13 June 2021 BENGALI Murli Today – Brahma Kumaris

June 12, 2021

Morning Murli. Om Shanti. Madhuban.

Brahma Kumaris

আজকের শিব বাবার অব্যক্ত মুরলি, বাপদাদা, মাধুবন। Brahma Kumaris (BK) Murli for today in Bengali. This is the Official Murli blog to read and listen daily murlis.

স্নেহ' আর 'শক্তি'র সামঞ্জস্য

আজ, যিঁনি তোমাদের স্মৃতিস্বরূপ তৈরি করেন, তিনি, সেই সর্বশক্তিমান বাবা চতুর্দিকের স্মৃতিস্বরূপ বাচ্চাদের দেখছেন l আজকের দিনে বাপদাদার স্নেহে সমাবিষ্ট হওয়ার সাথে সাথে স্নেহ আর শক্তি – দুইয়ের ব্যালেন্সড স্থিতির অনুভবের দিন l স্মৃতি দিবস অর্থাৎ স্নেহ আর শক্তি – দুইয়ের সমভাব হওয়ার বরদানের দিবস, কেননা যে বাবার স্মৃতিতে স্নেহে সম্পূর্ণরূপে নিমগ্ন হও, সেই ব্রহ্মাবাবা স্নেহ আর শক্তির অভিন্নতার শ্রেষ্ঠ সিম্বল l এই মুহূর্তে অতি স্নেহী, পরমুহূর্তে শ্রেষ্ঠ শক্তিশালী l স্নেহের ক্ষেত্রেও স্নেহ দ্বারা প্রত্যেক বাচ্চাকে নিরন্তর শক্তিশালী বানিয়েছেন l শুধু স্নেহে তিনি তাদের নিজের দিকে আকর্ষণ করেননি, বরং স্নেহ দ্বারা শক্তি সেনা বানিয়ে বিশ্বের সামনে সেবার্থে নিমিত্ত বানিয়েছেন l সদা ‘স্নেহী ভব’র সাথে ‘নষ্টমোহ কর্মাতীত ভব’র পাঠ পড়িয়েছেন l অন্ত পর্যন্ত বাচ্চাদের সদা স্বতন্ত্র আর সদা প্রিয় – নয়নের দৃষ্টি দ্বারা এই বরদানই দিয়েছেন l

আজকের দিনে চতুর্দিকের বাচ্চারা ভিন্ন ভিন্ন স্বরূপে, ভিন্ন ভিন্ন সম্বন্ধে সস্নেহে এবং বাবার সমান হওয়ার স্থিতির অনুভূতিতে মিলন উদযাপনের জন্য সূক্ষ্ম বতনে বাপদাদার কাছে পৌঁছেছে l কেউ বুদ্ধি দ্বারা আর কেউ দিব্য দৃষ্টি দ্বারা l বাপদাদা সব বাচ্চার স্নেহের আর সমান স্থিতির স্মরণ আর ভালোবাসা হৃদয় থেকে স্বীকার করেছেন এবং রিটার্ণে সব বাচ্চাকে ‘বাপদাদা সমান ভব’র বরদান দিয়েছেন এবং দিচ্ছেন l বাপদাদা জানেন যে বাচ্চাদের ব্রহ্মাবাবার প্রতি স্নেহ প্রবল l হয় তোমরা সাকারে প্রতিপালিত হয়েছ, অথবা এখন অব্যক্ত রূপে প্রতিপালিত হচ্ছ, কিন্তু বড় মা হওয়ার কারণে মায়ের প্রতি বাচ্চাদের ভালোবাসা স্বতঃই হয় l এই কারণে বাবা জানেন যে বাচ্চারা ব্রহ্মা মা’কে খুব মনে করে l কিন্তু স্নেহের প্রত্যক্ষ স্বরূপ সমান হওয়া l হৃদয়ে প্রকৃত ভালোবাসা যতটা আছে, সেই অনুযায়ী বাচ্চাদের মনে ততটাই ফলো ফাদার করার উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখা দেয় l এই অলৌকিক মায়ের অলৌকিক ভালোবাসা বিয়োগী বানায় না, সহজ যোগী রাজযোগী অর্থাৎ রাজা বানায় l বাচ্চাদের প্রতি অলৌকিক মায়ের অলৌকিক মমতা আছে – যেন প্রত্যেক বাচ্চা রাজা হয় l সবাই রাজা বাচ্চা হোক, প্রজা নয় l তোমরা প্রজা বানাও, প্রজা হও না l

আজ বতনে মাতা-পিতার অলৌকিক বার্তালাপ হচ্ছিল l বাবা ব্রহ্মা মাকে জিজ্ঞাসা করেন, বাচ্চাদের স্নেহের এই দিনে বিশেষ কি মনে আসে ? তোমাদেরও তাঁকে বিশেষভাবে মনে আসে, তাই না ! তোমাদের প্রত্যেকের নিজস্ব স্মৃতি আসে, আর সেই স্মৃতিতে তোমরা সমাহিত হও l আজকের দিনে বিশেষ অলৌকিক স্মৃতির জগত তৈরি হয় l প্রতি কদমে বিশেষ সাকার স্বরূপের চরিত্রের স্মরণ স্বতঃই আসে l পালনের স্মরণ, প্রাপ্তির স্মরণ, বরদানের স্মরণ আপনা থেকেই আসে l

তাইতো বাবাও ব্রহ্মা মাকে এটাই জিজ্ঞাসা করেছেন l তোমরা জানো, ব্রহ্মা কী বলতে পারেন ? বাচ্চারাই তো সংসার l ব্রহ্মা বলেন, অমৃতবেলায় প্রথমে তাঁর ‘সমান’ বাচ্চারা স্মরণে আসে, স্নেহী বাচ্চা আর সমান বাচ্চা l স্নেহী বাচ্চাদের সমান হওয়ার ইচ্ছা বা সঙ্কল্প থাকে, কিন্তু ইচ্ছার সাথে, সঙ্কল্পের সাথে সদা শক্তিশালী থাকে না, সেইজন্য সমান হওয়ার ক্ষেত্রে সামনের নম্বরের পরিবর্তে তারা পিছনে থেকে যায় l স্নেহ উৎসাহ-উদ্দীপনায় নিয়ে তো আসে, কিন্তু নানা সমস্যা স্নেহ আর শক্তি রূপের সমান স্থিতি তৈরিতে কখনো কখনো দুর্বল বানায় l সমস্যা সদা সমান হওয়ার স্থিতি থেকে দূরে করে দেয় l স্নেহের কারণে তোমরা বাবাকে ভুলতেও পার না, প্রকৃত অর্থে তোমরা পাকা ব্রাহ্মণ l যারা পশ্চাৎ অপসারণ করে, তোমরা এমন ব্রাহ্মণও নও, তোমরা অমরও বটে ! শুধু সমস্যা দেখে অল্প সময়ের জন্য সেই সময় তোমরা ঘাবড়ে যাও, সেইজন্য নিরন্তর স্নেহ আর শক্তির সমান স্থিতির অনুভব করতে পার না l

এই সময় অনুসারে বহুকালের নলেজফুল, পাওয়ারফুল, সাকসেসফুল স্থিতির অনুভাবী হয়ে গেছ l মায়ার, প্রকৃতির এবং আত্মাদের দ্বারা সৃষ্ট নিমিত্ত সমস্যার অনেকবারের অনুভাবী আত্মা তোমরা l নতুন কোনো বিষয় নয় l তোমরা ত্রিকালদর্শী ! সমস্যার আদি, মধ্য, অন্ত- এই তিনকেই জানো l অনেক কল্পের প্রশ্ন তো যেতেই দাও, কিন্তু এই কল্পের ব্রাহ্মণ জীবনেও বুদ্ধি দ্বারা বিজয়ী হওয়ায় অথবা সমস্যাকে পর করে অনুভাবী হওয়ায় তোমরা নতুন নও, পুরানো হয়ে গেছ l এমনকি যদি এক বছরেরও হও তাহলেও এই অনুভবে পুরানো l ‘নাথিং নিউ’ এই পাঠও তোমাদের পড়ানো হয়েছে সেইজন্য বর্তমান সময় অনুসারে এখন সমস্যায় ঘাবড়ে সময় অপচয় ক’র না l সময়ের অপচয়ে তোমাদের নম্বর পিছনে হয়ে যায় l

তাইতো ব্রহ্মা মা বলেছেন – এক ধরণের বাচ্চা বিশেষ স্নেহী আরেক হলো সমান হতে যাওয়া বাচ্চা, দু’ ধরণের বাচ্চাদের দেখে এই সঙ্কল্পই এসেছে যে বর্তমান সময় অনুসারে মেজরিটি বাচ্চাদের এখন সমান স্থিতির কাছাকাছি দেখতে চান l অনেকেই সমান স্থিতির কিন্তু মেজরিটির সমভাবের কাছাকাছি পৌঁছে যাওয়া উচিত – অমৃতবেলায় বাচ্চাদের দেখে বাবার সমান হওয়ার দিন মনে পড়ছিল l তোমরা ‘স্মৃতি-দিন’ স্মরণ করছিলে আর ব্রহ্মা মা সমান হওয়ার দিন’ স্মরণ করছিলেন l এই শ্রেষ্ঠ সঙ্কল্প সম্পন্ন করতে হবে অর্থাৎ স্মৃতি দিবসকে শক্তিশালী দিবসে পরিণত করতে হবে l স্নেহের এই প্রত্যক্ষ ফল মা-বাবা দেখতে চান l লালনপালনের বা বাবার বরদানের এটাই শ্রেষ্ঠ ফল l তোমরা সেই শ্রেষ্ঠ বাচ্চা, যারা মাতা-পিতাকে প্রত্যক্ষ ফল দেখাও l আগেও তোমাদের শোনানো হয়েছিল – অতি স্নেহের লক্ষণ এটাই, যে স্নেহী সে যাকে স্নেহ করে তার মধ্যে কোনরকম দুর্বলতা সহ্য করতে পারে না, সেইজন্য এখন তীব্রগতিতে সমান স্থিতির সদৃশলক্ষণযুক্ত হও l এটাই মায়ের স্নেহ l প্রতি কদমে ফলো ফাদার করে এগিয়ে চলো l ব্রহ্মাই একমাত্র বিশেষ আত্মা যাঁর মাতা-পিতা উভয় পার্ট সাকার রূপে স্থিরীকৃত হয়ে আছে l সেইজন্য তোমরা সব বাচ্চার বিচিত্র পার্টধারী মহান আত্মার ডবল স্বরূপ অবশ্যই স্মরণে আসে l যতই হোক, যিঁনি ব্রহ্মা, ‘মাতা-পিতা’, তাঁর হৃদয়ের শ্রেষ্ঠ আশা যে সবাই সমান হোক, এটাও তোমাদের স্মরণে রাখতে হবে l বুঝেছ ? আজ, স্মৃতি দিবসের শ্রেষ্ঠ সঙ্কল্প “সমান হতেই হবে” l হয় সঙ্কল্পে, অথবা বোলে, অথবা সম্বন্ধ-সম্পর্কে সমান অর্থাৎ শক্তিশালী হতে হবে l যত বড় সমস্যাই হোক, কিন্তু ‘নাথিং নিউ’ – এই স্মৃতি দ্বারা শক্তিশালী হয়ে যাবে, এতে অমনোযোগী হয়োনা, অমনোযোগিতায়ও নাথিং নিউ শব্দ ইউজ করো l যতই যা হোক, অনেকবারের বিজয়ী হওয়া কিন্তু নাথিং নিউ l এই বিধিতে সদা সফলতা প্রাপ্ত করতে থাকো l আচ্ছা !

সবাই অনেক উৎসাহ-উদ্দীপনার সাথে স্মৃতি দিবস উদযাপন করতে এসেছে l এমনকি যারা তিন পদ ভূমি দিয়েছে, তারাও এসেছে l তিন পদ দিলে আর তিন লোকের মালিক হয়ে গেলে, তাহলে তোমাদের দেওয়া কী হলো ! তবুও সেবার পুণ্য সঞ্চয় করায় তোমরা বিচক্ষণ হয়েছ, সেই বিচক্ষণতার জন্য তোমাদের অভিনন্দন l এক দিয়ে লক্ষ পাওয়ার বিধি আপন করায় তোমরা মনোবল বজায় রেখেছ, সেইজন্য স্মৃতি দিবসে এমন বিশেষ শক্তিশালী আত্মাদের ডাকা হয়েছে l বাবা মনোমুগ্ধকর চিটচ্যাট করছিলেন l যারা জায়গা দিয়েছে তারা বিশেষভাবে আমন্ত্রিত l বাবাও তাঁর স্থান দিয়েছেন, তাই না ? লিস্টে বাবারও নাম আছে, আছে না ! কোন স্থান দিয়েছেন ? এই রকম স্থান কেউ দিতে পারে না l বাবা ‘হৃদয়-সিংহাসন’ দিয়েছেন, কতো বড় স্থান ! এই সব স্থান তার মধ্যে এসে যাবে তো, না ? দেশ-বিদেশের সব স্থান যদি একত্রিত করো, তা’ও বড় স্থান কোনটা হবে ? পুরানো দুনিয়ায় থাকার কারণে তোমরা তো ইঁটের ভবন দিয়েছ, আর বাবা সিংহাসন দিয়েছেন – যেখানে তোমরা সদাই নিশ্চিন্ত বাদশাহ হয়ে বসে যাও l তবুও দেখ, যে কোনো ধরণের সেবার মহত্ত্ব আপনা থেকেই হয়- তা’ স্থান দ্বারা সেবা হোক, অথবা তোমাদের স্থিতি দ্বারা সেবা l সুতরাং স্থানের সেবারও অনেক মহত্ত্ব l কাউকে ‘হাঁ জী’ বলা, কাউকে ‘প্রথমে তুমি’ এটা বলার মাধ্যমে সেবা করারও মহত্ত্ব আছে l শুধু ভাষণ করা সেবা নয়, বরং যে কোনও সেবার বিধি দ্বারা মন্সা, বাচা, কর্ম, এমনকি বাসন মাজার সেবাতেও গুরুত্ব দেওয়া হয় l ভাষণ করে কারও যতটা পদপ্রাপ্তি হয়, যোগযুক্ত, যুক্তিযুক্ত স্থিতিতে স্থিত থেকে যে বাসন মাজে তারও ততটা শ্রেষ্ঠ পদপ্রাপ্তি হতে পারে l একজন, সে মুখ দ্বারা করে, আরেকজন, সে স্থিতি দ্বারা করে l সুতরাং সদা সবসময় সেবার বিধির মহত্ত্ব জেনে মহান হও l যে কোনও সেবা আর তার ফল প্রাপ্ত হবে না, এ’ হতে পারে না l যতই হোক, প্রকৃত হৃদয়ের প্রতিই প্রভু খুশি হন l যখন দাতা, বরদাতা খুশি হয়ে যান, তখন কোনো কিছুতে আর অভাব কী থাকবে ! বরদাতা বা ভাগ্যবিধাতা জ্ঞানদাতা ভোলাবাবাকে খুশি করা খুব সহজ l ভগবান খুশি তো কাজী তথা বিচারক ধর্মরাজের থেকেও তোমরা রক্ষা পাবে, মায়ার থেকেও বেঁচে যাবে l আচ্ছা !

চারিদিকে যারা সকল স্নেহ আর শক্তির সমান স্থিতিতে স্থিত থাকে, যারা, সদা মাতাপিতার শ্রেষ্ঠ আশা পূরণ করে সেই শ্রেষ্ঠ আশার সব দীপককে, সদা সব বিধি দ্বারা সেবার মহত্ত্বকে জানে, সদা প্রতি কদমে ফলো ফাদার ক’রে মাতাপিতাকে সবসময় স্নেহ আর শক্তি দ্বারা সমান হওয়ার ফল দেখায়, এই রকম স্মৃতিস্বরূপ সকল শক্তিশালী বাচ্চাদের সর্বশক্তিমান বাবার শক্তিশালী দিবসে স্মরণ-স্নেহ আর নমস্কার l

“সেবাকেন্দ্রের জন্য যারা তিন পদ ভূমি দিয়েছে সেই নিমিত্ত ভাই-বোনেদের সাথে অব্যক্ত বাপদাদার সাক্ষাৎকার:-“

বিশেষ সেবার প্রত্যক্ষ ফলের প্রাপ্তি দেখে তোমাদের খুশি হচ্ছে, তাই না ? ভবিষ্যৎ তো সঞ্চিত আছেই, কিন্তু বর্তমানও শ্রেষ্ঠ হয়ে গেছে l বর্তমান সময়ের প্রাপ্তি ভবিষ্যৎ থেকেও শ্রেষ্ঠ ! কারণ অপ্রাপ্তি আর প্রাপ্তির অনুভবের জ্ঞান এই সময়ে l ওখানে তোমরা জানবেই না যে অপ্রাপ্তি কী ! সুতরাং প্রভেদ জানা নেই আর এখানে প্রভেদের অনুভব আছে, সেইজন্য এই সময়ের প্রাপ্তির অনুভবের মহত্ত্ব আছে l যারাই সেবার নিমিত্ত হয়, তাদের জন্য গায়ন হয় ‘তাৎক্ষণিক দান মহাপুণ্য’ l যদি কোনো বিষয়ে কেউ নিমিত্ত হয় অর্থাৎ তাৎক্ষণিক দান করে, তাহলে তার রিটার্ণে মহাপুণ্যের অনুভূতি হয় l সেটা কী হয় ? যে কোনো সেবার পুণ্য এক্সট্রা ‘খুশি’, শক্তির অনুভূতি হয় l যখনই কোনো সফলতা-স্বরূপ হয়ে সেবা করো তো সেই সময় বিশেষ খুশির অনুভূতি করো, তাই না ! বর্ণন করো যে আজ খুব ভালো অনুভব হয়েছে ! কেন হলো ? বাবার পরিচয় দিয়ে সফলতার অনুভব করেছ l কেউ পরিচয় শুনে জেগে ওঠে কিংবা পরিচয় পেয়ে পরিবর্তন হয়ে যায়, সুতরাং তাদের প্রাপ্তির প্রভাব তোমাদের উপরেও পড়ে l তোমাদের হৃদয়ে খুশির গীত বাজতে শুরু করে – এটা প্রত্যক্ষ ফলের প্রাপ্তি l সুতরাং যে সেবা করে মানেই সে সদা প্রাপ্তির মেওয়া খায় l তাহলে যারা মেওয়া খায় তারা কী হয় ? তারা সুস্থ হয়, তাই না ! যদি ডাক্তাররাও কাউকে দুর্বল দেখে তাহলে কী বলে ? ফল খাও কেননা আজকাল তোমরা যখন অন্যান্য পুষ্টিকর জিনিস খাও, যেমন মাখন খাও, ঘী খাও – সে’ সব তো হজম করতে পারো না l আজকাল শুধু শক্তির জন্য তারা ফল দেয় l তাহলে সেবারও প্রত্যক্ষ ফল পাওয়া যায় l এমনকি যদি কর্মও করো, কর্মেরও খুশি হয় l মনে করো, পরিষ্কার করছ, পরিষ্কার করায় যখন স্থান ঝকমক করে তো সত্যিকার হৃদয় দিয়ে করার কারণ জায়গা ঝকমক করছে দেখে খুশি তো হয়, তাই না !

কোনও সেবার পুণ্যের ফল আপনা থেকেই প্রাপ্ত হয় l পুণ্যের ফল জমাও হয় আর এখনও লাভ হয় l মনে করো, তুমি যদি কোনো কাজ করো, সেবা করো তাহলে অন্য যে কেউ তোমাকে বলবে – খুব ভালো সেবা করেছ, অস্থিপঞ্জর (হাড়পাঁজরা) এক ক’রে অক্লান্তভাবে করেছ l তাহলে এ’ রকম শুনে খুশি তো হও, তাই না ! সুতরাং ফল তো লাভ করলে, করলে তো ? তোমরা মুখে সেবা করো বা হাতে করো, কিন্তু সেবা মানেই মেওয়া l তাহলে এই সেবারও নিমিত্ত হয়েছ, না ! সেবায় গুরুত্ব দিয়ে তোমরা গৌরবান্বিত হও l অতএব, পরেও সেবার গুরুত্ব জেনে এইভাবে সদা কোনো না কোনও সেবায় বিজি থাকো l যখন তোমাদের কোনো জিজ্ঞাসু না থাকে, এমন ভেবো না যে কী সেবা করি ? যদি কোনো প্রদর্শনী না হয়, কোনো ভাষণ না হয়, তাহলে ব’লো না কি সেবা করতে পারি ? না ! সেবার ফিল্ড অনেক বড় ! যদি কেউ বলে-আমার সেবার সুযোগ মেলে না – তো সেটা কেউ বলতে পারে না l বায়ুমন্ডল তৈরি করার কতো সেবা রয়ে গেছে l তোমরাই তো সেই, যারা প্রকৃতিকেও পরিবর্তন করবে l তাহলে প্রকৃতি কীভাবে পরিবর্তন হবে ? ভাষণ করবে কি ! বৃত্তি দ্বারা বায়ুমন্ডল তৈরি হবে l বায়ুমন্ডল তৈরি হওয়া অর্থাৎ প্রকৃতির পরিবর্তন হওয়া l সুতরাং এই তো কতো সেবা আছে ! এখনও কি হয়েছে ? এখন তো প্রকৃতি পেপার নিচ্ছে l সুতরাং প্রতিটা সেকেন্ড সেবার জন্য, অনেক বড় ফিল্ড থাকছে l কেউ বলতে পারে না যে আমি সেবার চান্স পাই না l এমনকি যদি অসুস্থ হও, তাহলেও সেবার চান্স আছে l যে কেউই হোক, তা’ সে নিরক্ষর হোক, বা লেখাপড়া জানা, যে কোনও প্রকারের আত্মা, সবার জন্য সেবার উপায় অনেক বড় l সুতরাং সেবার চান্স কখন পাওয়া যাবে – এটা নয়, পেয়েই আছ l

অলরাউন্ড সেবাধারী হতে হবে l কর্মণা সেবার জন্যও ১০০ মার্কস আছে l যদি বাচা আর মন্সা ঠিক আছে কিন্তু কর্মণার প্রতি উৎসাহ নেই তো ১০০ মার্কস খুইয়ে ফেললে ! অলরাউন্ড সেবাধারী অর্থাৎ সব রকমের সেবা দ্বারা যারা ফুল মার্কস নেয় l একে বলা হবে অলরাউন্ড সেবাধারী l তাহলে তোমরা কি এইরকম হয়েছ ? দেখ, শুরুতে যখন বাচ্চাদের ভাট্টি বানানো হয়েছিল তখন কর্মণার পাঠ তাদেরকে কতো পাকাপোক্ত ভাবে করানো হয়েছিল ! তাদের মালি যেমন বানানো হয়েছে, তেমন মুচিও বানানো হয়েছে l যারা বাসনপত্র মাজবে তাদেরও যেমন তৈরি করা হয়েছে, সেইসঙ্গে যারা ভাষণ করবে তাদেরও তৈরি করা হয়েছে, কারণ এর জন্য মার্কসও বাদ দেওয়া যায় না l ওখানেও লৌকিক পঠন-পাঠনে, মনে করো কোনো সহজ-সাধারণ সাবজেক্টে ফেল হয়ে যাও, সেটা তোমার বিশেষ সাবজেক্ট নয়, বরং থার্ড বা ফোর্থ নম্বর সাবজেক্ট, কিন্তু সেটাতেও যদি ফেল হও তো পাস উইথ অনার হতে পারবে না l টোটালে তো মার্কস কম হয়ে গেল, তাই না ! এইভাবে সব সাবজেক্ট চেক করো, সব সাবজেক্টসে মার্কস নিয়েছ কিনা l যেমন তোমরা (তিন পদ ভূমি দেওয়ার ) নিমিত্ত হয়েছ, সেই সেবা করেছ, সেই পুণ্য সঞ্চয় করেছ এবং তার জন্য মার্কস প্রাপ্ত হবে l কিন্তু ফুল মার্কস নিয়েছ নাকি না – এটা চেক করো l যে কোনো কর্মণা সেবা, সেটাও প্রয়োজন, কারণ কর্মণাতেও ১০০ মার্কস আছে, কম নয়, এখানে সব সাবজেক্টে ১০০ মার্কস l ওখানে তো ড্রইংয়ে কম মার্কস হবে, হিসাবে (গণিতে) বেশি হবে l এখানে সব সাবজেক্ট গুরুত্বপূর্ণ l সুতরাং এমন না হয় যে মন্সা, বাচায় মার্কস সঞ্চয় করলে আর কর্মণায় পিছনে রয়ে গেলে আর মনে ভেবে নিলে – আমি বিশাল মহাবীর l সবকিছুতে মার্কস নিতে হবে l একেই বলে সেবাধারী l তাহলে, এটা কোন গ্রুপ ? অলরাউন্ড সেবাধারী নাকি স্থান দেওয়ার সেবাধারী ? ভালো করেছ যে একে সময়োপযোগী বানিয়েছ l যতটা তোমরা উপযুক্তভাবে এটা সফল করো, সেই অনুযায়ী তোমরা মালিক হও l সময়ের পূর্বে সময়োপযোগী করে তোলা – এটা বিচক্ষণ হওয়ার লক্ষণ l সুতরাং তোমরা বিচক্ষণতার কাজ করেছ l বাপদাদাও খুশি হন যে তোমরা সেই বাচ্চা যারা সাহস বজায় রাখো l আচ্ছা !

বরদানঃ-

যে বাচ্চারা এক সর্বশক্তিমান বাবার স্নেহী হয়ে থাকে, তারা আপনা থেকেই সকল আত্মার স্নেহী হয়ে যায় l এই গুহ্য রহস্য যে বুঝতে পারে সে রাজযুক্ত, যোগযুক্ত বা দিব্যগুণে যুক্তিযুক্ত হয়ে যায় l এই রকম রাজযুক্ত আত্মা সব আত্মাকে সহজেই খুশি করে নেয় l যারা এই রহস্য জানতে পারে না তারা কখনো অন্যকে অসন্তুষ্ট করে আর কখনো স্বয়ং অসন্তুষ্ট থাকে, সেইজন্য সদা স্নেহী হওয়ার রহস্য জেনে রাজযুক্ত হও l

স্লোগানঃ-

Daily Murlis in Bengali: Brahma Kumaris Murli Today in Bengali

Email me Murli: Receive Daily Murli on your email. Subscribe!

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top