03 October 2021 BENGALI Murli Today – Brahma Kumaris
Read and Listen today’s Gyan Murli in Bengali
2 October 2021
Morning Murli. Om Shanti. Madhuban.
Brahma Kumaris
আজকের শিব বাবার সাকার মুরলি, বাপদাদা, মাধুবন। Brahma Kumaris (BK) Murli for today in Bengali. This is the Official Murli blog to read and listen daily murlis.
"বাচা' আর' কর্মণা' - দুটি শক্তিকে জমা করবার ঈশ্বরীয় স্কীম"
আজ আধ্যাত্মিক বহ্নিশিখা আধ্যাত্মিক বহ্নি পতঙ্গদেরকে দেখছেন । চতুর্দিকের বহ্নি পতঙ্গরা বহ্নিশিখার উপরে নিজেকে বলি বা কুর্বান দিয়ে দিয়েছে। বলিদান দিতে বা কুর্বান হতে চায় এমন অনেক বহ্নি পতঙ্গ তো রয়েছে, কিন্তু কুর্বান হয়ে যাওয়ার পরে বহ্নিশিখার স্নেহতে ‘বহ্নিশিখার সমান’ হয়ে ওঠাতে, বলিদান দেওয়াতে নম্বর অনুক্রম রয়েছে। বাস্তবে কুর্বান হয়ই অন্তরের স্নেহের কারণে। ‘অন্তর বা হৃদয়ের স্নেহ’ আর ‘স্নেহ’ – এর মধ্যে প্রভেদ রয়েছে। স্নেহ সকলের রয়েছে, স্নেহের কারণেই কুর্বান হয়েছে। ‘অন্তরের স্নেহী’ বাবার মনের কথাকে বা মনের আশাকে জানেও আর পূর্ণও করে। অন্তরের স্নেহী অন্তরের আশা পুরণকারী হয়ে থাকে । অন্তরের স্নেহী অর্থাৎ বাবার মন বলছে আর বাচ্চার অন্তরে সেটা সমায়িত হয়ে যাচ্ছে। আর যেটা হৃদয়ে সমায়িত হয়ে যাচ্ছে, সেটা কর্মে স্বভাবতঃই পরিণতি পাবে। স্নেহী আত্মাদের খানিকটা অন্তরে সমায়িত হবে, কিছুটা মগজে। যে হৃদয়ে সমায়িত করবে সে কর্মে নিয়ে আসবে, যে মগজে রাখবে, সে মনে মনে ভাবতে থাকবে – করব কি করব না, করতে তো হবে, সময় মতো হয়েই যাবে । এই রকম ভাবনা চলতে থাকার কারণে ভাবনা পর্যন্তই সীমিত রয়ে যায়, কর্মে আর পরিণতি পায় না।
আজ বাপদাদা দেখছিলেন যে, কুর্বান যেতে তো সকলেই চায়। যদি কুর্বান না যায়, তবে তাকে ব্রাহ্মণ বলা যাবে না। কিন্তু বাবার স্নেহের প্রতি, বাবা যা বলেছেন তা করবার জন্য কুর্বানী দিতে হয় অর্থাৎ আমিত্ব ভাব, সেই আমিত্ব ভাবে অহমিকা থাকতে পারে অথবা দুর্বলতা – দুয়েরই ত্যাগ করতে হয়। একেই বলা হয় কুর্বানী। কুর্বান হতে চায় অনেকেই, কিন্তু কুর্বানী হওয়ার জন্য সাহস রাখার ক্ষেত্রে নম্বর অনুক্রম রয়েছে।
আজ বাপদাদা কেবল এক মাসের রেজাল্ট দেখছিলেন। এই সীজনে বিশেষ ভাবে বাপদাদা ‘বাবার সমান’ হওয়ার ভিন্ন – ভিন্ন রূপের দ্বারা কতবার ইশারা দিয়েছেন আর বাপদাদার বিশেষ এটাই হল অন্তরের আশা। এত এত খাজানা পেয়েছো, বরদান পেয়েছো ! বরদানের জন্য ছুটে ছুটে এসেছে। বাবাও খুব খুশী হন যে, বাচ্চারা ভালবাসার টানে মিলিত হতে এসেছে। বরদান নিয়ে খুশী হয়ে যায় । কিন্তু বাবার হৃদয়ের আশা পূরণকারী কারা ? বাবা যা বলেছেন তাকে কর্মে কতদূর এনেছো ? মনসা – বাচা – কর্মণা – তিনটির রেজাল্ট কতদূর কী মনে হয় ? শক্তিশালী মনসা, সম্বন্ধ-সম্পর্কে কতখানি এসেছে ? কেবল নিজে নিজে বসে মনন করলাম – সেটা স্ব উন্নতির জন্য ভালো এবং সেটা করতেও হবে । কিন্তু শ্রেষ্ঠ আত্মাদের কোথায় কোথায় শ্রেষ্ঠ মনসা অর্থাৎ সংকল্প শক্তিশালী, শুভ ভাবনা শুভ কামনা সম্পন্ন । মনসা শক্তির দর্পণ কোনটি ? দর্পণ হল – বোল এবং কর্ম। অজ্ঞানী আত্মা হোক কিম্বা জ্ঞানী আত্মা – উভয়ের ক্ষেত্রেই সম্বন্ধ-সম্পর্কে বোল এবং কর্মই হল দর্পণ। বোল আর কর্ম যদি শুভ-ভাবনা, শুভ-কামনার না হয়, তাহলে মনসা শক্তির প্রত্যক্ষ স্বরূপ কীভাবে বুঝতে পারা যাবে ? যার মনসা শক্তিশালী বা শুভ, তার বাচা আর কর্মণা স্বভাবতই শক্তিশালী শুদ্ধ হবে, শুভ-ভাবনার হবে। মনসা শক্তিশালী অর্থাৎ স্মরণের শক্তিও শ্রেষ্ঠ হবে, শক্তিশালী হবে, সহজযোগী হবে। কেবল সহজ-যোগীই নয়, সহজ-কর্মযোগী হবে।
বাপদাদা দেখেছেন – স্মরণকে শক্তিশালী বানানোর ক্ষেত্রে মেজরিটি বাচ্চার মধ্যে অ্যাটেনশন, স্মরণকে সহজ আর নিরন্তর বানানোর জন্য উৎসাহ উদ্দীপনাপূর্ণ। তারা এগিয়েও যাচ্ছে এবং আরও এগিয়ে যেতে থাকবে। কেননা বাবার প্রতি প্রবল স্নেহও রয়েছে, সেইজন্য স্মরণের অ্যাটেনশনও ভালো আর স্মরণের আধারই হল – ‘স্নেহ’। বাবার সাথে রুহ-রুহান (আন্তরিক বার্তালাপ) করার ক্ষেত্রেও সবাই ভালো। কখনো কখনো একটু আধটু চোখও রাঙায়, তাও তখনই যখন নিজেদের মধ্যে সামান্য মতবিরোধ হয়। তারপর বাবাকে অভিযোগ জানাতে থাকে যে, বাবা তুমি কেন এটা ঠিক করে দিচ্ছ না ? যদিও তা হল স্নেহ সম্পন্ন ভালবাসার চোখ রাঙানি। কিন্তু যখন সংগঠনে আসে, কর্ম ব্যবহারে আসে, পরিবারে আসে, তখন সংগঠনের বোল অর্থাৎ বাচা শক্তি, তাতে ব্যর্থ বেশী দেখতে পাওয়া যাচ্ছে।
বাণীর শক্তি ব্যর্থ যাওয়ার কারণে বাবাকে প্রত্যক্ষ করানোর যে ধার বা শক্তির অনুভবের প্রয়োজন, সেটা কম হয়। কথা গুলো শুনতে হয়ত তাদের ভালো লাগছে, সেটা অন্য ব্যাপার। বাবার কথা গুলো রিপিট হলে শুনতে তো ভালো লাগবেই। কিন্তু বাচা শক্তি ব্যর্থ যাওয়ার কারণে শক্তি জমা হয় না। সেইজন্য বাবাকে প্রত্যক্ষ করবার আওয়াজ জোরালো হতে এখনও দেরী হচ্ছে । সাধারণ বোলই বেশী। ‘বোল হবে অলৌকিক, ফরিস্তার বোল হবে’। এখন এই বছর এর উপরে আন্ডারলাইন করবে। যেমন তোমরা ব্রহ্মা বাবাকে দেখেছো – ফরিস্তার বোল ছিল, কম কথা, মধুর বোল। যে বোলের দ্বারা ফল নির্গত হবে, সেটাই হল যথার্থ বোল, আর যে বোলের কোনো ফল নেই তা হল ব্যর্থ। তা সে কাজের ফলই হোক না কেন। কাজের বিষয়ে কথা বলতে হলেও সেটাও যেন অধিক লম্বা না হয়। এখন শক্তিকে জমা করতে হবে। যেমন স্মরণের দ্বারা মনের শক্তিকে (মন্সা) জমা করে থাকো, সাইলেন্সে যখন বসো তখন ‘সংকল্প শক্তি’কে জমা করতে থাকো, ঠিক তেমনই বাণীর শক্তিকেও জমা করো।
একটা মজার কথা বলি – বাপদাদার বতনে সকলেরই জমার ভান্ডারী রয়েছে । তোমাদের সেবাকেন্দ্র গুলিতে আছে না ? বাবার বতনে বাচ্চাদের ভান্ডার রয়েছে ।প্রত্যেককে সারাদিনে মনসা, বাচা, কর্মণা – তিনটি শক্তিরই সঞ্চয় করে জমা করতে হয়, সেটা হল ভান্ডারী। মন্সা শক্তি কতটা জমা করেছো, বাচা শক্তি, কর্মণা শক্তি কতখানি জমা করেছো – এর সমস্ত পোতামেল রয়েছে। তোমরাও তো জমা আর খরচের হিসাব (পোতামেল) এখানে পাঠিয়ে থাকো তাই না ! তো বাপদাদা এই জমার ভান্ডারী দেখছিলেন। নিস্কর্স কি বেরিয়ে এল ? জমার খাতা কতখানি বের হল ? প্রত্যেকের রেজাল্ট তো তার নিজের নিজের। ভান্ডারী তো ভরেই ছিল তবে তা খুচরোতে, খুচরো বেশী ছিল। ছোট বাচ্চারা পয়সার ভাঁড়ে খুচরো পয়সা জমা করে যখন, সেই ভাঁড় তখন কতো ভারী হয়ে যায় ! তো বাচার রেজাল্টে কোনটা বেশী ছিল ? যেমন স্মরণের উপরে বেশী অ্যাটেনশন, বাচার উপরে ততটা অ্যাটেনশন নেই। সুতরাং এই বছর বাচা আর কর্মণা – এই দুই শক্তিকে জমা করবার স্কীম বানাও। গভর্নমেন্টও যেমন নানান রকম পদ্ধতিতে সঞ্চয়ের স্কীম বানায়, তেমনই এতেও মূল হল মনসা, এটা তো সবাই জানো। কিন্তু মনসার সাথে সাথে বিশেষ করে বাচা আর কর্মণা – এটা সম্বন্ধ – সম্পর্কের ক্ষেত্রে স্পষ্ট দেখতে পাওয়া যায়। মনসা তাও তো গুপ্ত, কিন্তু এটা প্রত্যক্ষ দেখতে পাওয়া যাবেই। বোল এর ক্ষেত্রে জমা করবার উপায় হল – ‘কম বলো, মধুর বলো, স্বমানের সাথে বলো’। ব্রহ্মা বাবা যেমন ছোট বড় সকলকে স্বমানের বোলের দ্বারা আপন করে নিয়েছিলেন। সেই বিধির দ্বারা যত এগিয়ে যেতে থাকবে, ততো দ্রুত বিজয় মালা তৈরী হয়ে যাবে। তাহলে এই বছরে কী করতে হবে ? সেবার সাথে সাথে বিশেষ এই শক্তি গুলিকে জমা করে সেবা করতে হবে।
সেবার প্ল্যান্স তো সকলে খুব ভালো ভালোই বানিয়েছে আর এখনও পর্যন্ত যে প্ল্যান অনুসারে সেবা করছো, চতুর্দিকে – ভারতে কিম্বা বিদেশে, সবই ভালোই করছো এবং আরো ভালো করবেও। যেমন সেবার ক্ষেত্রে একে অপরের থেকেও ভালো করবার জন্য শুভ ভাবনার সাথে এগিয়ে যাচ্ছো, সেইভাবেই সেবাতে সংগঠিত রূপে সদা সন্তুষ্ট থাকার, সন্তুষ্ট করবার বিশেষ সংকল্প – এটাও যেন সর্বদা সাথে সাথে থাকে। কেননা একই সময়ে তিন প্রকারের সেবা একসাথে হয়ে থাকে। এক – নিজের সন্তুষ্টতা, এ হল স্ব এর সেবা। দ্বিতীয় – সংগঠনে সন্তুষ্টতা, এ হল পরিবারের সেবা। তৃতীয় – ভাষার দ্বারা বা যে কোনো বিধির দ্বারা বিশ্বের আত্মাদের সেবা। একই সময়ে তিনটি সেবা হয়ে থাকে। কোনো প্রোগ্রাম যখন বানাও তাতে এই তিনটি সেবার সমাবেশ থাকে। যেমন বিশ্ব সেবার রেজাল্ট বা বিধি অ্যাটেনশনে রেখে থাকো, সেই রকমই দুটি সেবাই – ‘স্ব’ আর ‘সংগঠনের’ – তিনটিই যেন নির্বিঘ্ন হয়, তখন বলা হবে – সেবার নম্বর ওয়ান সফলতা। তিনটিই সফলতা একসাথে হওয়াই হল নম্বর নেওয়া। এই বছরে এই তিনটি সেবাই যাতে একসাথে হয় – তার জয়ঢাক বাজুক। যদি একটি কোণে জয়ঢাক বাজে তবে কুম্ভকর্ণদের কানে পৌঁছাবে না। যখন চতুর্দিক থেকে এই জয়ঢাক বাজবে, তখন কুম্ভকর্ণরা জাগবে। এখন একজন জাগছে তো দ্বিতীয় জন ঘুমিয়ে পড়ছে, দ্বিতীয় জাগছে তো তৃতীয় জন ঘুমিয়ে পড়ছে। একটু জাগছে, তারপর ‘খুব ভালো জ্ঞান, খুব ভালো’ বলে আবার ঘুমিয়ে পড়ছে। কিন্তু একেবারে জেগে উঠে মুখে বা মন থেকে যখন বলে উঠবে – ‘অহো প্রভু !’ আর মুক্তির বর্সা নেবে, তখন সমাপ্তি হবে। জাগবে তবে তো মুক্তির বর্সা নেবে ! তাহলে বুঝতে পেরেছো তো কী করতে হবে ? পরস্পরের সহযোগী হও। অন্যরা বাঁচলে তোমারও বাঁচবে, অর্থাৎ তোমার খাতাতেও সঞ্চয় হবে।
সেবার প্ল্যানে যত বেশী অন্যদেরকে সম্পর্কে সমীপে আনবে, ততই সেবার প্রত্যক্ষ রেজাল্ট দেখতে পাওয়া যাবে। সন্দেশ দেওয়ার সেবা তো করে আসছোই, করতে থেকো, কিন্তু এই বছর বিশেষ ভাবে কেবল সন্দেশ দেওয়া নয়, সহযোগী বানাতে হবে অর্থাৎ সম্পর্কে সমীপে আনতে হবে। কেবল ফর্ম ভরাতে দিলাম- এটা তো চলতেই থাকবে, কিন্তু এই বছর আরো এগিয়ে যাও। ফর্ম ভরাও কিন্তু এই পর্যন্তই ছেড়ে দিও না। তাদেরকে সমীপে নিয়ে এসো। সম্পর্কে, সম্বন্ধে নিয়ে এসো। তাহলে পরবর্তীকালে সেবার রূপের পরিবর্তন হবে। তোমাদেরকে নিজের জন্য করতে হবে না, তোমাদের দিক থেকে যারা সম্বন্ধে আসবে তারাই বলবে। তোমাদেরকে কেবল আশীর্বাদ আর দৃষ্টি দিতে হবে। আজকাল যেমন শঙ্করাচার্যকে উঁচু আসনে (চেয়ারে) বসায়, তেমনি তোমাদেরকে পূজ্য আসনে বসাবে, রূপোর আসনে নয়। ধরনী প্রস্তুতকারী নিমিত্ত হবে আর তোমাদেরকে কেবল দৃষ্টির বীজ ছড়াতে হবে। দুটো আশীর্বাদ সূচক বোল বলতে হবে, তবে তো প্রত্যক্ষতা হবে। তোমাদের মধ্যে বাবাকে দেখবে আর বাবার দৃষ্টি, বাবার স্নেহের অনুভূতি হওয়ার সাথে সাথেই জয়ধ্বনি করা শুরু হয়ে যাবে।
এখন সেবার গোল্ডেন জুবিলী তো তোমরা করে ফেললে। এখন অন্যরা সেবা করবে আর তোমরা দেখে দেখে আরও আনন্দিত হতে থাকবে। যেমন পোপ কী করে ? এত বড় সভার মাঝে দৃষ্টি দিয়ে আশীর্বাদ সূচক বোল উচ্চারণ করেন। লম্বা চওড়া ভাষণ করবার জন্য অন্যরা নিমিত্ত থাকে। তোমরা বলবে আমাদেরকে বাবা বলেছে। অন্যজন তখন পরিবর্তে বলবে – ইনি যা কিছু বললেন, সে সবই হল বাবারই কথা, আর কারো কথা নয় । তখন ধীরে ধীরে এইভাবে হ্যান্ডস তৈরী হয়ে যাবে। যেমন সেবা কেন্দ্রের জন্য হ্যান্ডস তৈরী হয়েছে না ! তেমনই স্টেজে তোমাদের তরফ থেকে অন্যরা বলবে, নিজে অনুভব করে বলবার মতো তৈরী হতে থাকবে। কেবল মহিমাকারী নয়, জ্ঞানের গূহ্য পয়েন্টকে স্পষ্ট করে, পরমাত্ম জ্ঞানকে সিদ্ধকারী – এমন নিমিত্তরা তৈরী হয়ে বেরোবে। কিন্তু তার জন্য এমন এমন লোকেদেরকে স্নেহী, সহযোগী আর সম্পর্কে নিয়ে এসে সম্বন্ধে নিয়ে এসো। এই সম্পূর্ণ কার্যক্রমের লক্ষ্য এটাই যে, এমন সহযোগী বানাও যাতে তুমি নিজে ‘মাইট’ হয়ে যাও আর তারা ‘মাইক’ হবে। এই বছর সহযোগের সেবার লক্ষ্য ‘মাইক’ তৈরী করা, যাতে অনুভবের আধারে তোমাদের বা বাবার জ্ঞানকে প্রত্যক্ষ করাবে। যার প্রভাব স্বতঃই অন্যদের উপরে সহজে পড়বে, এমন মাইক তৈরী করো। বুঝেছ সেবার উদ্দেশ্য কী ? এত এত যে প্রোগ্রাম বানানো হয়েছে তার থেকে কী মাখন বের হবে ? খুব সেবা করো, কিন্তু এই বছর সন্দেশের সাথে সাথে এটা অ্যাড করো। খেয়াল রাখো – কারা কারা এই রকম যোগ্য পাত্র। আর তাকে সময়ে সময়ে নানান ভাবে সম্পর্কে নিয়ে এসো। এমন নয় যে, একটা প্রোগ্রাম করলাম, তারপরে আরেকটা, আবারও একটা আর প্রথম যারা এসেছিল তারা সেখানেই থেকে গেল, তৃতীয় এসে গেল ! এও জমার শক্তিকে প্রয়োগে নিয়ে আসতে হবে। প্রত্যেকটি প্রোগ্রাম থেকে জমা করে যেতে থাকো। লাস্টে যাতে এই রকম সম্বন্ধ – সম্পর্কে আসা আত্মাদের মালা তৈরী হয়ে যায় । বুঝতে পেরেছো ? কী বাকি রয়েছে ? মিলনের প্রোগ্রাম।
এই বছর বাপদাদা ৬ মাসের রেজাল্ট দেখতে চান। সেবার জন্য যে যে প্ল্যান বানিয়েছ, সে সবের সাথে পরস্পরের সহযোগী হয়ে খুব পরিক্রমা করো। ছোট – বড় সবাইকে উৎসাহ – উদ্দীপনায় নিয়ে এসে তিন প্রকারেরই সেবাতে তাদেরকে এগিয়ে নিয়ে যাও। সেইজন্য বাপদাদা এই বছর গোটা বছরে দিনরাত সেবার জন্য দিয়ে দিয়েছেন। এখন এটা হল তিন প্রকারের সেবার ফল খাওয়ার বছর। এখানে আসার নয়, ফল খাওয়ার। এই বছর এখানে আসার ব্যাপার নেই। বাবার সকাশ তো তোমাদের সাথেই রয়েছে। যা ড্রামাতে স্থির রয়েছে সেটাই বলে দিলাম। ড্রামাতে যেটা মঞ্জুর করা রয়েছে সেটা মঞ্জুর করতেই হয়। খুব সেবা করো। ৬ মাসেই রেজাল্ট বুঝতে পারবে। বাবার আশাকে পূর্ণ করবার প্ল্যান বানাও। যেখানেই দেখো, যাকেই দেখো – প্রত্যেকের সংকল্প, বোল আর কর্ম বাবার আশার দীপ জাগ্ৰতকারী হবে। আগে মধুবনে এই এক্জাম্পল দেখাও। সঞ্চয়ের স্কীম এর মডেল আগে মধুবনে বানাও। এটা আগে ব্যাঙ্কে জমা করো। মধুবনের যারা তারা তো বরদান পেয়েই গেছো। বাকি যারা রয়ে গেছে তাদেরটাও এই বছর অতি দ্রুত প্রাপ্ত করাবে। কেননা বাবার স্নেহ তো সকলের সাথেই রয়েছে। এমনিতে তো প্রতিটি বাচ্চার প্রতি প্রতিটি কদমে বরদান রয়েছে। যারা অন্তরের স্নেহী আত্মা, তাদের প্রতিটি কদম পরিচালিতই হয় বরদানের দ্বারা। বাবার বরদান কেবল মুখের কথা নয়, অন্তরেরও আর অন্তরের বরদান সর্বদাই অন্তরে আনন্দ, উৎসাহ-উদ্দীপনার অনুভব করায়। এ হল অন্তরের বরদানের লক্ষণ । অন্তরের বরদানকে যারাই নিজের অন্তরে ধারণ করেছে, তাদের লক্ষণ এটাই হবে যে, তারা সদা খুশীতে আর উৎসাহ-উদ্দীপনার সাথে এগিয়ে যেতে থাকবে। না কখনো কোনো বিষয়ে তারা আটকে যাবে, না থেমে যাবে। বরদানের দ্বারা তারা উড়তে থাকবে আর সব কিছু নীচে রয়ে যাবে। সাইডসীনসও যারা উড়ছে তাদেরকে থামিয়ে দিতে পারবে না।
আজ বাপদাদা সকল বাচ্চাদেরকে, যারাই অন্তর থেকে, অক্লান্ত ভাবে সেবা করেছে, সেই সব সেবাধারীদেরকে এই সীজনে সেবার অভিনন্দন জানাচ্ছেন। মধুবনে এসে মধুবনের শৃঙ্গার হয়ে ওঠা বাচ্চাদেরকেও বাপদাদা অভিনন্দন জানাচ্ছেন। আর নিমিত্ত হওয়া শ্রেষ্ঠ আত্মাদেরকেও সদা অক্লান্ত ভাবে বাবার সমান সেবার দ্বারা সকলকে রিফ্রেশ করবার জন্য অভিনন্দন জানাচ্ছেন এবং রথকেও অভিনন্দন। নির্বিঘ্ন হয়ে এগিয়ে যাচ্ছো আর এগিয়ে যেতেও থাকো। দেশ বিদেশের সকল বাচ্চাদেরকে এখানে আসার জন্যও অভিনন্দন আর রিফ্রেশ হওয়ারও অভিনন্দন। কিন্তু সদা রিফ্রেশ থেকো, কেবল ৬ মাসের জন্য নয়। রিফ্রেশ হওয়ার জন্য এখানে এসে আরো রিফ্রেশ হও, তাতে ক্ষতি নেই, কেননা বাবার সম্পদ তো সব বাচ্চাদের জন্য, সবার অধিকার । বাবা আর খাজানা সর্বদা সাথে রয়েছে আর সাথে থাকবেও। কেবল যেটা আন্ডারলাইন করিয়েছি, সেটাতে নিজেকে বিশেষ ভাবে এক্জাম্পল বানিয়ে এক্জামে এক্সট্রা মার্ক্স নিও। অন্যকে দেখো না, নিজেকে এক্জাম্পল বানাও। এতে যে বিশেষ ভাবে অর্জন করবে, সে-ই অর্জুন অর্থাৎ নম্বর ওয়ান। পরের বার বাবা যখন আসবেন, তখন যেন সদাই ফরিস্তাদের কর্ম, ফরিস্তার বোল, ফরিস্তার সংকল্প ধারণকারী সবাইকে দেখতে পাওয়া যায়। এইরূপ পরিবর্তন সংগঠনে যেন দেখতে পাওয়া যায়। প্রত্যেকে যেন অনুভব করে যে, এই ফরিস্তাদের কথাবার্তা, ফরিস্তাদের কাজকর্ম কতো অলৌকিক ! এই পরিবর্তন সমারোহ বাপদাদা দেখতে চান। যদি প্রত্যেকে সারাদিনের নিজের কথাবার্তা টেপ রেকর্ডারে রেকর্ড করো, তাহলে সেটা খুব ভালো ভাবে বুঝতে পারা যাবে। চেক করে দেখলে বুঝতে পারবে কতখানি ব্যর্থ যাচ্ছে ? মনের টেপ রেকর্ডারে চেক করো, স্থূল টেপে নয়। সাধারণ বোলো ব্যর্থের খাতায় জমা হয়। দুটো কথার জায়গায় যদি ২৪ টা কথা বলা হয়, তবে ২০টা কথা কোথায় গেল ? এনার্জি জমা করো, তবেই তোমার আশীর্বাদ সূচক দুটি শব্দ, এক ঘন্টার ভাষণের কাজ করবে। আচ্ছা !
চতুর্দিকের সকল কুর্বান যাওয়া রুহানী বহ্নি পতঙ্গদেরকে, বাবার সমান হওয়ার দৃঢ় সংকল্পের দ্বারা এগিয়ে যাওয়া সকল বিশেষ আত্মাদেরকে, সদা উড়তি কলার দ্বারা যে কোনো প্রকারের সাইডসীনকে পার করে যাওয়া ডবল লাইট বাচ্চাদেরকে রুহানী বহ্নিশিখা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর নমস্কার ।
বরদানঃ-
যেমন বাবার প্রতি ১০০ ভাগ নিশ্চয়বুদ্ধি যদি থাকে, তবে যে যতই অস্থির করে দেওয়ার চেষ্টা করুক না কেন, সে অস্থির হবেই না। সেই রকমই দৈবী পরিবার কিম্বা সংসারী আত্মাদের দ্বারা যদি এমন কোনো পেপার আসেও, ক্রোধী হয়ে সামনে আসে বা কেউ ইনসান্ট করে দিল, গালি দিল – তাতেও অস্থির হওয়া যাবে না। এতেও কেবল সকল আত্মাদের প্রতি কল্যাণের ভাবনা থাকবে। এই ভাবনা তাদের সংস্কারকে পরিবর্তন করে দেবে। এতে অধৈর্য হওয়া চলবে না। সময় মতো ফল অবশ্যই বেরিয়ে আসবে – এটা ড্রামাতেই স্থির রয়েছে।
স্লোগানঃ-
➤ Daily Murlis in Bengali: Brahma Kumaris Murli Today in Bengali
➤ Email me Murli: Receive Daily Murli on your email. Subscribe!