09 May 2021 BENGALI Murli Today – Brahma Kumaris

May 8, 2021

Morning Murli. Om Shanti. Madhuban.

Brahma Kumaris

আজকের শিব বাবার সাকার মুরলি, বাপদাদা, মাধুবন। Brahma Kumaris (BK) Murli for today in Bengali. This is the Official Murli blog to read and listen daily murlis.

"নিশ্চয় বুদ্ধি বিজয়ী রত্নদের লক্ষণসমূহ"

আজ বাপদাদা তাঁর চতুর্দিকের নিশ্চয়বুদ্ধি বিজয়ী বাচ্চাদেরকে দেখছেন । প্রতিটি বাচ্চার নিশ্চয়ের লক্ষণসমূহকে দেখছেন। নিশ্চয়ের বিশেষ লক্ষণসমূহ হল – ১ ) যেমন নিশ্চয় তেমন কর্মে, বাণীতে সকল সময় চেহারায় আত্মিক নেশা প্রতিভাত হবে । ২ ) প্রতিটি কর্মে, সংকল্পে, বিজয় সহজ প্রত্যক্ষ ফলের রূপে অনুভূত হবে । পরিশ্রমের রূপে নয়, বরং প্রত্যক্ষ ফল বা অধিকারের রূপে বিজয় অনুভব হবে । ৩ ) নিজের শ্রেষ্ঠ ভাগ্য, শ্রেষ্ঠ জীবন বা বাবা এবং পরিবারের সম্বন্ধ – সম্পর্কের দ্বারা এক পার্সেন্টও সংশয় সংকল্প মাত্রও হবে না। ৪ ) কোশ্চেন মার্ক সমাপ্ত, সব বিষয়ে বিন্দু হয়ে বিন্দু লাগিয়ে থাকবে। ৫ ) নিশ্চয়বুদ্ধি সব সময় নিজেকে দুশ্চিন্তাহীন সম্রাট (বেফিকর বাদশাহ) সহজ আর স্বতঃই অনুভব করবে অর্থাৎ বারেবারে স্মরণে নিয়ে আসার পরিশ্রম করতে হবে না। আমি সম্রাট, এটা বলবারও পরিশ্রম করতে হবে না, বরং সদা স্থিতির শ্রেষ্ঠ আসন বা সিংহাসনে স্থিতই রয়েছে। যেমন লৌকিক জীবনে পরিস্থিতি অনুসারে স্থিতি তৈরী হয়, দুঃখের কিম্বা সুখের, সেই স্থিতির অনুভূতিতেই স্বাভাবিকভাবে থাকে, বারে বারে পরিশ্রম করে না যে – আমি সুখী বা আমি দুঃখী। নিশ্চিন্ত সম্রাটের স্থিতির অনুভব স্বতঃতই সহজ হয়ে থাকে। অজ্ঞানী জীবনে পরিস্থিতি অনুসারে স্থিতি তৈরী হয, কিন্তু শক্তিশালী অলৌকিক ব্রাহ্মণ জীবনে পরিস্থিতি অনুযায়ী স্থিতি হয় না, বরং বেফিকর বাদশাহ’র স্থিতি বা শ্রেষ্ঠ স্থিতি বাপদাদার দ্বারা প্রাপ্ত হওয়া নলেজের লাইট – মাইটের দ্বারা, স্মরণের শক্তির দ্বারা, যাকে বলা হয়ে থাকে ‘জ্ঞান আর যোগের শক্তিগুলির উত্তরাধিকার’, যা বাবার দ্বারা প্রাপ্ত হয় । তো ব্রাহ্মণ জীবনে বাবার বর্সার দ্বারা বা সদ্গুরুর বরদানের দ্বারা বা ভাগ্যবিধাতার দ্বারা প্রাপ্ত হওয়া শ্রেষ্ঠ ভাগ্যের দ্বারা স্থিতি প্রাপ্ত হযে থাকে। যদি পরিস্থিতির আধারে স্থিতি হয়, তাহলে শক্তিশালী কে হল ? পরিস্থিতি পাওয়ারফুল হয়ে গেল – তাই না ! আর পরিস্থিতির আধারে স্থিতি যে বানাবে, সে কখনোই অচল, অটল থাকতে পারবে না। যেমন অজ্ঞানী জীবনে এখনই দেখলে খুব আনন্দে নাচছে, পরক্ষণেই উল্টে পড়ে রয়েছে। তো অলৌকিক জীবনে এই রকম অস্থিরতার স্থিতি হয় না। পরিস্থিতির আধারে নয়, বরং নিজের উত্তরাধিকার আর বরদানের আধারে বা নিজের শ্রেষ্ঠ স্থিতির আধারে পরিস্থিতিকে পরিবর্তনকারী হবে। তো নিশ্চয় বুদ্ধি এই কারণে সদা বেফিকর বাদশাহ। কেননা চিন্তা হয়ে থাকে কোনো অপ্রাপ্তি অথবা কোনো কিছুর অভাব হওয়ার কারণে। যদি সর্ব প্রাপ্তি স্বরূপ হবে, মাস্টার সর্বশক্তিমান হলে, তবে চিন্তা কোন্ বিষয়ে থাকবে ?

৬ ) নিশ্চয়বুদ্ধি অর্থাৎ সদা বাবার প্রতি বলিহারী হওয়া। বলিহার অর্থাৎ সর্বংশ সমর্পিত । তা সে দেহ ভাবে নিয়ে আসা বিকারের বংশ, কিম্বা দেহের সম্বন্ধের বংশ, অথবা দেহের বিনাশী পদার্থ গুলির প্রতি ইচ্ছা গুলির বংশ। সকল বংশের মধ্যেই এগুলি এসে যায়। সর্বংশ সমর্পিত বা সর্বংশ ত্যাগী একই কথা । সমর্পিত হওয়া একে বলা হয় না যে, মধুবনে বসে গেলাম বা সেন্টারে বসে গেলাম। এটাও একটা সিঁড়ি যে সেবা অর্থে নিজেকে অর্পণ করা হল, কিন্তু ‘সর্বংশ অর্পিত’ – এটা হল সিঁড়ির শেষ ধাপ। একটা সিঁড়ি চড়ে গেলে। কিন্তু লক্ষ্যে পৌঁছানো নিশ্চয় বুদ্ধির লক্ষণ হল – তিনটিই বংশ সহ অর্পিত হয়ে যাওয়া। সেই তিনিটি বিষয়কে স্পষ্ট ভাবে বুঝে গেছো তো ? বংশ তখনই বিনাশ হয় যখন স্বপ্ন বা সংকল্পেও অংশমাত্রও থাকবে না । অংশও যদি থাকে, তবে বংশ বৃদ্ধি হয়ে যাবে। সেইজন্য সর্বংশ ত্যাগীর পরিভাষা হল অতি গূঢ়। এটাও অন্য কখনো বলবো।

৭ ) নিশ্চয়বুদ্ধি সদা চিন্তামুক্ত (বেফিকর), নিশ্চিন্ত থাকবে। প্রতিটি বিষয়ে বিজয় প্রাপ্ত হওয়ার নেশাতে নিশ্চিন্ত অনুভব করবে। অতএব নিশ্চয়, নিশ্চিন্ত এবং নিশ্চিত – এটা সব সময় অনুভব করবে।

৮ ) সে সদা নিজেও নেশাতে থাকবে আর তার নেশাকে দেখে অন্যদেরও এই আত্মিক (রুহানী) নেশা অনুভব হবে । অন্যদেরকেও আত্মিক নেশাতে বাবার সহায়তায় নিজের স্থিতির দ্বারা অনুভব করাবে।

নিশ্চয়বুদ্ধির বা আত্মিক নেশাতে যারা থাকবে, তাদের জীবনের বিশেষত্ব কী হবে ? প্রথমতঃ, যতখানি শ্রেষ্ঠ নেশা ততই নিমিত্ত ভাব প্রত্যেকের জীবনের চরিত্রতে থাকবে। নিমিত্ত ভাব এর বিশেষত্বের কারণে নির্মাণ বুদ্ধি। বুদ্ধির উপরে ধ্যান রাখা – যত নির্মাণ বুদ্ধি হবে, ততই নির্মান, নব নির্মাণ বলে থাকো না তোমরা ! তো নব নির্মাণকারী বুদ্ধি হবে। অতএব নির্মানও হবে, নির্মাণও হবে। যেখানে এই বিশেষত্বগুলি থাকবে তাকেই বলা হবে – “নিশ্চয়বুদ্ধি বিজয়ী”। নিমিত্ত, নির্মান আর নির্মাণ। নিশ্চয় বুদ্ধির ভাষা কেমন হবে ? নিশ্চয় বুদ্ধির ভাষাতে সদা মাধুর্য থাকা তো কমন ব্যাপার, থাকবে উদারতা। উদারতার অর্থ হল সকল আত্মাদের প্রতি তাদেরকে আগে এগোনোর উদারতা থাকবে। “আগে আপনি”, হবে, ‘আমি আমি’ নয়। উদারতা অর্থাৎ অন্যদেরকে আগে রাখা। যেমন ব্রহ্মা বাবা সর্বদা প্রথমে জগদম্বা বা বাচ্চাদেরকে রেখেছিলেন – আমার থেকেও ক্ষুরধার জগদম্বা, আমার থেকেও ক্ষুরধার এই বাচ্চা। এ হল উদারতার ভাষা। আর যেখানে উদারতা রয়েছে, নিজেকে আগে রাখতে অনিচ্ছুক, সেখানে ড্রামা অনুসারে স্বতঃতই মনোবাঞ্ছিত ফল প্রাপ্ত হয়েই যায়। যত বেশী নিজের বিষয়ে ইচ্ছা মাত্রম্ অবিদ্যার স্থিতি থাকবে, ততই বাবা আর পরিবার ভালো আর যোগ্য মনে করে তাকেই প্রথমে রেখে থাকে। অতএব ‘আগে আপনি’, মন থেকে যারা বলে, তারা পিছনে থাকতে পারে না। তারা মন থেকে ‘আগে আপনি’ বলে, তো সকলের কাছ থেকে তখন ‘আগে আপনি’ – এটাই হয়ে যায়। কিন্তু ইচ্ছা থাকলে তখন হবে না। তো নিশ্চয় বুদ্ধির ভাষা সর্বদা উদারতা সম্পন্ন ভাষা হবে, সন্তুষ্টতার হবে, সকলের কল্যাণের ভাষা হবে। এই রকম ভাষা যারা বলবে, তাদের বলা হবে – ‘নিশ্চয়বুদ্ধি বিজয়ী’ । তোমরা সবাই নিশ্চয় বুদ্ধি, তাই তো ? কেননা নিশ্চয়ই হল ফাউন্ডেশন ।

কিন্তু যখন পরিস্থিতির, মায়ার, সংস্কার গুলির, নানান ধরনের স্বভাবের তুফান আসতে থাকে, তখন বোধগম্য হয় যে, নিশ্চয় এর ফাউন্ডেশন কতখানি মজবুত। যেমন এই পুরোনো জগতে নানান ধরনের ঝঞ্ঝাবাত আসে না ! কখনো বাযুর, কখনো সমুদ্রের… এই রকমই এখানেও নানান ধরনের ঝড় ঝঞ্ঝা আসে। ঝড় কী করে ? প্রথমে উড়িয়ে নিয়ে যায়, তারপর ছুঁড়ে ফেলে। তো এই ঝড়ও প্রথমে তো নিজের দিকে আনন্দের সাথে ওড়াতে থাকে। সাময়িক কালের নেশায় উপরে নিয়ে যায়। কেননা মায়াও জেনে গেছে যে, কিছু না পেলে এ আমার দিকে আসবে না। তাই প্রথমে আর্টিফিসিয়াল প্রাপ্তির দ্বারা ওড়াতে থাকে। তারপর নীচে পতনের কলার দিকে নিয়ে যায়। খুবই চতুর সে। তো নিশ্চয়বুদ্ধির নজর ত্রিনেত্রী হওয়ায়, তৃতীয় নেত্রের দ্বারা তিন কালকেই সে দেখে নেয়। সেইজন্য কখনোই ধোঁকা খেতে পারে না । তো নিশ্চয়ের পরখ ঝড়ঝঞ্ঝার সময়ই হয়ে থাকে। যেমন ঝড় বড় বড় গাছকে সমূলে উৎপাটিত করে ফেলে। তো এই মায়ার ঝঞ্ঝাও নিশ্চয়ের মূলকে (ফাউন্ডেশন) উপড়ে ফেলার চেষ্টায় থাকে। কিন্তু রেজাল্টে উৎপাটিত হয় কম, নড়েচড়ে যায় বেশী। নড়েচড়ে গেলেও ফাউন্ডেশন কাচা হয়ে যায়। তো এইরকম সময়ে নিজের নিশ্চয়ের ফাউন্ডেশনকে চেক করো। এমনিতে কাউকে জিজ্ঞাসা করো – নিশ্চয় দৃঢ় তো ? উত্তর কী দেবে ? খুব ভালো ভাষণ শোনাবে। নিশ্চয়ে থাকা তো ভালো। কিন্তু সময় অনুযায়ী নিশ্চয় যদি নড়েচড়ে, তবে তো নিশ্চয় কম্পমান হওয়া অর্থাৎ জন্ম জন্মের প্রালব্ধও কম্পমান হওয়া। সেইজন্য যখন ঝড়ঝঞা আসে তখন চেক করো – কেউ আমাকে সীমিত (হদের) মান – সম্মান দিল না বা ব্যর্থ সংকল্প গুলির রূপে মায়ার তুফান আসে, যে যে চাওয়া বা ইচ্ছা পোষণ করে রেখেছ সেগুলি পূরণ না হলে, এ’মতো সময় যে নিশ্চয় রয়েছে যে – “আমি সমর্থ বাবার সমর্থ সন্তান’ – এটা স্মরণে থাকে নাকি ব্যর্থ, সমর্থের উপরে বিজয়ী হয়ে যায় ? যদি ব্যর্থ বিজয়ী হয়ে যায়, তবে নিশ্চয়ের ফাউন্ডেশন নড়বড়ে হয়ে যাবে, তাই না ! সমর্থের পরিবর্তে নিজেকে দুর্বল আত্মা অনুভব করবে। হতোদ্যম হয়ে যাবে। সেইজন্য বলা হয় যে, তুফানের সময়ে চেক করো। সীমিত মান – সম্মান, ‘আমিত্ব বোধ’ – রুহানী শৌর্যের থেকে নীচে নিয়ে আসে। সীমিত কোনো প্রকারের ইচ্ছা – ‘ইচ্ছা মাত্রম্ অবিদ্যা’র নিশ্চয়ের থেকে নীচে নিয়ে আসে। তো নিশ্চয়ের অর্থ এটা নয় যে, আমি শরীর নই আমি আত্মা, কিন্তু কেমন আত্মা। সেই নেশা, সেই স্বমান সময় মতো অনুভব হওয়া, একেই বলা হয় – ‘নিশ্চয় বুদ্ধি বিজয়ী’ । কোনো পেপারই নেই আর বলে দিল – আমি তো পাস উইথ অনার হয়ে গেছি, কেউ কি সেটাকে মানবে ? সার্টিফিকেট চাই, তাই না ! যতই কেউ পাশ হয়ে যাক, ডিগ্রি নিয়ে নিক, যতক্ষণ পর্যন্ত না সার্টিফিকেট পাচ্ছে কোনো ভ্যাল্যু থাকে না। পেপার এলে পরীক্ষা দিয়ে সার্টিফিকেট নিলে – বাবার থেকে, পরিবারের থেকে, তখন বলা হবে – ‘নিশ্চয়বুদ্ধি বিজয়ী’ । বুঝতে পেরেছ ? তাই ফাউন্ডেশনকেও চেক করতে থাকো। নিশ্চয়বুদ্ধির বিশেষত্ব শুনলে তো ! যেমন সময় তেমনই নেশা জীবনে যেন দেখতে পাওয়া যায়। নিজের মনই কেবল খুশী হলে হবে না, লোকেও যেন খুশী হয়। সবাই যাতে অনুভব করে যে, হ্যাঁ ইনি (অলৌকিক) নেশায় থাকা আত্মা। কেবল নিজের মনের পছন্দের নয়, লোকেরও পছন্দের, বাবারও পছন্দের। একেই বলা হবে – বিজয়ী । আচ্ছা ।

সকল নিশ্চয়বুদ্ধি বিজয়ী রত্নদেরকে, সর্ব নিশ্চিন্ত, চিন্তামুক্ত (বেফিকর) বাচ্চাদেরকে, সর্ব নিশ্চিত বিজয়ের নেশাতে থাকা রুহানী আত্মাদেরকে, সদা অচল, অটল, একরস স্থিতিতে স্থিত থাকা নিশ্চয়বুদ্ধি বাচ্চাদেরকে স্মরণের স্নেহ-সুমন আর নমস্কার ।

বিদেশী ভাই বোনেদের সাথে বাপদাদার সাক্ষাৎ

নিজেকে সমীপ রত্ন অনুভব করো ? সমীপ রত্নের লক্ষণ কী হবে ? তারা সদা, সহজ আর স্বতঃ জ্ঞানী আত্মা, যোগী আত্মা, গুণমূর্তি সেবাধারী অনুভব করবে। সমীপ রত্নের প্রতিটি কদমে এই চারটি বিশেষত্বই সহজ অনুভূত হবে, একটিও কম হবে না । জ্ঞানে কম, যোগে তীব্র কিম্বা দিব্য গুণ গুলির ধারণাতে দুর্বল, তা হবে না, সবেতেই সে সদাই সহজ অনুভব করবে। সমীপ রত্ন কোনো বিষয়েই পরিশ্রম অনুভব করবে না বরং সহজ সফলতা অনুভব করবে। কেননা বাপদাদা বাচ্চাদেরকে সঙ্গমযুগে পরিশ্রম থেকেই মুক্ত করেন। ৬৩ জন্ম পরিশ্রম করেছ না! শরীরের জন্য পরিশ্রম করেছ কিম্বা মনের জন্য পরিশ্রম করেছ। বাবাকে পাওয়ার জন্য নানান রকমের উপায় গ্রহণ করার চেষ্টা করে গেছ। তো এই সব মনের পরিশ্রম করেছ। আর ধনকেও দেখো, যে সার্ভিস তোমরা করো, যাকে বাপদাদা চাকরি বলেন, তাতেও দেখো কতো পরিশ্রম করে থাকো! তাতেও তো পরিশ্রম করতে হয়, তাই না! আর এখন অর্ধ কল্পের জন্য এই চাকরি তোমাদের করতে হয় না, এর থেকেও মুক্ত হয়ে যাও তোমরা। না লৌকিক চাকরি করবে, না ভক্তি করবে – দুটো থেকেই মুক্তি পেয়ে যাবে। এখনও দেখো, সে যদি লৌকিক কাজই করো, ব্রাহ্মণ জীবনে আসার পরে লৌকিক কাজের মধ্যেও অনেক প্রভেদ মনে হয়, তাই না ! এখন এই লৌকিক কাজ করবার সময়ও ডবল লাইট থাকো, কেন ? কেননা লৌকিক কাজ করবার সময়ও এই আনন্দ থাকে যে, এই কাজটা অলৌকিক সেবার নিমিত্তে আমি করছি। তোমার মনে ইচ্ছা তাতে থাকে না তো ? যেখানে ইচ্ছা থাকে সেখানে পরিশ্রম অনুভূত হয়। এখন নিমিত্ত মাত্র করো, কেননা তোমাদের জানা আছে যে, তন, মন, ধন – তিনটিই নিয়োজিত করলে এক এর পদমগুণ অবিনাশী ব্যাঙ্কে জমা হয়ে যাচ্ছে। তারপর তো জমা হয়ে থাকা খেতে থাকো। পুরুষার্থের দ্বারা – যোগ লাগানোর, জ্ঞান শোনার আর শোনানোর, এই পরিশ্রমের থেকেও মুক্ত হয়ে যাও, তাই না! সেখানে তো লৌকিক রাজনৈতিক পড়াশোনা যা কিছুই হবে, সেও খেলাধুলার মাধ্যমেই হবে, বই এর পড়া মুখস্থ করতে হবে না । সব রকম পরিশ্রমের থেকে মুক্ত হয়ে যাবে। কারো কারো আবার পড়াশোনারও বোঝা থাকে। সঙ্গমযুগে তোমরা পরিশ্রম থেকে মুক্ত হওয়ার সংস্কার নিজেদের মধ্যে ভরো। যতই মায়ার ঝড় আসুক না কেন, মায়ার ওপরে বিজয়ী হওয়াও তোমরা একটা খেলা মনে করো, পরিশ্রম নয়। খেলায় কী হয় ? জয় লাভ করতে হয়। তো মায়ার ওপরেও বিজয়ী হওয়ার খেলা খেলো তোমরা। খেলা মনে হয় নাকি অনেক বড় ব্যাপার মনে হয় ? যখন মাস্টার সর্বশক্তিমানের স্টেজে স্থিত হও তোমরা, তখন খেলা মনে হবে। তখন আরোই চ্যালেঞ্জ করো তোমরা যে, অর্ধ কল্পের জন্য বিদায় নিয়ে যাও। তো বিদায় সমারোহ পালন করতে আসে, লড়াই করবার জন্য আসে না। বিজয়ী রত্ন – সকল সময়, সকল কার্যে বিজয়ী। বিজয়ী তো তোমরা, তাই তো ? (হ্যাঁ বাবা) তো সেখানে গিয়েও ‘হ্যাঁ, আজ্ঞে’ কোরো। তবুও ভালো বাহাদুর হয়ে গেছ তোমরা। আগে একটু তাড়াতাড়ি ঘাবড়ে যেতে, এখন বাহাদুর হয়ে গেছ। এখন অনুভাবী হয়ে গেছ তো অনুভবের অথরিটি সম্পন্ন হয়ে গেছ, পরখ (যাচাই) করবার শক্তিও চলে এসেছে। সেইজন্য ঘাবড়াও না তোমরা। অনেক বারের বিজয়ী ছিলে, রয়েছ আর থাকবেও – এই স্মৃতি সর্বদা রেখো। আচ্ছা !

বিদায়ের সময় দাদীদের সাথে

(দাদী জানকী মুম্বই থেকে ৩ – ৪ দিনের পরিক্রমা সেরে ফিরে এসেছেন) এখন থেকেই চক্রবর্তী হয়ে গেছো। খুব ভালো। এখানেও সেবা আছে, ওখানেও সেবা করেছো। এখানে থেকেও সেবা করছো আর যেখানেই যাচ্ছ সেখানেই সেবা হয়ে যায়। সেবার অনেক বড় কনট্রাক্ট তোমরা নিয়েছো। অনেক বড় কনট্রাক্টর যে তোমরা ! ছোট ছোট কনট্রাক্টর তো অনেক আছে, কিন্তু বড় কনট্রাক্টরকে বড় বড় কাজকর্ম করতে হয়। ( বাবা আজ মুরলী শুনে খুব আনন্দ পেলাম) আনন্দেরই তো। খুব ভালো। তোমরা ক্যাচ্ করে অন্যদেরকে ক্লিয়ার করতে পারো। সবাই তো একরকম ক্যাচ্ করতে পারে না। যেমন জগদম্বা মুরলী শুনে ক্লিয়ার করে, সহজ করে সবাইকে ধারণ করাতেন, তেমনি এখন তোমরা হলে নিমিত্ত। নতুনরা তো কেউ কেউ বুঝতেও পারে না। কিন্তু বাপদাদা সামনে যারা বসে রয়েছে তাদেরকে কেবল দেখেন না, সবাইকে সামনে রেখে দেখেন। তবুও সামনের সারিতে অনন্যরা থাকেন বলে তাদের উদ্দেশ্যেই বাপদাদা বলেন। তোমরা তো পড়েও ক্যাচ্ করতে পারো। আচ্ছা !

বরদানঃ-

সঙ্গমযুগে বাবার দ্বারা যে যে সম্পদ (খাজানা) প্রাপ্ত হয়েছে, যেই সব সম্পদকে ব্যর্থ হতে না দিয়ে বাঁচালে, কম খরচে বেশী লাভবান হয়ে যাবে। ব্যর্থ থেকে বাঁচানো অর্থাৎ সমর্থ হওয়া। যেখানে সমর্থ থাকবে সেখানে ব্যর্থ হয়ে যাবে, সেটা হতে পারে না। যদি ব্যর্থের লিকেজ থাকে, তবে যতই পুরুষার্থ করো, পরিশ্রম করো, কিন্তু শক্তিশালী হতে পারবে না। সেইজন্য লিকেজকে চেক করে সমাপ্ত করো, তাহলে ব্যর্থ থেকে সমর্থ হয়ে যাবে।

স্লোগানঃ-

Daily Murlis in Bengali: Brahma Kumaris Murli Today in Bengali

Email me Murli: Receive Daily Murli on your email. Subscribe!

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top