10 April 2022 Bengali Murli Today | Brahma Kumaris

Read and Listen today’s Gyan Murli in Bengali

April 9, 2022

Morning Murli. Om Shanti. Madhuban.

Brahma Kumaris

আজকের শিব বাবার সাকার মুরলি, বাপদাদা, মাধুবন। Brahma Kumaris (BK) Murli for today in Bengali. This is the Official Murli blog to read and listen daily murlis.

"উড়তি কলার আধার উৎসাহ-উদ্দীপনার পাখা"

আজ, সব বাচ্চার স্নেহ সম্পন্ন মিলন-ভাবনা আর সম্পূর্ণ হওয়ার শ্রেষ্ঠ কামনার উৎসাহ-উদ্দীপনার শুভ ভাইব্রেশন দেখছেন বাপদাদা। সব বাচ্চার মধ্যে যে বাচ্চারা এই কল্পে প্রথমবার বাবার সঙ্গে মিলিত হচ্ছে তাদের উৎসাহ আর যারা এই কল্পে অনেকবার মিলিত হয়েছে সেই বাচ্চাদের উৎসাহ সকলের নিজের নিজের। যাকে তোমরা নিজেদের ভাষায় বলে থাকো নতুন বাচ্চা আর পুরানো বাচ্চা। কিন্তু সবাই অতি পুরানো থেকেও পুরানো। কারণ পুরানো পরিচিতি, বাবার দিকে, ব্রাহ্মণ পরিবারের দিকে আকর্ষণ করে এখানে নিয়ে এসেছে। নতুন আর পুরানা এটা শুধু মাত্র চিহ্নিত করার জন্য বলা হয়ে থাকে। সুতরাং নতুন বাচ্চাদের উৎসাহ-উদ্দীপনা এটাই যে, অল্প সময়ের মধ্যে অনেক দ্রুতবেগে উড়ে বাবা সমান হয়ে দেখায়। পুরানো বাচ্চাদের শ্রেষ্ঠ সঙ্কল্প এটাই যে, বাপদাদার থেকে যা পালনা প্রাপ্ত হয়েছে, ধন-ভান্ডার প্রাপ্ত হয়েছে, তার রিটার্ণ যেন বাবার সামনে সদা রাখতে পারে।

উৎসাহ-উদ্দীপনা দুইই শ্রেষ্ঠ। আর এই উৎসাহ-উদ্দীপনা পাখা হয়ে উড়তি কলার দিকে নিয়ে যাচ্ছে। উড়তি কলার পাখা অবশ্যই জ্ঞান-যোগ, কিন্তু প্রত্যক্ষ স্বরূপে সারা দিনচর্যায় সবসময়, সব কর্মে তোমাদের উৎসাহ-উদ্দীপনা উড়তি কলার আধার। যেমনই কার্য হোক, তা’ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার হোক বা বাসন মাজার অথবা সাধারণ কর্মই হোক, কিন্তু তার মধ্যেও উৎসাহ-উদ্দীপনা ন্যাচারাল আর নিরন্তর হবে। এমন বলা হয়নি, যখন জ্ঞানের পাঠ পড়ছ বা অন্যদের পড়াচ্ছ কিংবা স্মরণে বসেছ বা স্মরণে বসতে অন্যদের জন্য ব্যবস্থা করছ কিংবা আধ্যাত্মিক সেবায় বিজি আছ তো সেই সময় শুধু উৎসাহ-উদ্দীপনা হবে আর সাধারণ কর্ম যদি হয় তাহলে স্থিতি সাধারণ হয়ে যাবে – এটা উড়তি কলার লক্ষণ নয়। উড়তি কলার শ্রেষ্ঠ আত্মা সদা উৎসাহ-উদ্দীপনার পাখায় উড়তেই থাকবে। তাইতো বাপদাদা সব বাচ্চার উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখছেন। পাখা তো সবার আছে কিন্তু কখনো কখনো উৎসাহ-উদ্দীপনায় উড়তে উড়তে ক্লান্ত হয়ে যায়। কোনো ছোট-বড় কারণ তৈরি হয় অর্থাৎ প্রতিবন্ধকতা আসে, কখনো তো ভালোবাসার সাথে পার করে দেয়, কিন্তু কখনো ঘাবড়ে যায়। যাকে তোমরা বলো কনফ্যুজ্ড হয়ে যায়। সেইজন্য সহজে পার না করতে পারায় ক্লান্ত হয়ে যায়, কিন্তু অল্প অল্প ক্লান্ত হয়ে গেলেও তাদের লক্ষ্য শ্রেষ্ঠ, গন্তব্য অতি প্রিয়, সেইজন্য উড়তে শুরু করে দেয়। শ্রেষ্ঠ লক্ষ্য আর প্রিয় ঠিকানা এবং বাবার ভালোবাসার অনুভব ক্লান্তির কারণে নিচের স্থিতিতে থেমে থাকতে দেয় না। সেইজন্য আবার উড়তে শুরু করে। তাইতো বাপদাদা বাচ্চাদের এই খেলা দেখতে থাকেন, তবুও বাবারই ভালোবাসা তাদের থেমে থাকতে দেয় না। ভালোবাসার বিষয়ে তোমাদের মেজরিটি পাস করে। সেইজন্য প্রতিবন্ধকতা তোমাদের যতই থামানোর চেষ্টা করুক বা থামিয়ে দিক, যদিও বা তোমরা কখনো কখনো ভাবো যে, বড়ই কঠিন, এর থেকে তো যেমন ছিলাম সেই রকমই হয়ে যাই। এতদসত্ত্বেও তোমাদের ইচ্ছা পাস্ট লাইফে কোনও আনন্দ খুঁজে পায় না। কারণ প্রথমে তো এই পরমাত্ম-ভালোবাসা আর দেহধারীদের ভালোবাসা দুইয়ের মধ্যের প্রভেদ তোমাদের সামনে রয়েছে। তাইতো উড়তে উড়তে যখন স্থির কলায় এসে যাও তখন দুই রাস্তার মাঝখানে উপস্থিত হও আর ভাবো – এদিকে যাবো নাকি ওদিকে যাবো ! কোথায় যাবো ! কিন্তু পরমাত্ম-ভালোবাসার অনুভব বিভ্রান্তকে (কনফ্যুজ্ড) ‘অমর ও দেবতুল্য’ (সুরজিৎ) করে তোলে আর উৎসাহ-উদ্দীপনার ডানা প্রাপ্ত হয়। সেইজন্য এই ব্যাপারে ভাবলেও স্থির কলা তথা অচল অবস্থা থেকে উড়তি কলায় উড়ে যাও। বিষয় খুব ছোট ছোট হয় কিন্তু সেই সময় দুর্বল শক্তি হওয়ার কারণে বড় মনে হয়। যেমন, যে শরীরে দুর্বল হয় তার এক গ্লাস জল উঠাতেও কঠিন লাগে আর যার আন্তরিক শক্তি প্রবল তার দু’ বালতি জল তোলা খেলা মনে হয়। এইরকমই ছোট একটা বিষয়কে তোমাদের কাছে বড় ব’লে অনুভব হতে থাকে। সুতরাং উৎসাহ-উদ্দীপনার পাখা সদা ওড়াতে থাকে। প্রতিদিন অমৃতবেলায় নিজের সামনে সারাদিন কোন্ স্মৃতিতে উৎসাহ-উদ্দীপনায় থেকেছো – সেই উৎসাহ-উদ্দীপনার ভ্যারাইটি পয়েন্টস ইমার্জ হতে দাও। আমি জ্যোতির্বিন্দু, বাবাও জ্যোতির্বিন্দু, ঘরে ফিরে যেতে হবে তারপরে রাজ্যে আসতে হবে – শুধু এই এক বিষয়ের একই পয়েন্ট কখনো কখনো বাচ্চাদের বোর করে দেয়। তারপরে ভাবে নতুন কিছু চাই। কিন্তু প্রতিদিনের মুরলীতে উৎসাহ-উদ্দীপনার ভিন্ন ভিন্ন পয়েন্টস থাকে। সেই উৎসাহ-উদ্দীপনার বিশেষ পয়েন্ট নিজের কাছে নোট করে রাখো। অনেক বড় লিস্ট বানাতে পারো। ডায়েরিতে নোট করছো তো বুদ্ধিতেও নোট করো। যখন বুদ্ধিতে ইমার্জ না হয় তখন ডায়েরী থেকে ইমার্জ করো তাহলে ভ্যারাইটি পয়েন্টস প্রতিদিন নতুন উৎসাহ-উদ্দীপনা বৃদ্ধি করবে। মনুষ্য আত্মার নেচার এটাই যে, তারা ভ্যারাইটি পছন্দ করে, সেইজন্য হয় জ্ঞানের পয়েন্ট মনন করো কিংবা আত্মিক আলাপচারিতা করো। সারাদিন বিন্দু স্মরণ করতে থাকলে বোর হয়ে যাবে। যেমনই হোক, বাবাও বিন্দু, তুমিও বিন্দু। সঙ্গমযুগে তুমি হিরো পার্টধারী, জিরোর সাথে হিরোও হও। শুধু জিরো নও। সঙ্গমযুগে হিরো হওয়ার কারণে সারাদিনভর ভ্যারাইটি ভূমিকা (পার্ট) পালন করো। সারা কল্পে আমি জিরোর কী কী পার্ট ছিলো আর এই সময় আমার হিরো পার্ট কী, কার সঙ্গে আমার পার্ট, কত সময় কোন্ পার্ট প্লে করতে হবে, সেই ভ্যারাইটি রূপের সাথে জিরো হয়ে নিজের হিরো পার্টের স্মৃতিতে থাকো। স্মরণেও ভ্যারাইটি রূপের সাথে কখনো বীজরূপ স্থিতিতে থেকে, কখনো ফরিস্তা রূপে, কখনো আত্মিক রূপে আত্মিক বার্তালাপে থাকো। কখনো বাবার থেকে প্রাপ্ত ধনভান্ডারের একেকটা রত্নকে সামনে নিয়ে এসো। যে সময় যেমন ইচ্ছা হবে সেই ভাবে তাঁকে স্মরণ করো। যে সময়ে যে সম্বন্ধের স্নেহ চাও সেই সম্বন্ধে বাবার সাথে মিলন উদযাপন করো, সেইজন্য বাবা সর্ব-সম্বন্ধে তোমাদের নিজের বানিয়েছেন আর তোমরাও বাবাকে সর্ব-সম্বন্ধে নিজের বানিয়েছ। শুধু এক সম্বন্ধ নয়, ভ্যারাইটি সম্বন্ধ আছে তো না? কিন্তু একটা বিষয় লক্ষ্য রাখতে হবে যে, বাবা ব্যতীত, বাবার ধনভাণ্ডারের প্রাপ্তি ব্যতীত আর কেউ যেন স্মরণে না আসে। ভ্যারাইটি প্রাপ্তি, ভ্যারাইটি ধনভান্ডার, ভ্যারাইটি সম্বন্ধ, ভ্যারাইটি খুশির বিষয় আছে এবং উৎসাহ-উদ্দীপনার ভ্যারাইটি পয়েন্টস আছে। সেই বিধিতে ইউজ করো। বাবা আর তুমি এটাই সেফটির রেখা। এই স্মৃতির রেখার বাইরে এসো না। ব্যস্, এই রেখা পরমাত্ম-ছত্রছায়া, যতক্ষণ এই ছত্রছায়ার রেখার ভিতরে আছ ততক্ষণ মায়ার কোনো সাহস নেই। তারপরে পরিশ্রম কী, প্রতিবন্ধকতা কী, বিঘ্ন কী – এই শব্দে অবিদ্যা হয়ে যাবে। যেমন, আদি স্থাপনের সময় যখন সত্যযুগের আত্মাদের প্রবেশ হতো, তখন সেই আত্মাদের বিকার কী, দুঃখ কী, মায়া কী – এইসব শব্দের অবিদ্যা থাকতো। বাচ্চাদের এই অনুভব আছে তো না ? পুরানো যারা তারা তো এই বিষয়ে জানে। এই ভাবে যে বাবা আর আমি – এই স্মৃতির রেখার ছত্রছায়ায় থাকে, তাদের এই বিষয়ে অবিদ্যা হয়ে যায়, সেইজন্য সদা সেফ থাকে, সদা বাবার হৃদয়ে থাকে। তোমাদের সকলের বেশি পছন্দ হয় হৃদয়, তাই না ! উপহার হিসেবে হার্টই বানিয়ে নিয়ে আসো। কেকও হার্টের আকৃতির বানাও, বক্স বানাও সেটাও হার্টের মতো। তাহলে থাকছ তো হার্টেই না ? বাবার হার্টের দিকে মায়া আসতে পারে না। যেমন, জঙ্গলও যদি আলোকোজ্জ্বল করে দেওয়া হয় তো জঙ্গলের রাজা সিংহও আসতে পারে না, পালিয়ে যায়। কত লাইট আর মাইট বাবার হার্ট ! তার সামনে মায়ার কোনও রূপ আসতে পারে না। তাহলে পরিশ্রম দ্বারা সেফ হয়ে গেছ তো না ! জন্মও সহজে হয়েছে, জন্ম নিতে পরিশ্রম কি লেগেছে? বাবার পরিচয় পেয়েছ, চিনেছ আর সেকেন্ডে অনুভব করেছ – বাবা আমার, আমি বাবার। সহজে জন্ম হয়েছে, লক্ষ্যহীনভাবে ঘুরে বেড়াতে হয়নি। তোমাদের দেশরূপীঘরে বাবা বাচ্চাদের নিমিত্ত বানিয়ে পাঠিয়েছেন। তাঁকে খুঁজতে হয়নি বা বিভ্রান্তিতে এদিকে ওদিকে যেতে হয়নি। ঘরে বসে বাবাকে পেয়ে গেছ, তাই না ! তোমরা এখন ভারতে আসো অন্তরের ভালোবাসায় মিলন উদযাপনের জন্য। কিন্তু তোমরা তো ওখানেই পরিচয় প্রাপ্ত করেছ, জন্ম ওখানেই হয়েছে তো না? জন্ম অতি সহজে হয়েছে তো পালনাও তো অতি সহজভাবে প্রাপ্ত করো। শুধু অনুভব করো, তোমরা যাবেও সহজে। বাবার সাথেই যেতে চাও তো না, নাকি ধর্মরাজপুরীতে অপেক্ষা করবে ! সবাই একসাথে যেতে তো চাও, তাই না ! তোমাদের সকলের এই দৃঢ় সঙ্কল্প আছে কি যে আমরা সাথে আছি আর একসাথে ফিরে যাবো; আর ভবিষ্যতে ব্রহ্মাবাবার সাথে রাজত্বে যাবো এবং পার্ট প্লে করবো – এইরকম দৃঢ় সঙ্কল্প আছে তো না? যদি চলতে চলতে তোমরা ক্লান্ত হয়ে যাও তাহলে থেমে যাবে, তখন কী করবে ? কারণ বাবা তো সেই সময় অপেক্ষা করবেন না। এখন অপেক্ষা করছেন, এখন সময় দিয়েছেন, সেই সময় করবেন না অপেক্ষা। সেই সময় সেকেন্ডে উড়ে যাবেন। এখন নতুন নতুন বাচ্চাদের জন্য লেট হয়েছে কিন্তু টু লেট-এর বোর্ড এখনও লাগানো হয়নি। এখন তো নতুন নতুন বাচ্চাদের আসার জন্য নতুন দুনিয়া অপেক্ষা করে আছে যাতে তারাও লাস্ট সো ফাস্ট আর ফার্স্ট নম্বর পর্যন্ত পৌঁছে যায়। সাথে যাওয়ার জন্য সবাই তৈরি হয়েছ তো না? এই কল্পে যারা প্রথমবার এসেছে, বাপদাদা তাদের অভিনন্দন জানাচ্ছেন। ছোট ছোট বাচ্চাদের প্রতি বড়দের ভালোবাসা থাকে। সুতরাং বাবার আর বড় ভাই-বোনেদের তোমাদের প্রতি বিশেষ ভালোবাসা আছে। অতি প্রিয় হয়ে গেছ তো না ! নতুন বাচ্চারা অতি প্রিয়। নতুন হোক বা পুরানো হোক ফার্স্ট আসতে সকলে ফাস্ট গতি বজায় রাখো। ছত্রছায়ায় থাকো, সদা হৃদয়ে থাকো, এটাই সবচাইতে সহজ তীব্রগতি।

নিজেকে নিজে কখনো বোর ক’রো না। সদা নিজে নিজের জন্য ভ্যারাইটি রূপে উৎসাহ-উদ্দীপনা ইমার্জ করো ডবল বিদেশিদের কেউ কেউ কখনো কখনো এটাও ভাবে যে, আমাদের কালচার আর ইন্ডিয়ার কালচারের মধ্যে বিস্তর ফারাক। সেইজন্য ইন্ডিয়ান কালচার কখনো পছন্দ হয় কখনো হয় না। কিন্তু এটা তো না ইন্ডিয়ান কালচার, না বিদেশের কালচার। এটা তো ব্রাহ্মণ কালচার। ব্রহ্মাকুমার, ব্রহ্মাকুমারী এই নাম সকলের পছন্দ তো না ? ব্রহ্মাবাবার প্রতিও তোমাদের খুব প্রীতি-ভালোবাসা আছে আর বি. কে. জীবনও তোমাদের অতি প্রিয়। কখনো কখনো শ্বেত বস্ত্রের পরিবর্তে তোমাদের রঙিন বস্ত্র মনে আসে, কারণ শ্বেত বস্ত্র তাড়াতাড়ি ময়লা হয়ে যায়। যখন তোমরা দপ্তরে (অফিস) যাও বা কোথাও এমন স্থানে যদি যাও তো যে ড্রেস তোমরা পরিধান করো তার জন্য বাপদাদা নিষেধ করেন না, কিন্তু সেই বৃত্তিতে পরিধান ক’রো না যে, আমাদের ফরেন কালচার, এটা আমার পার্সোনালিটি – এই নীতিতে পরিধান ক’রো না। সেবাভাব থেকে যদিও বা পরো, পার্সোনালিটির উদ্দেশ্যে নয়। ব্রাহ্মণ জীবনের লক্ষ্য থাকুক। সেবার্থে, আবশ্যকতা অর্থে যদি পরিধান করো তাহলে কোনও নিষেধাজ্ঞা নেই। কিন্তু সেটাও নিমিত্ত হওয়া আত্মাদের দিয়ে ভেরিফাই করাও। এমন নয় যে, বাপদাদা তো অনুমতি দিয়ে দিয়েছেন তাহলে আবার আপনি কেন নিষেধ করছেন। কখনো কখনো তোমরা খুব হাসির কথা বলে থাকো। যে শব্দ তোমাদের আপন উদ্দেশ্যের জন্য হয় তা’ তোমরা মনে রাখো, কিন্তু তার পিছনে যে নিয়ম-নীতির বিষয় থাকে সেটা তোমরা ভুলে যাও। সুকৌশলী হওয়াটা বাপদাদার ভালো লাগে কিন্তু সেই কৌশল লিমিটে থাকা উচিত, আনলিমিটেড যেন না হয়। ভোজনপান করো, পরিধান করে, খেলো – কিন্তু লিমিট বজায় রেখে। সুতরাং কোন কালচার পছন্দ ? যা ব্রহ্মাবাবার কালচার তা’ ব্রহ্মাকুমার, কুমারীদের কালচার, পছন্দ তো না? তোমাদের মধ্যে একটা ব্যাপার খুব ভালো যে পরিষ্কারভাবে বলে দাও। সবাই একরকম নয় – কেউ কেউ এইরকম হয় যারা নিজের দুর্বলতা বর্ণন করে, কিন্তু হুইমজিকাল অর্থাৎ খামখেয়ালি হয়ে যায়। বারবার স্মৃতিতে এটাই নিয়ে আসতে থাকে – আমি দুর্বল…। এত কোমল হয়ো না। যদি দুর্বলতার বিষয়েই ভাববে তবে তোমাদের মধ্যে যে বিশেষত্ব আছে সেটাই ভুলে যাবে আর দুর্বলতাকেই বারবার ভাবতে থাকবে। দুর্বলতা অবশ্যই বাবাকে শোনাও কিন্তু যখন বাবাকে দিয়েই দিয়েছ তো সেগুলো কার কাছে রয়েছে? তাহলে কেন এত ভাবো আমি এইরকম . . . বাবাকে দিয়ে দিয়েছ তো না ! তোমরা বাপদাদাকে পত্র লিখে দুর্বলতা সব দিয়ে দাও কিংবা পত্র লিখে বাপদাদার ঘরে রেখে আসো, তারপরে আবার ভাবো যে, কোনো উত্তর তো পাওয়া হলো না ! এইভাবে বাপদাদা উত্তর দেন না। যে খামতি তুমি বাপদাদাকে দিয়ে দিয়েছ, বাপদাদা সেই স্থানে তোমাকে শক্তি, খুশি, উৎসাহ-উদ্দীপনা ভরে দেন। আর বাপদাদা যা দেন তা’ তোমরা গ্রহণ করো না, শুধু ভাবতে থাকো যে উত্তর তো পেলাম না ! বাবা যা দেন সেগুলো নেওয়ার প্রয়াস করো। উত্তরের অপেক্ষা ক’রো না – শক্তি, খুশি নিতে থাকো। তারপরে দেখ কত ভালো উৎসাহ-উদ্দীপনা থাকে। যে মুহূর্তে নিজের দুর্বলতা সম্পর্কে লেখ অথবা নিমিত্ত হওয়া আত্মাদেরকে শোনাও তার মানে দিয়ে দিয়েছ অর্থাৎ সমাপ্ত। এখন কী প্রাপ্তি হচ্ছে সেই বিষয়ে ভাবো। বাপদাদার কাছে প্রত্যেকের থেকে কত পত্র আসে, বাপদাদা উত্তর দেন না কিন্তু যা আবশ্যক তা’ তিনি রিটার্ন দেন এবং যা কিছু খামতি আছে তিনি পূরণ করে দেন। আর বাকি স্মরণ-স্নেহ তো তিনি প্রতিদিনই দেন। এমন কোনো দিন আছে যেদিন স্মরণ-স্নেহের প্রাপ্তি হয়নি ? বাপদাদা সবাইকে প্রতিদিন দু’-তিন পেজের পত্র লেখেন। (মুরলী) এত বড় পত্র রোজ রোজ কেউ কাউকে লেখে না ! যতই তোমাদের প্রিয় হোক কেউ এতবড় পত্র লিখেছে ? মুরলী পত্রই তো না ! তোমরা যা লিখেছ এতো তারই রেসপন্স, তাই না ? তাহলে, এতবড় পত্র তিনি লেখেনও, বলেনও – তোমরা যে বিশেষ পত্র লেখ তার বিশেষ রিটার্নও দেন, কেননা, তোমরা অতি প্রিয়, হারানিধি তোমরা। বাপদাদা রিটার্ণে এক্সট্রা শক্তি আর খুশি দেন। শুধু বুদ্ধিকে সদা কেয়ারফুল আর ক্লিয়ার রাখো। আগেও যেমন তোমাদের বলা হয়েছিলো, এই সমস্ত বিষয় নিজের বুদ্ধি থেকে বের করে দাও। এই বিষয়গুলো রেখে দিলেও বুদ্ধি ক্লিয়ার হয় না, সেইজন্য বাবা যে রিটার্ন দেন তা’ মিক্স হয়ে যায়। কখনও তোমরা এটা মিস্ করো।

কখনো কখনো কিছু বাচ্চা কী করে… আজ বাবা তোমাদের আচার-আচরণ সম্পর্কে শোনাচ্ছেন। কেউ কেউ ভাবে সেবা তো করছি কিন্তু বাবার প্রতিজ্ঞা তিনি সদা সহায়ক – এই সেবাতে তো সহায় হননি। সফলতা কম হয়েছে। বাপদাদা কেন সহায়তা করেননি ? তারপরে আবার ভাবে হয়তো আমি যোগ্য নই। আমি সেবা করতে পারি না, আমি দুর্বল শক্তি। ব্যর্থ ভাবে, কিন্তু যদি কোনো বাচ্চা সেবার্থে সাহায্যের জন্য বাবার সামনে সঙ্কল্পও করে তো খোলামনে করো। কিন্তু তার রিটার্ন সেবার সময়ই বাপদাদা দেন – শুধু এক বিধি আপন করে নাও। যত কঠিন সেবাই হোক কিন্তু সেবাও বুদ্ধির দ্বারা বাবাকে অর্পণ করে দাও। আমি করেছি – সফলতা হয়নি, আমি কোথা থেকে এলো ? করন-করাবনহার বাবার দায়িত্ব ভুলে নিজের উপরে কেন নিয়েছ ? এটাই ভুল হয়ে যায়। বাবার সেবা, বাবা অবশ্যই করবেন। বাবাকে সামনে রাখো, নিজেকে সামনে রেখো না। আমি এটা করেছি, এই ‘আমি’ শব্দ সফলতাকে দূরে করে দেয়। বুঝেছ ! আচ্ছা।

সদা উৎসাহ-উদ্দীপনায় উড়তে থাকা চারিদিকের তীব্র পুরুষার্থী আত্মাদের, সদা বাবার হৃদয়ে থাকা বিশেষ মণিসমূহকে, সদা বাবা আর আমি এই স্মৃতির ছত্রছায়ায় থেকে সদা স্থির কলা-অবরোহন কলা পার করে উড়তি কলায় এগিয়ে যাওয়া, সদা নিজেকে ভ্যারাইটি পয়েন্টস দ্বারা খুশি আর নেশায় রেখে সামনে এগিয়ে যাওয়া শ্রেষ্ঠ আত্মাদের বাপদাদার স্মরণ-স্নেহ আর নমস্কার।

বরদানঃ-

ব্রাহ্মণ জীবন আনন্দের জীবন, কিন্তু আনন্দে থাকার অর্থ এটা নয় যে, যা মনে এলো সেটাই করলে, মত্ত হয়ে রইলে। এই অল্পকালের সুখের আনন্দ বা অল্পকালের সম্বন্ধ-সম্পর্কের আনন্দ সদাকালের প্রসন্নচিত্ত স্থিতি থেকে আলাদা। যা ইচ্ছা বলছ, যা ইচ্ছা করছ – আমি তো আনন্দে মেতে থাকি – এইরকম অল্পকালের মনমর্জি হয়োনা। সদাকালের আত্মিক অলৌকিক আনন্দে থাকো – সেটাই যথার্থ ব্রাহ্মণ জীবন। আনন্দের সাথে কর্মের গুহ্য গতির জ্ঞাতাও হও।

স্লোগানঃ-

Daily Murlis in Bengali: Brahma Kumaris Murli Today in Bengali

Email me Murli: Receive Daily Murli on your email. Subscribe!

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top