18 July 2021 BENGALI Murli Today – Brahma Kumaris
Read and Listen today’s Gyan Murli in Bengali
17 July 2021
Morning Murli. Om Shanti. Madhuban.
Brahma Kumaris
আজকের শিব বাবার সাকার মুরলি, বাপদাদা, মাধুবন। Brahma Kumaris (BK) Murli for today in Bengali. This is the Official Murli blog to read and listen daily murlis.
"সদা উৎসাহে থেকে উৎসব পালন করো"
আজ বিশ্বেশ্বর বাবা বিশ্বের আপন শ্রেষ্ঠ রচনা এবং শ্রেষ্ঠ আদি রত্নদের সাথে, অতি স্নেহী আর সমীপ বাচ্চাদের সাথে মিলন উদযাপন করতে এসেছেন। বিশ্বের সকল আত্মাই তো বিশ্বেশ্বর বাবার বাচ্চা, কিন্তু ব্রাহ্মণ আত্মারা অতি স্নেহী নিকটস্থ আত্মা, কারণ ব্রাহ্মণ আত্মারা আদি রচনা। বাবার সাথে সাথে ব্রাহ্মণ আত্মারাও ব্রাহ্মণ জীবনে অবতরিত হয়ে বাবার কার্যে সহযোগী আত্মা হয়। সেইজন্য বাপদাদা আজকের দিনে বাচ্চাদের ব্রাহ্মণ জীবনের অবতরণের জন্ম-দিন উদযাপন করতে এসেছেন। বাচ্চারা বাবার জন্মদিন উদযাপনের জন্য উৎসাহ-উদ্দীপনায় খুশিতে নাচছে। কিন্তু বাপদাদা উৎফুল্ল হচ্ছেন বাচ্চাদের এই ব্রাহ্মণ জীবনকে দেখে, কীভাবে তারা স্নেহ আর সহযোগে বাবার সঙ্গে সর্বকার্যে মনোবলের সাথে এগিয়ে যাচ্ছে ! তাইতো তোমরা বাপদাদার বার্থ-ডে উদযাপন করো আর বাবা বাচ্চাদের বার্থ-ডে উদযাপন করেন। তোমরা সব ব্রাহ্মণেরও তো বার্থ-ডে, না ! সেইজন্য বাপদাদা,জগৎ-অম্বা এবং অ্যাডভান্স পার্টির বিশেষ শ্রেষ্ঠ আত্মা- তোমাদের সব সাথীর থেকে সস্নেহ স্বর্ণালী পুষ্পের বর্ষণের পাশাপাশি তোমাদের ব্রাহ্মণ জীবনের জন্য অভিনন্দন, অভিনন্দন। এই অভিনন্দন হৃদয়ের, শুধু মুখ-শব্দের অভিনন্দন নয়। কিন্তু দিলারাম বাবার হৃদয়ের অভিনন্দন সকল শ্রেষ্ঠ আত্মাদের, হয় তারা সমুখে বসে আছে, অথবা মন থেকে, চারিদিকের বাচ্চাদের অভিনন্দন, অভিনন্দন।
আজ এই দিনে, ভক্ত আত্মাদের বাবার বিন্দুরূপের বিশেষ স্মৃতি থাকে। শিব জয়ন্তী অথবা শিব রাত্রি সাকার রূপের স্মারক নয়, কিন্তু মাহাত্ম্য সেই নিরাকার বাবা জ্যোতি-বিন্দুর, যাঁকে শিবলিঙ্গ রূপে পূজা করা হয়। তোমাদের সকলের হৃদয়েও বাবার বিন্দু রূপের স্মৃতি সদা থাকে। তো তোমরাও বিন্দু আর বাবাও বিন্দু, তাইতো আজ এই দিনে ভারতে প্রত্যেক ভক্ত আত্মার মধ্যে বিন্দু রূপের বিশেষ মাহাত্ম্য থাকে। বিন্দু যত সূক্ষ্ম ততই শক্তিশালী, সেইজন্য বিন্দু বাবাকেই শক্তি, গুণ ও জ্ঞানের সিন্ধু বলা হয়ে থাকে। তাইতো আজ সব বাচ্চার হৃদয়ে উৎপন্ন জন্মদিনের বিশেষ উৎসাহের তরঙ্গ অমৃতবেলা থেকেই বাপদাদার কাছে পৌঁছে যাচ্ছে। তোমরা বাচ্চারা বিশেষ সেবার্থে স্নেহস্বরূপ হয়ে বাবার পতাকা উত্তোলন করেছ, বাবা কোন পতাকা উত্তোলন করেছেন ? তোমরা সবাই তো শিববাবার পতাকা উত্তোলন করেছ, বাবা কি এই পতাকা উত্তোলন করবেন ? বাচ্চারা, সাকার রূপের সেবার এই দায়িত্ব তোমাদেরকে দিয়ে দেওয়া হয়েছে। বাবা পতাকা উত্তোলন করেছেন, কিন্তু কোন ধরনের আর কোথায় উত্তোলন করেছেন ? বাপদাদা তাঁর হৃদয়ে সব বাচ্চাদের স্নেহের বিশেষত্বের পতাকা উত্তোলন করেছেন। কতো পতাকা হবে তিনি উত্তোলন করেছেন ? এই দুনিয়ায় এত পতাকা কেউ উত্তোলন করতে পারে না ! সে’ দৃশ্য কতো সুন্দর হবে !
প্রত্যেক বাচ্চার বিশেষত্বের পতাকা বাপদাদার হৃদয়ে উড়ছে। শুধু তোমরাই পতাকা উত্তোলন করনি, বাপদাদাও কিন্তু উত্তোলন করেছেন। এই পতাকা যখন উত্তোলন করো তখন কী হয় ? ফুলের বর্ষা। বাপদাদাও যখন বাচ্চাদের বিশেষত্বের স্নেহের পতাকা উত্তোলন করেন তখন কিসের বর্ষা হয় ? প্রত্যেক বাচ্চার উপরে ‘অবিনাশী ভব’, ‘অমর ভব’, ‘অনড়-অটল ভব’ – এই সকল বরদানের বর্ষা হয়। এই বরদানই বাপদাদার অবিনাশী অলৌকিক পুষ্প। বাপদাদার এই অবতরণ দিবসের অর্থাৎ শিব জয়ন্তী দিবসের খুশি বাচ্চাদের থেকেও অধিক, খুশির মধ্যে খুশি ! কারণ প্রতি বছর এই অবতরণ দিবসের স্মরণিক উদযাপন তো করা হয়, কিন্তু যখন সাকার ব্রহ্মা তনে বাবার অবতরণ হয় তখন বাপদাদার বিশেষতঃ শিববাবার এর মধ্যে বিশেষ এই বিষয়ের খুশি থাকে – কতো সময় ধরে নিজের সমীপ স্নেহী বাচ্চাদের থেকে পরমধামে আলাদা থেকেছেন, পরমধামে আরও আত্মারা ছিল বটে, কিন্তু প্রথম রচনার আত্মারা, যারা বাবা সমান হওয়া সেবাসাথী আত্মা, তারা কতো কাল পরে অবতরিত হয়ে আবারও মিলিত হয় ! কতো কালের বিচ্ছিন্ন হওয়া শ্রেষ্ঠ আত্মারা আবার এসে মিলিত হয় ! বিচ্ছিন্ন হওয়া অতি স্নেহী কাউকে যদি পাওয়া যায় তাহলে বিশেষ খুশিতে খুশি তো হবেই তাই না ! অবতরণ দিবস অর্থাৎ আদি রচনার সাথে আবার মিলিত হওয়া। তোমরা ভাববে- আমরা আমাদের বাবাকে পেয়েছি আর বাবা বলেন আমি আমার বাচ্চাদের পেয়েছি ! তাইতো নিজের আদি রচনার জন্য বাবার গর্ব। সবাই তোমরা প্রথম রচনা, তাই না ! ক্ষত্রিয় তো নও ? সবাই তোমরা সূর্যবংশী আদি রচনা। ব্রাহ্মণ থেকে তোমরা দেবতা হও, তাই না ? সুতরাং ব্রাহ্মণ আত্মারা আদি রচনা। অনাদি রচনা তো সবাই, সারা বিশ্বের আত্মারা রচনা। যতই হোক, তোমরা অনাদি ও আদি রচনা। তাহলে ডবল নেশা থাকে, না ?
আজ এই দিনে বাপদাদা বিশেষ এক স্লোগান দিচ্ছেন। আজকের দিনকে উৎসবের দিন বলা হয়ে থাকে। লোকে শিবরাত্রি অথবা শিবজয়ন্তী উৎসব হিসেবে পালন করে। উৎসবের দিনের এই স্লোগান মনে রেখো যে ব্রাহ্মণ জীবনের প্রতিটা মুহূর্ত উৎসবের মুহূর্ত। ব্রাহ্মণ জীবন অর্থাৎ সদা উৎসব পালন করা, সদা উৎসাহে থাকা আর সদা তোমাদের সর্বকর্ম দ্বারা আত্মাদের উৎসাহ দেওয়া। সুতরাং, তোমাদেরকে উৎসব পালন করতে হবে, উৎসাহে থাকতে হবে এবং উৎসাহ দিতে হবে। যেখানে উৎসাহ থাকে সেখানে কখনো কোনও রকমের বিঘ্ন উৎসাহী আত্মাকে তার সেই উৎসাহ থেকে সরাতে পারে না, যেভাবে অল্পকালের উৎসাহে অন্যরা সব ব্যাপার ভুলে যাও। যখন কোনো উৎসব পালন করো তো সেই সময়ের জন্য খুশি ব্যতীত অন্য কিছু মনে থাকে না। সুতরাং ব্রাহ্মণ জীবনে প্রতিটা মুহূর্ত উৎসব অর্থাৎ প্রতিটা মুহূর্ত উৎসাহে অতিবাহিত হয়। তাহলে অন্য বিষয় আসতে পারে কি ? যদি কোনও সীমিত পরিসরের উৎসবে যাবে তো সেখানে তারা কী করে ? নাচ, গান, খেলা আর খাওয়া – এটাই তো হয়, তাই না ? তাহলে, ব্রাহ্মণ জীবনের উৎসবে সারাদিন তোমরা কী করো ? সেবাও যদি করো তো খেলা মনে ক’রে করো, নাকি বোঝা মনে হয় ? আজকালকার দুনিয়ায় কোনও অ-জ্ঞানী আত্মা সামান্য একটু মাথার কাজ করবে তো বলবে – খুব পরিশ্রান্ত হয়ে গেছি, মাথার ওপরে কাজের অনেক বোঝা ! আর তোমরা সেবা করে আসছ তো তোমরা কী বলো – সেবার মেওয়া খেয়ে এসেছি, কারণ তোমরা যতই বড় থেকে বড় সেবার নিমিত্ত হও, সেবার প্রত্যক্ষ ফল ততই খুব সুন্দর আর বড় প্রাপ্ত হয়। সুতরাং প্রত্যক্ষ ফল খাওয়ায় আরও শক্তি এসে যায়, তাই না ! খুশির শক্তি বৃদ্ধি পায়, সেইজন্য শরীরের ক্ষেত্রে তা’ যতই শক্ত কাজ হোক না কেন অথবা প্ল্যান বানানোতে মাথার কাজ হোক, ক্লান্তি কিন্তু হবে না। এমনকি রাত না দিন সেটাও তোমাদের বোধগম্য হয় না, তাই না ! যদি তোমাদের কাছে ঘড়ি না থাকে তাহলে কী তোমরা জানতে পার যে ক’টা বেজেছে ? তোমরা কিন্তু উৎসব পালন করছ, সেইজন্য সেবা তোমাদের উৎসাহ দেয় আর উৎসাহ অনুভব করায়।
ব্রাহ্মণ জীবনে এক হয় সেবা, দ্বিতীয় কী হয় ? মায়া আসে। মায়ার উল্লেখ করা হয়েছে ব’লে হাসছ, কেননা তোমরা বুঝতে পারছ যে তোমাদের সাথে মায়ার ভালোবাসা বেশি ! তার প্রতি তোমাদের ভালোবাসা নেই, তার আছে। উৎসবে খেলাও দেখা যায়, আজকাল কোন খেলা সবার বেশি পছন্দ ? তোমরা মিকি-মাউসের খেলা অনেক খেল। এমনকি মিকি-মাউসের খেলাতে অ্যাডভার্টাইজ্ দেখানো হয়। হয় ম্যাচ পছন্দ করে, না হয় মিকি-মাউসের খেলা। তাহলে এখানেও মায়া যখন আসে তো তার সাথে ম্যাচ খেল, তাকে নিশানা বানাও। খেলায় তোমরা কী কর ? বল আসে আর তোমরা সেটাকে খেলে অন্য দিকে পাঠিয়ে দাও, অথবা যদি ক্যাচ লোফার হয়, লুফে নিতে পারলেই তখন তোমরা বিজয়ী হয়ে যাও। মায়ার বলও এ’রকমই – কখনো ‘কাম’-এর রূপে আসে, কখনো ক্রোধ’-এর রূপে। তখন সেটাকে ক্যাচ করো যে এ হল মায়ার খেলা। যদি মায়ার খেলাকে খেলা মনে করো তো উৎসাহ বাড়বে আর যদি মায়ার কোনও পরিস্থিতিকে শত্রু ভাবে দেখ তো ঘাবড়ে যাও। মিকি-মাউস খেলায় কখনো বাঁদর এসে যায়, কখনো বিড়াল, কখনো কুকুর, কখনো ইঁদুর আসে কিন্তু তোমরা ঘাবড়ে যাও কি ? দেখতে মজা লাগে, তাই না ! সুতরাং এখানেও উৎসব রূপে মায়ার বিভিন্ন পরিস্থিতির খেলা দেখ। খেলা দেখতে দেখতে কেউ যদি ঘাবড়ে যায় তবে কী বলবে ! খেলা দেখতে দেখতে কেউ যদি ভেবে নেয় যে বল আমার দিকেই আসছে, আমারই না আঘাত লাগে, তাহলে খেলা দেখতে পারবে ? অতএব, খুশিতে আনন্দে খেলা দেখ, মায়াকে ভয় পেও না। মনোরঞ্জন মনে করো। যদি তা’ বাঘরূপে আসে, তুমি ভীত হ’য়োনা। এই স্মৃতি এবং উৎসাহ বজায় রাখ যে ব্রাহ্মণ জীবনের প্রতিটা মুহূর্ত উৎসব। তার মধ্যে এই খেলা দেখছ, খুশিতে নাচছ আর বাবার ব্রাহ্মণ পরিবারের বিশেষত্বের, গুণের গীত গাইছ আর আনন্দের সাথে ব্রহ্মা ভোজনও খাচ্ছ।
তোমাদের মতো শুদ্ধ ভোজন, স্মরণের ভোজন বিশ্বে কারও প্রাপ্ত হয়নি ! এই ভোজনকেই বলা হয় – দুঃখভঞ্জন ভোজন। স্মরণের ভোজন সব দুঃখ দূর ক’রে দেয়, কারণ শুদ্ধ অন্ন দ্বারা মন আর তন দুইই শুদ্ধ হয়ে যায়। যদি অশুদ্ধ ধনাগম হয়, তাহলে সেই অশুদ্ধ ধন খুশি অদৃশ্য করে দেয়, তোমাদের চিন্তিত ক’রে তোলে। অশুদ্ধ ধন যত আসে, মনে করো তুমি ধন পেলে এক লাখ কিন্তু তার সঙ্গে চিন্তা আসবে পদমগুণ আর চিন্তাকে তো সবসময় চিতা বলা হয়ে থাকে। তাহলে কেউ চিতায় বসে কীভাবে কখনো খুশি হতে পারে ! অথচ শুদ্ধ অন্ন মনকে শুদ্ধ বানায় আর সেই কারণে তোমাদের ধনও শোধন হয়ে যায়। স্মরণে থেকে বানানো অন্নকে মাহাত্ম্য দেওয়া হয়, সেইজন্য ব্রহ্মা ভোজনের মহিমা। যদি স্মরণে না বানাও আর খাও তো সেই অন্ন তোমাদের স্থিতি নিচে-ওপরে করতে পারে। স্মরণে বানানো আর স্বীকার করা (গ্রহণ) অন্ন ওষুধেরও কাজ করে আবার আশীর্বাদের কাজও করে। স্মরণের অন্ন কখনো ক্ষতি করতে পারে না, সেইজন্য প্রতিটা মুহূর্ত উৎসব পালন করো, মায়া যে রূপেই আসুক না কেন ! আচ্ছা ! মোহ রূপে যদি আসে তাহলে মনে করবে বাঁদরের খেলা দেখাতে এসেছে। খেলাকে সাক্ষী হয়ে দেখ, মায়ার ঘূর্ণাবর্তে নিজেকে ঠেলে দিও না। যদি ঘূর্ণাবর্তে পড়ো তো তোমরা ঘাবড়ে যাও। আজকাল ছোট ছোট বাচ্চাদের দিয়ে এমন মনোরঞ্জনের খেলা করায় যে তাদের উঁচুতেও উঠাবে, নিচেও নামাবে। সুতরাং এ’টা মনোরঞ্জন, খেলা। যেকোন রূপে আসুক, সেটা মিকি-মাউসের খেলা হিসেবে দেখ। যা আসে তা’ চলেও যায়। মায়া যেকোন রূপে আসে, এই মুহূর্তে এলো তো পরমুহূর্তে চলে গেল। তুমি তোমার শ্রেষ্ঠ স্থিতি থেকে মায়ার সঙ্গে চলে যেও না, মায়াকে আসতে দাও। তোমরা তার সাথে কেন চলে যাও ? খেলাতে এ’রকমই হয় – কিছু আসবে, কিছু যাবে, কিছু বদলাবে। যদি সীন না বদলায় তাহলে খেলা ভালোই লাগবে না। মায়াও যেকোন রূপে আসতে পারে, যে সীনই আসে, অবশ্যই তার বদল হতে হবে। অতএব, সীন বদল হতে দাও, কিন্তু তোমাদের শ্রেষ্ঠ স্থিতি বদল হতে দিও না। যদি কেউ কোনও খেলায় পার্ট প্লে করছে তাহলে তোমরাও তার সঙ্গে সেইভাবে দৌড়াদৌড়ি করবে কি ? যারা দর্শক তারা তো শুধু দেখতে থাকে, তাই না ! তাহলে মায়া যদি তোমাদের নিচে ফেলে দিতে আসে কিংবা যে কোনও স্বরূপে আসে, তোমরা কিন্তু তার খেলা দেখো। কীভাবে নিচে ফেলে দিতে এসেছে, তার রূপকে ক্যাচ করো আর খেলা মনে ক’রে সেই দৃশ্যকে সাক্ষী হয়ে দেখ। ভবিষ্যতের জন্য এবং স্ব-স্থিতিকে মজবুত বানানোর শিক্ষা নিয়ে এগিয়ে যাও।
সুতরাং শিবরাত্রির উৎসব অর্থাৎ উৎসাহ-উদ্দীপনা নিয়ে আসার উৎসব, শুধু আজকের দিনের জন্য নয়, বরং তোমাদের জন্য সদাই উৎসব আর উৎসাহ-উদ্দীপনা তোমাদের সাথেই আছে। এই স্লোগানকে সদা স্মরণে রাখ আর অনুভব করতে থাকো। এর বিধি শুধু দু’টো বিষয়ে – সদা সাক্ষী হয়ে দেখা আর বাবার সাথী হয়ে থাকা। সদা বাবার সাথী হয়ে থাকলে বাবার সঙ্গে সাক্ষী হয়ে দেখতে দেখতে সহজেই মায়াজিত হয়ে অনেক জন্মের জন্য জগৎজিত হয়ে যাবে। তাহলে বুঝেছ, কী করতে হবে ? স্বয়ং বাবা সব বাচ্চাকে গোল্ডেন অফার দিচ্ছেন সাথ দেওয়ার জন্য, সেইজন্য সদা সাথে থাকো। সাধারণতঃ, ডবল ফরেনার্স একলা থাকতে পছন্দ করে। তারা সাথে এইজন্য থাকে না কারণ কোনো বন্ধনে তারা বেঁধে না যায়, যেন স্বতন্ত্র থাকতে পারে। কিন্তু এই সঙ্গে সাথে থেকেও স্বতন্ত্র, বন্ধন অনুভব হবে না। আচ্ছা !
সুতরাং আজ এই দিন ডবল উৎসবের। বাস্তবে, জীবনও উৎসব আর স্মরণিকও উৎসব। বাপদাদা বিদেশের সব বাচ্চাকে সদা স্মরণ করেন আর আজও বিশেষ দিনের স্মরণ দিচ্ছেন, কেননা যে যেখান থেকেই এসেছে, সবার স্মরণ-পত্র নিয়ে এসেছে। তোমরা কার্ড, পত্র, টোলি এনে থাকবে। সুতরাং যে বাচ্চারা হৃদয়ের উৎসাহের স্মরণ-স্নেহ অথবা যে কোনো রূপে নিজের স্মরণ-চিহ্ন পাঠিয়েছে, তাদের সব বাচ্চাকে বাপদাদাও বিশেষ স্মরণের পদমগুণ রিটার্ণ দিচ্ছেন আর বাপদাদা দেখছেন যে প্রত্যেক বাচ্চার ভিতরে সেবার এবং সদা মায়াজিত হওয়ার উৎসাহ-উদ্দীপনা খুব ভালো। প্রত্যেক বাচ্চা নিজের শক্তি থেকেও সেবায় এগিয়ে যাচ্ছে আর এগিয়েই যেতে থাকবে। আর যারা প্রকৃত হৃদয় থেকে হৃদয়ের সমাচার বাবাকে দেয়, তো বাবাও প্রকৃত হৃদয়ের প্রতি খুশি হন, সেইজন্য সমাচারে হৃদয়ের যে কোনও ছোট ছোট বিষয় যা’ই আসে সে’সব বাবার বিশেষ স্মরণের বরদান দ্বারা সমাপ্ত হয়েই যাবে। বাবার খুশি হওয়া অর্থাৎ বাবার সহায়তায় সহজে তোমাদের মায়াজিত হওয়া, সেইজন্য তোমরা বাবাকে যা দিয়ে দিয়েছ, তা’ সমাচার রূপে, বা পত্র রূপে, অথবা মনখোলা অধ্যাত্ম বার্তালাপের রূপে, যখন বাবার সামনে রেখে দিয়েছ, দিয়ে দিয়েছ তো যে জিনিস কাউকে দেওয়া হয় সেই জিনিস নিজের থাকে না, তা’ অন্যের হয়ে যায়। যদি তোমার দুর্বলতার সঙ্কল্পও বাবার কাছে রেখে দিয়েছ, তবে সেই দুর্বলতাও তোমার থাকে না। তুমি দিয়ে দিয়েছ মানে তার থেকে মুক্ত হয়ে গেছ, সেইজন্য এটা স্মরণে রাখতে হবে, আমি বাবার কাছে রেখেছি মানে দিয়ে দিয়েছি। আর তো বিদেশে উৎসাহ-উদ্দীপনার তরঙ্গ ভালো চলছে। বাপদাদা বাচ্চাদের নির্বিঘ্ন হওয়ার উদ্যম আর সেবায় বাবাকে প্রত্যক্ষ করানোর উদ্যম দেখে উৎফুল্ল হন। আচ্ছা !
যারা, সদা অনাদি আর আদি রচনার আধ্যাত্মিক নেশায় থাকে, সদা প্রতি মুহূর্ত উৎসব সমান উদযাপন করে, সদা স্মরণ আর সেবার উৎসাহে থাকে, সদা মায়ার প্রতিটা পরিস্থিতিকে খেলা মনে ক’রে সাক্ষী হয়ে দেখে, সদা বাবার সাথে প্রতি কদমে সাথী হয়ে চলে, এই রকম সর্বশ্রেষ্ঠ ব্রাহ্মণ আত্মাদের অলৌকিক জন্মের অভিনন্দনের সাথে সাথে স্মরণ-স্নেহ আর নমস্কার। সবাই অতি স্নেহী, হৃদয় সিংহাসনাসীন বাচ্চাদের পবিত্র শিব জয়ন্তীর পদমগুণ স্মরণ-স্নেহ আর অভিনন্দন।
বরদানঃ-
সেই মাস্টার দাতা যে সদা এই অধ্যাত্ম ভাবনায় থাকে – সব আত্মা আমার সমান অবিনাশী উত্তরাধিকারের অধিকারী হোক। কারও খামতি বা দুর্বলতা না দেখে, তারা নিজের ধারণ করা গুণের, শক্তির সহযোগ দেয়। এতো এ’রকমই – এই ভাবনার পরিবর্তে একেও বাবা সমান বানাই, এই শুভ ভাবনা হোক। সেই সঙ্গে এই শ্রেষ্ঠ কামনা হোক, এই সকল আত্মা কাঙাল, দুঃখী, অশান্ত হওয়া থেকে শান্ত, সুখ-রূপ অপার ঐশ্বর্যশালী হয়ে উঠুক – তবেই বলা যাবে মাস্টার দাতা।
স্লোগানঃ-
সূচনাঃ- আজ মাসের তৃতীয় রবিবার, অন্তর্রাষ্ট্রীয় যোগ দিবস, বাবার সব বাচ্চা সন্ধ্যা ৬ : ৩০ থেকে ৭ : ৩০ টা পর্যন্ত নিজের বিশেষ আকার স্বরূপে স্থিত হয়ে বাপদাদার সাথে উঁচু লাইটের পাহাড়-চূড়ায় দাঁড়িয়ে সমগ্র বিশ্বকে পবিত্রতার কিরণ দিয়ে প্রকৃতি সহ সকল আত্মাকে সতঃপ্রধান হওয়ার সেবা করবেন।
➤ Daily Murlis in Bengali: Brahma Kumaris Murli Today in Bengali
➤ Email me Murli: Receive Daily Murli on your email. Subscribe!