্মের অধীন নন। তোমাদেরও অনুভব আছে – যখন ফরিস্তা স্থিতির দ্বারা কোনো কার্য করছ তখন বন্ধনমুক্ত হওয়ার অর্থাৎ হাল্কা ভাব অনুভব করো, তাই না ! আর যিনি (বাবা) হলেনই ফরিস্তা, লোকও সেটা (সূক্ষ্মলোক), শরীরও সেই রকম (সূক্ষ্ম), সুতরাং কী অনুভব হতে পারে, বুঝতেই তো পারো, তাই না ! আচ্ছা !

চারিদিকের, হৃদয়ের সব স্নেহী বাচ্চাকে, সদা দিব্য, বিশাল, অসীম বুদ্ধিমান বাচ্চাদের, সদা ব্রহ্মাবাবা সমান ফরিস্তা স্থিতির অনুভবের তীব্রগতিতে সেবায়, স্ব-উন্নতিতে সফলতা প্রাপ্ত করে, সদা সহযোগী হয়ে বাবার সহযোগের অধিকার অনুভব করে – এমন বিশেষ আত্মাদের, সমান হতে যাওয়া মহান আত্মাদের বাপদাদার স্মরণ-স্নেহ আর নমস্কার।

পার্সোনাল সাক্ষাতের সময়কালে বরদান রূপে উচ্চারিত মহাবাক্যঃ

১) সদা নিশ্চিন্ত বাদশাহ তোমরা, তাই না ! বাবাকে যখন দায়িত্ব দিয়েই দিয়েছ তবে দুশ্চিন্তা কোন্ বিষয়ের ? যখন নিজেদের উপরে দায়িত্ব রাখ তখন দুশ্চিন্তা হয় – কী হবে, কীভাবে হবে…, আর যখন বাবাকে হস্তার্পণ করে দিয়েছ তখন চিন্তা কা’র হওয়া উচিত, বাবার নাকি তোমাদের ? তাছাড়া, বাবা তো সাগর, তার মধ্যে চিন্তা থাকবেই না। সুতরাং বাবাও নিশ্চিন্ত আর বাচ্চারাও নিশ্চিন্ত। অতএব, যে কর্মই কর, কর্ম করার আগে এটা ভাবো যে তুমি ট্রাস্টি ! যে ট্রাস্টি সে খুব ভালোবেসে কাজ করে, কিন্তু বোঝা হয় না। ট্রাস্টির অর্থই হলো – সবকিছু, বাবা তোমার। সুতরাং ‘তোমার’ হওয়ায় প্রাপ্তিও বেশি আর হালকাও থাকবে, কাজও ভালো হবে, কারণ যেমন স্মৃতি হবে তেমনই স্থিতি হয়। ‘তোমার’ মানেই বাবার স্মৃতি। কোনও প্রথাগত মহান আত্মা নয়, স্বয়ং বাবা ! সুতরাং যখন ‘তোমার’ বলে দিয়েছ তখন কার্যও ঠিক হবে আর তোমাদের স্থিতিও সদা নিরুদ্বিগ্ন থাকবে। যখন বাবা অফার করছেন যে চিন্তা আমাকে দিয়ে দাও, তবুও যদি অফার না মানো তাহলে কী বলবে ? বাবার অফার – বোঝা ছেড়ে দাও। সুতরাং সদা নিশ্চিন্ত থাকতে হবে এবং নিশ্চিন্ত হওয়ার বিধি তোমাদের নিজস্ব অনুভব থেকে অন্যদের বলতে হবে। অনেক আশীর্বাদ প্রাপ্ত হবে ! কারও বোঝা বা চিন্তা যদি নিয়ে নাও তাহলে তারা তাদের হৃদয় থেকে আশীর্বাদ দেবে। বাদশাহ যদি হও তো অবিনাশী ধনের বাদশাহ হও ! বাদশাহ’র কিসের পরোয়া ! বিনাশী বাদশাহদের তো চিন্তা থাকে কিন্তু এটা অবিনাশী। আচ্ছা !

২) অবিনাশী সুখ আর অল্পকালের সুখ – তোমরা তো এই দুইয়েরই অনুভাবী, না ? অল্পকালের সুখ – স্থূল উপকরণাদির সুখ আর অবিনাশী সুখ হলো ঈশ্বরীয় সুখ। তাহলে সর্বাধিক সুখ কোনটা ! ঈশ্বরীয় সুখের প্রাপ্তি হলে বিনাশী সুখ আপনা থেকেই অনুসরণ করে। যেমন, কেউ রোদে হাঁটলে আপনা থেকেই তার ছায়া তাকে অনুসরণ করে, আর যদি কেউ ছায়ার অনুগামী হয় তাহলে কিছুই প্রাপ্ত হয় না। সুতরাং যারা ঈশ্বরীয় সুখের দিকে অনুগমন করে, অল্পকালের সুখ আপনাআপনিই তাদেরকে ছায়ার মতো অনুসরণ করতে থাকবে, পরিশ্রম করতে হবে না।যেমন বলা হয়, যেখানে পরমার্থে কোন কিছু করা হয়, সেখানে আচার-ব্যবহার আপনা থেকেই সফল হয়ে যায়। ঈশ্বরীয় সুখ হলো এইরকম ‘পরমার্থ’ আর বিনাশী সুখ হলো – ‘ব্যবহার’। পরমার্থের সামনে ব্যবহার আপনা থেকেই চলে আসে। সুতরাং সদা এই অনুভবে থাকতে হবে যা’তে তোমরা উভয়ই প্রাপ্ত করতে পার। নয়তো একটা দিকে প্রাপ্ত হবে, তা’ও বিনাশী হবে। কখনো প্রাপ্তি হবে কখনো প্রাপ্তি হবে না। কারণ জিনিসই বিনাশী তো তার থেকে প্রাপ্তিই বা কী হবে ! যখন তোমাদের ঈশ্বরীয় সুখ প্রাপ্ত হয়, তখন তোমরা সদা সুখী হও, দুঃখের লেশমাত্রও থাকে না। ঈশ্বরীয় সুখের প্রাপ্তি মানেই সবকিছুর প্রাপ্তি, কোনও অপ্রাপ্তি থাকে না। যারা অবিনাশী সুখে থাকে তারা স্বতন্ত্রভাবে বিনাশী জিনিস ইউজ করবে, আবদ্ধ হবে না। আচ্ছা !

৩) সদা নিজেদের পূর্ব কল্পের বিজয়ী পাণ্ডব মনে কর ? যখনই পাণ্ডবদের স্মারক চিত্র দেখ, তখন কী এমন মনে হয় যে এই স্মারক-চিত্র তোমাদের ? পাণ্ডব অর্থাৎ যারা সদা বলিষ্ঠ, সেইজন্য পাণ্ডবদের শরীর লম্বা-চওড়া দেখানো হয়, কখনো দুর্বল দেখানো হয় না। আত্মা সাহসী, শক্তিশালী। কিন্তু তা’ দেখানোর পরিবর্তে তারা শরীরকে শক্তিশালী দেখিয়েছে। পাণ্ডবদের বিজয় প্রসিদ্ধ। কৌরব অগণিত হওয়া সত্ত্বেও পরাজিত হয়েছিল, সেখানে পাণ্ডব সংখ্যায় মাত্র পাঁচ, হয়েও জয়ী হয়েছিল। কেন বিজয়ী হয়েছে ? কারণ পাণ্ডবদের সাথে বাবা ছিলেন, পাণ্ডব শক্তিশালী, তাদের অধ্যাত্ম শক্তি ছিল, সেইজন্য অসংখ্য কৌরবের শক্তি তাদের সামনে কিছুই নয়। তোমরাও এইরকম, তাই না ? যে কেউই তোমাদের সামনে আসুক, মায়া যে রূপেই আসুক তবুও সে পরাজিতই হয়, জয়ী হতে পারে না, একে বলে, বিজয়ী পাণ্ডব। মাতারাও পাণ্ডব সেনাতে আছ, আছ না ! নাকি গৃহবাসী ? যারা দুর্বল হয় তারা ঘরে লুকিয়ে থাকে, যারা সাহসী তারা ময়দানে আসে। তাহলে তোমরা কোথায় থাক, ময়দানে নাকি ঘরে ? সুতরাং সদা এই নেশাতে এগিয়ে যেতে থাক, আমরা পাণ্ডব সেনার বিজয়ী পাণ্ডব।

৪) নিজেদের নিমিত্ত অসীম সেবাধারী মনে কর ? অসীম সেবাধারী অর্থাৎ কোনরকম আমিত্বভাবের এবং আমার ভাবের সীমাবদ্ধতায় আসে না। অসীমে না আমি আছে, না আমার আছে। সবকিছু বাবার, আমিও বাবার তো সেবাও বাবার। একে বলে অসীম সেবা। এইরকম অসীম সেবাধারী নাকি সীমাবদ্ধতায় এসে যাও ? অসীম সেবাধারী অসীম জগতের রাজ্য প্রাপ্ত করে। সদা অসীম জগতের বাবা, অসীম সেবা এবং অসীম জগতের রাজ্য-ভাগ্য – এই যদি স্মৃতিতে রাখ তবে অসীম জগতের খুশি থাকবে। সীমাবদ্ধ দুনিয়ায় খুশি উধাও হয়েই যায়, অসীম জগতে সদা খুশি থাকবে। আচ্ছা !

বিদায়কালে :- সেবার প্ল্যান তো এখন খুব ভালো বানিয়েছ। বাস্তবে, সেবাও উন্নতির সাধন। যদি সেবার রীতিতে সেবা কর তবে সেই সেবা এগিয়ে যেতে লিফ্ট দেয়। শুধু প্লেন (সহজ) বুদ্ধি হয়ে প্ল্যান বানাও, তার মধ্যে সামান্য এদিক-ওদিকের কোনকিছু যেন মিক্স হতে দিও না। যেমন, খুব ভালো কিছু যদি তোমরা বানিয়ে রাখ আর এখান-ওখানের হাওয়ায় কিছু নোংরা পড়ে তাহলে কী হবে ? সামলে তো রাখ, তাই না ! অতএব, এদিক-ওদিকের কোনকিছুই মিক্স না হয়ে যায় ! কার্যতঃ, সেবার প্ল্যান তোমরা ভালোই বানাও। সেবায় পরিশ্রম, পরিশ্রম মনে হয় না, খুশি হয় কারণ একাগ্রতা ও নিষ্ঠার সাথে কর, উৎসাহ-উদ্দীপনাও ভালোই থাকে তোমাদের। বাপদাদা সেবার উদ্যম দেখে খুশিও হন। শুধু কোনকিছু মিক্স হতে দিও না, তাহলে যত সময় ধরে সেবা হয়েছে তার চার গুন সেবা তোমরা করতে পার। প্লেন বুদ্ধি ফাস্ট গতির সেবা প্রত্যক্ষ করাবে। এখন তো তবুও ভাবতে হয়, এটা করব নাকি এটা করব ! এ’টা হবে না তো, সে’টা হবে না তো ! যাই হোক, প্রত্যেকের যেন একই বুদ্ধি হয়ে যায় – যে করেছে সে ভালো, যা করেছে তা’ ভালো। এই পাঠ যখন পাকাপোক্ত হয়ে যাবে তীব্রগতির সেবা শুরু হয়ে যাবে। কার্যতঃ আগের থেকে সেবার গতি তীব্র হচ্ছে, বর্ধিত হচ্ছে, আর তোমরা সফলতাও পাচ্ছ। কিন্তু এখনের প্রয়োজনের তুলনায় বিশ্বের আত্মাদের সমাচার দেওয়ার ক্ষেত্রে তোমরা মাত্র একটা কোণ পর্যন্ত পৌঁছেছ। কোথায় সাড়ে পাঁচ কোটি আত্মা আর কোথায় সমাচার হয়তো পৌঁছেছে এক কোটি-দু’ কোটি পর্যন্ত ! তাহলে, আর বাকি কত পড়ে রইল ? হ্যাঁ, রাজধানীর কাছাকাছি যারা থাকবে সেই পর্যন্ত এসে পৌঁছেছে, কিন্তু প্ৰয়োজন তো সবাইকে। উত্তরাধিকার তো সবাইকে দিতে হবে তা’ মুক্তি দাও, বা জীবনমুক্তি। কিন্তু দিতে তো হবে সবাইকে, বাবার কোনও বাচ্চা বঞ্চিত না রয়ে যায় ! যেভাবেই হোক, বাবার উত্তরাধিকারের অধিকারী হতেই হবে, তা’ যেকোন উপায়েই সমাচার শুনুক, তার জন্য প্রয়োজন ‘তীব্রগতি’ । সেই সময়ও আসছে, হয়ে যাবে।

এখন ধীরে ধীরে সব ধর্মের লোকেরাও তাদের মতো করে মোল্ড হচ্ছে। প্রথমে কট্টরপন্থী ছিল, এখন মোল্ড হচ্ছে। খ্রিষ্টান হোক বা মুসলিম কিন্তু ভারতের ফিলসফিকে ভিতর থেকে রিগার্ড দেয়, কেননা ভারতের ফিলসফি সবরকমভাবে চিত্তাকর্ষক। এইরকম আর কোনো ধর্মে নেই। কাহিনীর মাধ্যমে, ড্রামার মাধ্যমে ভারতের ফিলসফি যেভাবে বর্ণন করা হয়, সেইরকম আর কোথাও কোনো ধর্মে নেই, সেইজন্য যারা একেবারে কট্টর ছিল, তারাও ভিতরে-ভিতরে ভারতের ফিলসফি বুঝেছে, তার মধ্যে আদি সনাতন ফিলোসফি কম নয় ! সেই দিনও আসবে যখন সবাই বলবে যদি ফিলোসফি আছে তো সেটা যদি সনাতন ধর্মের আছে। হিন্দু শব্দে তারা হীন ভাবে, কিন্তু সনাতন ধর্মকে রিগার্ড দেবে। গড্ এক তো ধর্মও এক, আমাদের সকলের ধর্মও এক – এটাই ধীরে ধীরে আত্মার ধর্মের দিকে আকৃষ্ট হতে থাকবে। আচ্ছা !

বরদানঃ-

আত্মাতে ওয়েস্টেরই ওয়েট থাকে। ওয়েস্ট সঙ্কল্প, ওয়েস্ট বাণী, ওয়েস্ট কর্ম দ্বারা আত্মা ভার হয়ে যায়। এখন এই ওয়েটের বিনাশ কর। এই ওয়েট সমাপ্ত করার জন্য সদা সেবায় বিজি থাক, মনন শক্তি বাড়াও। মনন শক্তি দ্বারা আত্মা শক্তিশালী হয়ে যাবে। যেমন ভোজন হজম করায় রক্ত তৈরি হয়, তারপরে তা’ শক্তির কাজ করে, সেইরকম মনন করলে আত্মার শক্তি বাড়ে।

স্লোগানঃ-

Daily Murlis in Bengali: Brahma Kumaris Murli Today in Bengali

Email me Murli: Receive Daily Murli on your email. Subscribe!

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top