11 July 2021 BENGALI Murli Today – Brahma Kumaris
Read and Listen today’s Gyan Murli in Bengali
10 July 2021
Morning Murli. Om Shanti. Madhuban.
Brahma Kumaris
আজকের শিব বাবার সাকার মুরলি, বাপদাদা, মাধুবন। Brahma Kumaris (BK) Murli for today in Bengali. This is the Official Murli blog to read and listen daily murlis.
"ব্রহ্মা মাতা-পিতার তাঁর ব্রাহ্মণ বাচ্চাদের প্রতি শুভ আশাগুলি"
আজ বিশ্বের সকল আত্মাদের সর্ব আশা পূরণকারী বাপদাদা তাঁর শুভ আশাগুলির রুহানী দীপকদেরকে দেখছিলেন ।যেমন বাবা সকলের শুভ আশাগুলি পূরণকারী, তো বাচ্চারাও হল বাবার শুভ আশাগুলিকে পূরণকারী। বাবা বাচ্চাদের আশাগুলিকে পূর্ণ করেন, বাচ্চারা বাবার। বাচ্চাদের প্রতি বাবার শুভ আশা কী, তা কী তোমরা জানো ? প্রতিটি ব্রাহ্মণ আত্মা হল বাবার আশার দীপক ।দীপক অর্থাৎ সদা জাগ্রত জ্যোতি। সদা জাগ্রত দীপক খুব সুন্দর দেখায়। কিন্তু যদি বারে বারে নিভু নিভু হচ্ছে আবার জ্বলে উঠছে, তবে কেমন লাগবে ! বাবার সকল আশাকে পূরণকারী অর্থাৎ সদা ঝলমল করে জ্বলতে থাকা দীপকদেরকে দেখে বাপদাদাও প্রফুল্লিত হন।
আজ বাপদাদা নিজেদের মধ্যে আন্তরিক বার্তালাপ করছিলেন। বাপদাদার সামনে সর্বদা কারা থাকে ? বাচ্চারা তো থাকে। তাই আন্তরিক বার্তালাপ তো বাচ্চাদেরই তো করবেন তাই না ! শিব বাবা ব্রহ্মাকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন যে, বাচ্চাদের প্রতি এখনও পর্যন্ত কোনও শুভ আশা রয়েছে কী ? তার প্রত্যুত্তরে ব্রহ্মা বাবা বললেন, বাচ্চারা নম্বর অনুক্রমে নিজ নিজ শক্তি অনুসারে, স্নেহ অনুসারে, অ্যাটেনশন অনুসারে সদা বাবার শুভ আশা গুলিকে পূরণ করতে তারা অবশ্যই তৎপর, প্রত্যেকের অন্তরের উৎসাহ উদ্দীপনাও অবশ্যই রয়েছে – যখন বাবা আমাদের সকল আশা পূরণ করেছেন, তাহলে আমরাও বাবার সকল আশাকে পূরণ করেই দেখাব। কিন্তু কর্ম সম্পন্ন করে ওঠার ক্ষেত্রে নম্বরক্রম রয়েছে। ভাবা আর করে দেখানো – এতে প্রভেদ হয়ে যায় । কোনো কোনো বাচ্চা এমনও হয়, যারা ভাবা আর করে দেখানো – দুইয়েই সমান। কিন্তু সকলে এমন নয়। যে সময় বাবার স্নেহ আর বাবার দ্বারা প্রাপ্তি গুলিকে স্মৃতিতে নিয়ে আসে যে, বাবা আমাকে কি বানিয়ে দিয়েছেন আর কী দিয়েছেন, তো স্নেহ স্বরূপ হওয়ার কারণে অত্যন্ত উৎসাহ উদ্দীপনায় উড়তে থাকে যে, বাবা যা যা বলেছেন তা আমি করে দেখাব। কিন্তু যখন সেবায় বা সংগঠনে আসে অর্থাৎ প্র্যাকটিক্যালি করার জন্য কর্মে আসতে হয়, এই যে বলা হয়েছিল সংকল্প আর কর্ম সমান হয়ে যায় অর্থাৎ সেই উৎসাহ উদ্দীপনা থাকে, আবার কখনো কর্মে আসার সময়ে সংগঠনের সংস্কার বা মায়া বা প্রকৃতির দ্বারা আগত সারকমস্ট্যান্স (পরিস্থিতি) রূপী পেপার কখনো কখনো কঠিন বলে অনুভব করায়। সেইজন্য স্নেহ থাকার কারনে যে উৎসাহ উদ্দীপনার সংস্কার ছিল, সেটা পরিস্থিতির কারণে, সংস্কারের কারণে প্রভেদ সৃষ্টি করে দেয়। তারপর ভাবে – এটা না হলেই ভালো হত। ‘এটা যদি হত’, ‘ওটা যদি হত’ এই চক্রাবর্তের মধ্যে চলে আসে। এটা তো হওয়ার ছিল, কিন্তু হয়ে গেল ওটা, সেই কারণে এটা হল – এটা, ওটার চক্রাবর্তের মধ্যে পড়ে যায়। সেইজন্য উৎসাহ উদ্দীপনার সংকল্প আর প্র্যাকটিক্যাল কর্মের মধ্যে পার্থক্য এসে যায়।
ব্রহ্মা বাবা বাচ্চাদের প্রতি তাঁর বিশেষ দুটি আশার কথা বলছিলেন। কারণ ব্রহ্মা বাবাকে তো সাথে করে নিয়ে যেতে হবে আর সাথে থাকতেও হবে। শিব বাবাই নিয়ে যাবেন কিন্তু রাজত্বে সমগ্র কল্পে তিনি সাথে তো থাকবেন না। ব্রহ্মা বাবা সাথে থাকবেন আর শিব বাবা তো সাক্ষী হয়ে দেখবেন। তফাৎ তো আছেই। ব্রহ্মা বাবার বাচ্চাদের সদাই সমান বানানোর শুভ আশা গুলি ইমার্জ হতে থাকে। এমনিতে বাপদাদা দু’জনেরই দায়িত্ব, কিন্তু যেহেতু সাকার লোকে রচয়িতা তিনি, সেইজন্য সাকার রচয়িতার সাকার রচনার প্রতি স্নেহ স্বভাবতই থাকে। আগেও বলেছি না – বাচ্চা তো মা বাবা দু’জনেরই, তবুও বাচ্চার প্রতি মায়ের স্নেহ সহজাতভাবে বেশীই থাকে। কেননা মা’ই তো বাচ্চাকে লালন পালন করে। বাচ্চাদেরকে বাবার মতো গড়ে তোলেন তো মা’ই। সেইজন্যই তো মা এর মমতার কথা বলা হয়। এ হল শুদ্ধ মমতা, মোহ যুক্ত নয়, বিকার যুক্ত নয়। যেখানে মোহ থাকে সেখানে দুশ্চিন্তা থাকে আর যেখানে রুহানী মমতা বলো বা স্নেহ বলো – সেটা যদি থাকে, তবে বাচ্চাদের জন্য মায়ের তখন গর্ব হবে, দুশ্চিন্তা নয়। অতএব ব্রহ্মা মা বলো কিম্বা বাবা বলো – দুই রূপেই বাচ্চাদের প্রতি কীরূপ বিশেষ আশা রেখে থাকেন ? এক তো বাবা হিসেবে আশা রয়েছে আর দ্বিতীয় হল ব্রাহ্মণ পরিবারের হিসেবে শুভ আশা রয়েছে। বাবার প্রতি শুভ আশা হল যে – যেমন বাপদাদা সাক্ষীও আবার সাথীও, তেমনি বাপদাদার মতো সাক্ষী আর সাথী, সময় অনুসারে দুটি ভূমিকাই সর্বদা পালনকারী মহান আত্মা যাতে হয়। অতএব বাবা হিসেবে শুভ আশা হল – বাপদাদার মতো সাক্ষী আর সাথী যাতে হয়।
একটি বিষয়ে বাপদাদা উভয়েই বাচ্চাদের প্রতি পূর্ণ রূপে সন্তুষ্ট, সেটা কী ? প্রতিটি বাচ্চার বাপদাদার প্রতি অত্যন্ত ভালবাসা রয়েছে, বাপদাদার প্রতি স্নেহ কখনোই ছিন্ন হয় না আর স্নেহের কারণেই শক্তিশালী হয়েই হোক কিম্বা যথা শক্তি হোক ধারণ করে চলেছে। ব্রাহ্মণ আত্মা রূপী মুক্তো হয়ে স্নেহের সুতোতে গাঁথা তো অবশ্যই হয়ে আছে। স্নেহের সুতো তো বেশ শক্তপোক্ত, সেটা ছিন্ন হতে পারবে না। স্নেহের মালা তো লম্বা, বিজয় মালা হল ছোট। বাপদাদার স্নেহের উপরে বাচ্চারা সমর্পিতও। কেউ বাবার স্নেহের থেকে যতই আলাদা করার চেষ্টা করণ না কেন, বাচ্চারা স্নেহে এতখানি ডুবে রয়েছে যে, বিচ্ছিন্ন হওয়াই সম্ভব নয় । সকলের অন্তরের স্নেহ থেকে – “আমার বাবা” শব্দই নির্গত হয় । তো স্নেহের মালাতে তো সন্তুষ্ট কিন্তু বাবার সমান শক্তিশালী বা ‘যদি’, ‘তবে’র চক্রাবর্ত থেকে বিযুক্ত – এতে সর্বদা শক্তিশালী না হয়ে যথাশক্তি রয়েছে । বাপদাদা এতে বাবার সমান সদা শক্তিশালী হয়ে ওঠার শুভ আশা সব বাচ্চাদের উপরে রাখেন। যেখানে সাক্ষী হতে হবে, সেখানে কখনো সাথী হয়ে যায় আর যেখানে সাথী হতে হবে, সেখান সাক্ষী হয়ে যায়। যে সময়ে যে রূপ হওয়ার প্রয়োজন সেই মতো হওয়া – একেই বলা হয় বাবার সমান হওয়া। স্নেহের মালা তো তৈরী আছেই কিন্তু বিজয় মালাও এত লম্বা তৈরী যেন হয়ে যায় – বাপদাদা এই শুভ আশাই রাখেন। ১০৮ কেন, বাপদাদা সম্মতি দিয়ে দিচ্ছেন – যত যত জন বিজয়ী হতে চাও, তত বড় বিজয় মালা প্রস্তুত হতে পারে। কেবল ১০৮ এর সীমাতেই থেকো না। আছেই তো কেবল ১০৮ নম্বর, আমি তো তাতে আসতেই পারব না – এমন কোনো ব্যাপার নেই। হও।
বিজয়ী হওয়ার জন্য এক ব্যালেন্সের প্রয়োজন। স্মরণ আর সেবার ব্যালেন্স তো সব সময়েই শুনতে থাকো, কিন্তু স্মরণ আর সেবার ব্যালেন্স চাইলেও থাকছে না কেন ? বুঝতে পারা সত্ত্বেও কর্মে তা আসছে না কেন ? তার জন্য আরও একটি ব্যালেন্সের প্রয়োজন রয়েছে, সেই ব্যালেন্সের বিষয়ে ব্রহ্মা বাবার দ্বিতীয় আশা রয়েছে। একটি আশা তো হল বাবার প্রতি – সমান হওয়ার। দ্বিতীয় আশা হল পরিবারের প্রতি, সেটা হল – প্রত্যেক ব্রাহ্মণ আত্মার প্রতি সদা শুভ ভাবনা – শুভ কামনা কর্মে যেন থাকে, কেবল সংকল্পেই বা চাওয়াতেই যেন সীমাবদ্ধ না থাকে। সেটা তো চাও ঠিকই তোমরা। কেউ কেউ বলেও, শুভ ভাবনা রাখতে তো চাই, কিন্তু করার সময় বদলে যায়। বিস্তারিত ভাবে এ বিষয়ে তো আগে বলেছি। পরিবারের প্রতি শুভ ভাবনা – শুভ কামনা কেন থাকে না, এর কারণ ? যেমন বাবার প্রতি অন্তরের ভালোবাসা, প্রাণের ভালবাসা রয়েছে আর অন্তরের প্রাণের স্নেহের নিদর্শন, তা হল ‘অটুট’। বাবার বিষয়ে যতই কেউ ভুল বোঝানোর চেষ্টা করুক না কেন অথবা কেউ এসে যেমন কথাই বলুক না কেন বা কখনো সাকারে স্বয়ং বাবাও কোনো বাচ্চাকে অগ্রচালিত করবার জন্য কোনো ইশারা বা শিক্ষা যদি দেন, কিন্তু যেখানে স্নেহ থাকে সেখানে শিক্ষা বা পরিবর্তনের ইশারা মিস আন্ডারস্ট্যান্ডিং তৈরী করবে না। সর্বদা এই ভাবনাই তখন থাকে বা ছিল যে, বাবা যা কিছুই বলবেন তাতেই কল্যাণ রয়েছে। কখনোই স্নেহের অভাব ঘটেনি, বরং আরোই নিজেকে বাবার হৃদয়ের অনুভব করে গেছ তোমরা, এই আপন অনুভব হওয়াই হল স্নেহ । একেই বলা হয় হৃদয়ের প্রাণের স্নেহ, যে স্নেহ ভাবনাকে পরিবর্তন করে দেয় । বাবার প্রতি তোমাদের এমন স্নেহ আছে না ? ঠিক সেই ভাবেই ব্রাহ্মণ পরিবারের মধ্যেও যেন আন্তরিক স্নেহ থাকে। যেমন বাবার প্রতি স্নেহের নিদর্শন হল – সর্বদা বাবা বললেন আর সাথে সাথেই “আজ্ঞে বাবা”, অনুরূপ ভাবেই ব্রাহ্মণ পরিবারের প্রতি সর্বদা এই রকমই আন্তরিক স্নেহ যেন থাকে, ভাবনা পরিবর্তনের বিধি যেন থাকে। তখন বাবা আর পরিবারের স্নেহের ব্যালেন্স, স্মরণ আর সেবার ব্যালেন্স স্বতঃতই প্র্যাকটিক্যালে দেখতে পাওয়া যাবে। তো বাবার স্নেহের পাল্লাটা ভারী কিন্তু সর্ব ব্রাহ্মণ পরিবারের স্নেহের পাল্লা বদলে যেতে থাকে। কখনো ভারী কখনো হাল্কা। কারো প্রতি ভারী, কারো প্রতি হাল্কা। বাবা আর বাচ্চাদের স্নেহের ব্যালেন্স যেন থাকে – এটা হল ব্রহ্মা বাবার দ্বিতীয় শুভ আশা। বুঝতে পেরেছ ? এতে বাবার সমান হও।
স্নেহ হল এমন শ্রেষ্ঠত্ব, যাতে আমি করেছি, বা অন্য কেউ করেছে, এতে দুটোতেও খুশীর অনুভব যাতে হয়। বাপদাদা যেমন স্থাপনার কার্যে নিমিত্ত হয়েছেন, কিন্তু বাচ্চাদেরকে যখন সেবার সাথী বানিয়েছেন, প্র্যাকটিক্যালে বাচ্চারা যদি বাবার থেকেও বেশী সেবা করে, করতে থেকেছে, তো বাপদাদা সর্বদা বাচ্চাদেরকে সেবাতে অগ্রচালিত করেছেন, স্নেহের কারণে খুশী হতেন। এই সংকল্প কখনোই হৃদয়ের স্নেহ-ভূমিতে উৎপন্ন হতেই পারে না যে, বাচ্চারা কেন সেবাতে এগিয়ে যাবে, নিমিত্ত তো আমি হয়েছি, আমিই তো একে নিমিত্ত বানিয়েছেন। স্বপ্নেও পর্যন্ত এই ধরনের ভাবনা উৎপন্ন হয়নি। একে বলা হয় – সত্যিকারের স্নেহ, নিঃস্বার্থ স্নেহ, রুহানী স্নেহ ! সদা বাচ্চাদেরকে আগে নিমিত্ত বানাতে বাপদাদা আনন্দ পেয়েছেন। বাচ্চারা করল, কিম্বা বাবা করলেন, আমিত্ব বোধই কখনো থাকেনি। এটা আমার কাজ, এটা আমার ডিউটি, আমার অধিকার রয়েছে, আমারই বুদ্ধি এতে, আমারই প্ল্যান – না। স্নেহ – এই আমিত্ব বোধের অবসান ঘটিয়ে দেয়। তুমি করেছ মানেই আমি করেছি, আমি করেছি মানেই তুমি করেছ – এই শুভ ভাবনা বা শুভ কামনা, একে বলা হয় – অন্তরের স্নেহ। স্নেহ থাকলে কে আপন কে পর মনে হয় না। স্নেহ থাকলে স্নেহের বুলি সেটা অতি সাধারণই হোক কিম্বা সেটা যদি একটু বাঁকা শব্দও হয়, তাতে কোনো কিছুই ফিল হয় না। এই ফিলিংস আসবে না যে – ও কেন এ’কথাটা বললো ? স্নেহী, স্নেহী আত্মার মনে কোনরূপ সংশয় বা অনুমানের জন্ম হতে দেবে না – এই রকম হবে, সেই রকম হবে ! সদা স্নেহ ভাজনের প্রতি ফেথ থাকার কারণে তার অতি লঘু কথাকেও মনে হবে, সে নিশ্চয়ই কিছু ভেবেই তো বলেছে। অকারণ বা ব্যর্থ বোল বলে মনে করবে না। যেখানে স্নেহ থাকবে, সেখানে ফেথ (বিশ্বাস) অবশ্যই থাকবে। স্নেহ না থাকলে বিশ্বাসও থাকবে না। তাই ব্রাহ্মণ পরিবারের প্রতি স্নেহ বা ফেথ থাকা – একে বলা হয় ব্রহ্মা বাবার দ্বিতীয় আশাকে পূর্ণ করা। যেমন বাবার প্রতি স্নেহের কারণে বাপদাদা সার্টিফিকেট দিয়েছেন, তেমনই ব্রাহ্মণ পরিবারের প্রতি যে স্নেহের পরিভাষা শোনানো হল বা সেই বিধির দ্বারা প্রত্যক্ষ কর্মে তাকে নিয়ে আসা – এই সার্টিফিকেটও নিতে হবে। এই ব্যালেন্স থাকতে হবে। যতখানি বাবার প্রতি, ততখানিই বাচ্চাদের প্রতি – এই ব্যালেন্স না থাকার কারণে সেবায় যখন এগিয়ে যেতে থাকো, তখন নিজেরাই বলতে থাকো – সেবায় মায়া চলে আসে। আর কখনো বায়ুমন্ডলকে দেখে এও বলতে থাকো যে, এই রকম সেবার থেকে তো যোগ (স্মরণে থাকা) করাই ভালো ছিল, সবকিছুর পরিবর্তে বরং ভাট্টিতে বসিয়ে দাও। সময়ে সময়ে তোমাদের মনে এই রকমের সংকল্প জাগে।
বাস্তবে সেবা মায়াজিৎ বানায়, মায়াকে ডেকে আনে না। কিন্তু সেবায় মায়া কেন আসে ? এর মূল কারণ হল অন্তরের স্নেহ নেই, স্নেহ নির্ভর করে পরিবারের উপরে। কিন্তু আন্তরিক স্নেহ ত্যাগের ভাবনার উদ্রেক করে। সেটা না থাকার কারণে কখনো কখনো সেবা মায়ার রূপ ধারণ করে আর এইরকম সেবাকে সেবার খাতায় জমা করা যাবে না – তা তিনি ৫০ – ৬০টি সেন্টার খোলার নিমিত্তই হোন না কেন ! কিন্তু সেবার খাতে কিম্বা বাপদাদার হৃদয়ে সেবার জমা খাতা ততটাই হবে, যতটুকু মায়ার থেকে মুক্ত থেকে, যোগযুক্ত থেকে করবে। কারো হয়ত দুটি সেন্টার, দেখলে হয়ত মনে হবে কেবল দুটিই তো সেন্টারের ইঞ্চার্জ, আর কেউ হয়ত ৫০ টি সেন্টারের ইঞ্চার্জ দেখা যাচ্ছে, কিন্তু দুটি সেবা কেন্দ্র যদি নির্বিঘ্ন থাকে, মায়ার থেকে, অস্থিরতার থেকে, স্বভাব সংস্কারের রেষারেষির থেকে মুক্ত থাকে, তবেই দুটি সেন্টার রয়েছে যার, ৫০ টি সেন্টার না থাকলেও সেবার খাতায় বেশী জমা হবে। এতে খুশি হয়ে যেও না যে, আমার ৩০ টা সেন্টার আছে কি ৪০ টা সেন্টার আছে। বরং মায়ার থেকে মুক্ত সেন্টার ক’টি ? সেন্টারও বাড়িয়ে যাচ্ছ, মায়াকেও বাড়িয়ে যাচ্ছ – এমন সেবা বাবার রেজিস্টারে জমা হয় না। তোমরা ভাবতে পারো – আমরা তো খুব ভালো সেবা করছি, দিন – রাত না ঘুমিয়ে সেবা করছি, খাওয়াও একবার কোনো রকমে বানিয়ে খেয়ে নিচ্ছি – এতটা ব্যস্ত থাকি ! কিন্তু সেবার সাথে সাথে মায়াতেও বিজি থাকো না তো ? এটা কেন হল, এটা কীভাবে হয়ে গেল, এ এইরকম করল কেন, আমি কেন করলাম না, আমার অধিকার, তোর অধিকার, কিন্তু বাবার অধিকার কোথায় গেল ? সেবা অর্থাৎ যেখানে স্ব এর এবং সকলের সহযোগিতা বা সন্তুষ্টতার ফল প্রত্যক্ষ রূপে দেখতে পাওয়া যাবে। যদি সকলের শুভ ভাবনা শুভ কামনার সহযোগিতা বা সন্তুষ্টতা প্রত্যেক্ষ ফলের রূপে প্রাপ্ত না হয়, তাহলে চেক করো – কারণ কী, কেন ফল প্রাপ্ত হল না ? আর বিধিকে চেক করে চেঞ্জ করো।
এই রকম ভাবে সত্যিকারের সেবার বৃদ্ধি ঘটানোই হল সেবার বৃদ্ধি হওয়া। কেবল নিজেই মনে মনে খুশী হয়ে যেও না যে, আমি খুব ভালোই সেবা করছি। বরং বাবার হৃদয়কে খুশী করো আর ব্রাহ্মণ পরিবারের আশীর্বাদ পাও। একেই বলা হয় – “সত্যিকারের সেবা” । লোক দেখানো সেবা তো অনেক বড়সড় হয়, কিন্তু যেখানে হৃদয় দিয়ে সেবা হবে, সেখানে আন্তরিক স্নেহের সেবা অবশ্যই থাকবে। একেই বলা হয় পরিবারের প্রতি ব্রহ্মা বাবার আশা পূর্ণ করা। এই ছিল আজকের রুহ – রুহান (অন্তরঙ্গ আলাপচারিতা)। বাদবাকি পরে আবার শোনাব। আজ হল ভারতবাসী বাচ্চাদের এই সীজনের লাস্ট চান্স। সেইজন্য বাপদাদা কী চান – সেটাই শোনালাম। একটা সার্টিফিকেট (শংসাপত্র) পাশের নিয়েছ, এখন দ্বিতীয় শংসাপত্রটি নিতে হবে। আচ্ছা ! এখন বাবার আশার দীপক সদা যেন জাজ্বল্যমান থাকে ।
চতুর্দিকের সর্ব ব্রাহ্মণ কুল দীপক, সর্বদা বাপদাদার সকল শুভ আশাকে পূরণ করতে সমর্থ, সদা বাবার আর পরিবারের অন্তরের স্নেহের ব্যালেন্স রাখতে সমর্থ, সদা অন্তর দিয়ে সেবার দ্বারা সেবার খাতা বেশী পরিমাণে জমা করতে পারবে, এইরূপ বাবার সকল আশার দীপকদেরকে, সত্যিকারের অন্তর দিয়ে সেবা করে থাকা সেবাধারীদেরকে বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর নমস্কার ।
বরদানঃ-
ড্রামার পয়েন্টের যে অনুভাবী হবে, সে সদা সাক্ষী ভাবের স্টেজে থেকে একরস, অচল, অটল স্থিতির অনুভব করতে থাকে। ড্রামার পয়েন্টের অনুভাবী আত্মা কখনোই খারাপের মধ্যে খারাপকে না দেখে ভালোটাকেই কেবল দেখবে অর্থাৎ স্ব-কল্যাণের রাস্তাই সে কেবল দেখতে পাবে। অকল্যাণের খাতা তার সমাপ্ত। কল্যাণকারী বাবার বাচ্চা তোমরা, যুগও হল কল্যাণকারী – এই নলেজ আর অনুভবের অথরিটির দ্বারা অচল – অটল হও।
স্লোগানঃ-
➤ Daily Murlis in Bengali: Brahma Kumaris Murli Today in Bengali
➤ Email me Murli: Receive Daily Murli on your email. Subscribe!